লক্ষ্মী পূজোর সকালে অকালে চলে গেলেন রক্তিম দাস, সাংস্কৃতিক জগতে বিশাল শূন্যতা
সাংস্কৃতিক জগৎকে অনেক কিছু দেওয়ার কথা ছিল, কিন্তু আজ সকাল প্রায় ৬-৩০ মিনিটে চিরতরে সবাইকে ছেড়ে বিদায় নিলেন রক্তিম দাস। একাধারে নৃত্যশিল্পী, সংগীতশিল্পী, গীতিকার, ‘পরম সৃষ্টি’র কর্ণধার রক্তিম দাসের মৃত্যু ও সেই হূদরোগে। তার এই অকাল মৃত্যুতে সাংস্কৃতিক জগৎ তথা পরিচিত মহলে বিষাদের ছায়া নেমে এসেছে।
রক্তিম বেশ কিছুদিন ধরেই ডায়াবেটিক রোগে ভুগছিলেন। সঙ্গে কিডনি ও ফুসফুসেও সংক্রমণ ছিল। ইদানীংকালে ডায়াবেটিক রোগ অতিরিক্ত মাত্রায় বেড়ে যাওয়ায় এবং সেইসঙ্গে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে অকালে চলে যেতে হল শিলচরের স্বনামধন্য এই সংস্কৃতিকর্মীকে।
রক্তিম’র মৃতদেহ আজ বিকেলে বাড়ি থেকে শিলচর সংগীত বিদ্যালয় নিয়ে আসা হবে। এখানে উল্লেখ করা যেতে পারে, রক্তিম সংগীত বিদ্যালয় থেকে নিত্য শিক্ষা লাভ করেছেন এবং বর্তমানে তিনি সংগীত বিদ্যালয়ের একজন নৃত্য শিক্ষকও ছিলেন। শিলচর সংগীত বিদ্যালয় থেকে বিকেল চারটার সময় রক্তিমের শবযাত্রা শ্মশান অভিমুখে রওয়ানা হবে। শিলচরের সংস্কৃতিকর্মী, বন্ধুবান্ধব, আত্মীয় পরিজনরা রক্তিমকে শেষ বিদায় জানাতে পদযাত্রার মাধ্যমে শ্মশানে পৌঁছবেন। শিলচরের বিশিষ্ট নৃত্যশিল্পী সৌমিত্র শঙ্কর চৌধুরী জানালেন, নৃত্য শিল্পীর প্রতি বিশেষ শ্রদ্ধা জানাতে রক্তিমের শবদেহ একটি বাটিকের চাদর দিয়ে মুড়ে দেওয়া হবে।
আরো জানা গেল, শিলচর শ্মশান ঘাটে রক্তিমের নিথর দেহকে মধ্যে রেখে রক্তিম সহ শেষবারের মতো একটি সমবেত নৃত্য পরিবেশন করা হবে।এই সমবেত নৃত্যে শিলচরের সব নৃত্য শিল্পী তথা সংস্কৃতি কর্মীরা যোগ দেবেন। সংগীত শিল্পীরা সংগীতে কণ্ঠ মেলাবেন। সৌমিত্র দুঃখ করে বললেন, এরপর যেহেতু রক্তিমের দেহটাকেও আমরা আর পাব না তাই শেষ শ্রদ্ধা জানাতে শিলচরের সংস্কৃতিকর্মীদের এই আয়োজন।
স্বর্গীয় রবীন্দ্র কুমার দাস ও অপর্না দাস’র সন্তান রক্তিমের মৃত্যুকালে বয়স হয়েছিল ৪০ বছর। মৃত্যুকালে রক্তিম মা, স্ত্রী ও কন্যা সন্তান রেখে গেছেন। পেশায় তিনি একজন শিক্ষক ছিলেন।
তার এই অকাল মৃত্যু শিলচরের জনগণ মেনে নিতে পারছেন না। তার এভাবে অসময়ে চলে যাওয়ায় সংস্কৃতি জগতের অপূরণীয় ক্ষতি বলে সবাই মনে করছেন। লক্ষ্মী পূজোর সকালে রক্তিমের অকাল মৃত্যুতে শিলচরের সমস্ত সংস্কৃতিকর্মী তথা সাধারণ জনমনে এক শোকের ছায়া নেমে এসেছে।
Comments are closed.