
আবার আশার সঞ্চার, শতাব্দী প্রাচীন মিটার গেজের মাহুর-হারাঙ্গাজাও হেরিটেজ হচ্ছে
মাহুর-হারাঙ্গাজাও এর মধ্যবর্তী ৪৯ কিলোমিটার অংশকে হেরিটেজ করা নিয়ে অনেকদিন ধরেই টানাপোড়েন চলছে ।
উল্লেখ্য, মিটারগেজ লাইনের এই অংশটুকুকে হেরিটেজ করার প্রতিশ্রুতি রেলের তরফে ব্রডগেজ রূপায়ণের অনেক আগেই দেওয়া হয়েছিল। তবে, আচমকা রেল বোর্ড উক্ত প্রকল্প বাতিল করে। এতে স্থানীয় দল এবং বিভিন্ন সংগঠনের তরফে দাবি জানানো হলেও আজ অবধি তা রূপায়নের কোন সদর্থক ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। ইতিমধ্যে রেলের তরফের শতাব্দী প্রাচীন সুদৃশ্য দিয়াং রেল সেতু ভেঙ্গে গুঁড়িয়ে নিলাম করে দেওয়ার পাশাপাশি লোয়ার হাফলং স্টেশনে থাকা দুটি লোকোমোটিভ ইঞ্জিন ও নিলাম করা হয়েছে । তাছাড়া মাহুর-হারাঙ্গাজাও অংশের প্রায় সবটুকু রেলপথ তুলে ফেলা হয়েছে। এমনকি রেলের উদাসীনতায় অনেক মূল্যবান সামগ্রী ও খোয়া গেছে।
তবে এই মুহূর্তে আশার কথা, উত্তর-পূর্ব সীমান্ত রেল সূত্রে সর্বশেষ পাওয়া খবরে জানা গেছে যে, শিলচর লামডিং মিটারগেজ রেলপথের মাহুর থেকে হারাঙ্গাজাও পর্যন্ত অংশকে হেরিটেজ হিসেবে রেখে দেওয়ার পরিকল্পনা রেলের পক্ষ থেকে পুনরায় গ্রহণ করা হয়েছে। এই প্রকল্প বাস্তবায়নের জন্য ২৩৯ কোটি টাকার ব্যয় করার পরিকল্পনা ও নিয়ে নিয়েছে রেল বিভাগ। দিয়াং নদীর উপর যে সেতু নিলাম করে দেওয়া হয়েছিল রেল বিভাগ তা আবার নতুন করে নির্মাণ করবে। যে সকল স্থানে রেল ট্র্যাক তুলে নেওয়া হয়েছিল তাও আবার নতুন করে পাতা হবে। এদিকে দিয়াং নদীর ওপর রেল সেতু নিলাম করে দেওয়া হলেও লোয়ার হাফলং থেকে হারাঙ্গাজাও পর্যন্ত অংশে ধনুক সেতুসহ অন্যান্য সেতুগুলো এখনো নিলাম করেনি উত্তর-পূর্ব সীমান্ত রেলওয়ে। তাই সদিচ্ছা থাকলে এই হেরিটেজ প্রকল্প রূপায়নে খুব একটা বড় বাধা নেই বলেই মনে করা যাচ্ছে।
শতবর্ষ প্রাচীন এই মিটার গেজ রেলপথকে হেরিটেজ হিসেবে সংরক্ষিত করতে রেল বোর্ডের সবুজ সংকেত মেলার পর ঐতিহ্যবাহী এই মিটারগেজকে নিয়ে আবার স্বপ্ন দেখতে শুরু করেছেন পাহাড়বাসী। এই প্রকল্প বাস্তবায়িত হলে অসমের এই একমাত্র হিল স্টেশনে পর্যটনের সম্ভাবনা বাড়বে। রাজ্য সরকার, উত্তর কাছাড় পার্বত্য পরিষদ এবং রাজ্যের পর্যটন বিভাগ এই পাহাড়ি জেলাকে এক অন্যতম পর্যটন কেন্দ্র হিসেবে গড়ে তুলতে সব ধরনের প্রচেষ্টা অব্যাহত রেখেছে।
এই আশাব্যঞ্জক খবর কে স্বাগত জানিয়েছেন হেরিটেজের দাবি জানিয়ে আসা বিভিন্ন দল সংগঠনগুলো। পশ্চিমবঙ্গের দার্জিলিংয়ের ন্যারোগেজ যদি হেরিটেজ হিসাবে থাকতে পারে তবে মাহুর-হারাঙ্গাজাও ও হেরিটেজ হিসেবে ডিমা হাসাও তথা অসমের পর্যটনের উত্তরণে এক বিরাট ভূমিকা পালন করতে পারবে। সম্প্রতি রাজ্যের পর্যটনের দায়িত্বপ্রাপ্ত মন্ত্রী চন্দন ব্রহ্ম সম্প্রতি ডিমা হাছাও সফরকালে এমনতর মতামত ব্যক্ত করেছেন। স্মৃতি বিজড়িত এই রেল প্রকল্প বাস্তবায়িত হলে বরাকের জনগণ ও যে খুশি হবেন যা বলার অপেক্ষা রাখে না।
Comments are closed.