করিমগঞ্জে আজমল ব্রিগ্রেডের প্রার্থী রাধেশ্যাম, ক্ষুব্ধ হাইলাকান্দি জমিয়ত
করিমগঞ্জ সংরক্ষিত লোকসভা আসনে রাধেশ্যাম বিশ্বাসকে এআইইউডিএফ দলের টিকিট প্রদান করায় রীতিমতো রাগে ফুঁসছেন হাইলাকান্দি জেলা জমিয়তের একাংশ কর্মকর্তা সহ সাধারণ কর্মীরা। করিমগঞ্জে আজমল ব্রিগ্রেডের প্রার্থী হিসেবে রাধেশ্যাম বিশ্বাসের নাম প্রকাশ হতেই প্রতিবাদে সোচ্চার হয়ে উঠেছেন হাইলাকান্দি জেলা জমিয়ত উলামা হিন্দের জেলা সভাপতি মওলানা তাজ উদ্দিন লস্কর ও সাধারণ সম্পাদক মওলানা রহমত আলি চৌধুরী। তাদের সাফ কথা, জমিয়তের আপত্তি সত্বেও রাধেশ্যাম বিশ্বাসকে করিমগঞ্জে প্রার্থীত্ব প্রদান করা হয়েছে। অতএব তাঁকে জেতানোর কোন দায়িত্ব নেবে না হাইলাকান্দি জমিয়ত। তবে খুব শীঘ্রই জেলা জমিয়তের সাধারণ সভা আহবান করে কমিটির সদস্যদের মতামত নিয়ে বিবৃতি জারি করা হবে।
মওলানা তাজ উদ্দিন লস্কর ও মওলানা রহমত আলি চৌধুরী জানান, জমিয়ত উলামা হিন্দ সহ জেলার উলামা সমাজের সমর্থনে ২০১৪ সালে কংগ্রেস প্রার্থীকে হারিয়ে সাংসদ নির্বাচিত হন রাধেশ্যাম বিশ্বাস । কিন্ত নির্বাচিত হওয়ার পর সংখ্যালঘু অধ্যুষিত অঞ্চলে, জমিয়তের প্রস্তাবিত কোন কাজই তিনি করেন নি। এমনকি এ আই ইউ ডি এফ সুপ্রিমো বদরুদ্দিন আজমল হাইলাকান্দি জেলায়, জমিয়ত উলামা হিন্দের সুপারিশ করা বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কাজের বাস্তবায়ন করতে সাংসদ রাধেশ্যাম বিশ্বাসকে নির্দেশ দিলেও বাস্তবে বিগত পাঁচ বছরে তিনি কোন কাজই করেন নি। সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ভোটে জয়ী হয়ে উল্টো ওই সমাজের সাথে তিনি প্রতারণা করেছেন বলেও তাঁরা অভিযোগ করে বলেন, হাইলাকান্দি জেলার ধলছড়া, বালিছড়া, ধলাই মলাই, ইত্যাদি সংখ্যালঘু অধ্যুষিত অঞ্চলের উন্নয়নে বিভিন্ন প্রস্তাব জমিয়ত উলামা হিন্দ দিলেও কোন কাজই করেন নি তিনি।
জেলা জমিয়ত সভাপতি মওলানা তাজ উদ্দিন লস্কর বলেন, রাধেশ্যাম বিশ্বাসের বিগত পাঁচ বছরের কাজকর্মে জেলার তৃনমুল স্তরের অধিকাংশ নেতা কর্মী খুশী নন। যার ফলে এবার তার পক্ষে প্রচারাভিযান চালিয়েও ভাল ফল আশা করা বৃথা । মওলানা তাজ উদ্দিন লস্কর বলেন, খুব শীঘ্রই রাধেশ্যাম বিশ্বাসের বিগত দিনের কাজকর্মের মুখোশ খোলা হবে। কোথায়, কিভাবে কমিশন নিয়ে দালালদের কাছে সাংসদ তহবিলের স্কিম বিক্রি করেছেন তাও খোলসা করা হবে বলে হুংকার দেন জমিয়ত উলামা হিন্দের জেলা সভাপতি মওলানা তাজ উদ্দিন লস্কর ৷ তিনি বলেন, বর্তমানে করিমগঞ্জ লোকসভা আসনের সর্বত্রই সাংসদ রাধেশ্যাম বিশ্বাসের বিরুদ্ধে প্রতিষ্ঠান বিরোধী হাওয়া বইছে। এদিকে এ আই ইউ ডি এফ দলের কর্মীদের পক্ষ থেকেও রাধেশ্যামকে প্রার্থী করায় তীব্র ক্ষোভ দেখা দিয়েছে। তাদের অভিযোগ, রাধেশ্যাম বিশ্বাস বিগত পাঁচ বছর সাংসদ তহবিলের স্কিম বিক্রি, আর কমিশন সংগ্রহ নিয়েই ব্যাস্ত ছিলেন। লালা টাউন বড় জামে মসজিদ কমিটির পক্ষ থেকেও রাধেশ্যাম বিশ্বাসের কাজকর্ম নিয়ে তীব্র অসন্তোষ ব্যাক্ত করে বলা হয়েছে, মসজিদের উন্নয়নে স্কিম ধরাতে তাকে এডভ্যান্স টাকা দিতে হয়েছে। কিন্ত পরবর্তীতে স্কিম মঞ্জুর হলেও বাস্তবে পুরো অর্থ পায় নি মসজিদ কমিটি। যারফলে অর্ধসমাপ্ত অবস্থায় পড়ে রয়েছে কাজ।৷ একজন সাংসদের এধরনের কাজকর্মে রীতিমতো ক্ষুব্ধ লালা টাউন বড় জামে মসজিদ কমিটি। অনুরূপ ভাবে হাইলাকান্দির গাছতলায় জেলা জমিয়তের কার্যালয় নির্মানে বরাদ্দ অর্থ নিয়েও লুকোচুরি খেলে শেষমেশ পুরো টাকা দেন নি বলে অভিযোগ তুলেছেন সভাপতি মওলানা তাজ উদ্দিন লস্কর ।
Comments are closed.