মালুগ্রামের বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ প্রণব কুমার ভট্টাচার্য প্রয়াত
মালুগ্রাম কাছাড় স্কুল রোডের বরিষ্ঠ শিক্ষাবিদ প্রণব কুমার ভট্টাচার্য (পার্থ) সোমবার দুপুরে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেছেন। মৃত্যুকালে বয়স হয়েছিল ৭৯ বছর। স্ত্রী, পুত্র, কন্যা, নাতি-নাতনিসহ অসংখ্য গুণমুগ্ধকে রেখে গেছেন তিনি। পরিবার সূত্রের খবর অনুযায়ী হৃদরোগজনিত কারণে তার মৃত্যু হয়। কাছাড় হাই স্কুল ও জেআরএইচএস গনিরগ্রাম হাইস্কুলের প্রাক্তন শিক্ষক সহ শিক্ষা বিষয়ক সংগঠক ছিলেন তিনি। শিলচর কলেজ অফ এডুকেশনের অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা প্রণব কুমার ভট্টাচার্য সোমবার নিজের বাড়িতেই শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন।
কাছাড় হাইস্কুলের অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা প্রমোদ ভট্টাচার্যের একমাত্র ছেলে প্রণব কুমার ভট্টাচার্য প্রথম শিক্ষকতা শুরু করেন কাছাড় হাইস্কুলেই। পরবর্তীতে গনিরগ্রামের জেআরএইচএস হাইস্কুলে দীর্ঘদিন শিক্ষকতা করেছেন এবং সেখান থেকেই অবসর নেন। বয়সের সঙ্গে সঙ্গে ছোটখাটো অসুবিধা থাকলেও তিনি সুস্থভাবে চলাফেরা করতেন। সম্প্রতি তার মেয়ের বাড়িতে বড়দিন উপলক্ষে ঘুরে এসেছেন। কিছুটা শারীরিক অসুবিধার জন্য পরিবারের তরফে চিকিৎসক অজিত ভট্টাচার্যের কাছে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখান থেকে বাড়িতে ফেরার পর হঠাৎ করে শারীরিক অবস্থার অবনতি হয় এবং বাড়িতেই শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি। তার ছেলে প্রীতম ভট্টাচার্য মঙ্গলবার শিলচরে ফিরলে শেষকৃত্য সম্পন্ন হবে বলে জানা গেছে।
চাকরি থেকে অবসর নেওয়ার পর তিনি শিক্ষার বিভিন্ন ক্ষেত্রে অবদান রেখেছেন। সরকারি বালিকা বিদ্যালয়ে সেন্ট্রাল স্কুল অফ এডুকেশন নামের শিক্ষক প্রশিক্ষণ কেন্দ্র শুরু করেন। কিন্তু এটি পরবর্তীতে শিলচর মহিলা মহাবিদ্যালয়ে চলে যায় এবং সেখান থেকে সম্পূর্ণরূপে কলেজ হিসেবে সোনাই রোডে আত্মপ্রকাশ করে। দীর্ঘদিন ধরে এই প্রতিষ্ঠানকে গড়ে তুলতে পরিশ্রম করেছেন দক্ষ শিক্ষক প্রণব কুমার ভট্টাচার্য।
তার পুত্র প্রীতম ভট্টাচার্য সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ার এবং আন্তর্জাতিক স্তরের ভাষাবিদ। তিনি ১৯৯০ সালে কাছাড় হাইস্কুল থেকেই মাধ্যমিকে রাজ্যে প্রথম হয়েছিলেন। পরবর্তীতে উচ্চতর মাধ্যমিক পরীক্ষায় বিজ্ঞান শাখায় রাজ্যের দ্বিতীয় স্থান অধিকার করে সারা রাজ্যে বরাকের মুখ উজ্জ্বল করেছিলেন। অবশ্যই এর পেছনে বাবার শিক্ষকতার প্রভাব ছিল। কন্যা পাপড়ি ভট্টাচার্যও তুখোড় ছাত্রী এবং শিক্ষিকা হিসেবে পরিচিত। বড়খলায় একটি সরকারি বিদ্যালয়ে ইংরেজি শিক্ষিকার দায়িত্ব পালন করার পাশাপাশি বরাক উপত্যকার স্বনামধন্য লেখিকা হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেছেন।
তার মৃত্যুতে বিভিন্ন মহলে শোক ব্যক্ত করা হয়েছে। বিশেষ করে যেসব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সঙ্গে তিনি জড়িত ছিলেন, তাদের পক্ষ থেকে গভীর শোক ব্যক্ত করা হয়েছে।
Comments are closed.