লকডাউন ভাঙছেন কাছাড়ের মানুষ, ২০ এপ্রিলের পরও জেলাকে রিলাক্সেশন নয়, জানালেন হিমন্ত
লকডাউন লঙ্ঘনের ক্ষেত্রে রাজ্যের প্রথম সারিতে রয়েছে কাছাড় জেলা। এই জেলার মানুষ রাজ্যের অন্যান্য এলাকার তুলনায় অনেক বেশি ঘর থেকে বেরিয়েছেন এবং বিভিন্ন ক্ষেত্রে সরকারি পাস ইত্যাদির দুর্ব্যবহার করেছেন। ফলে ২০ তারিখের পর কাছাড় জেলাকে খুব একটা ছাড় দেওয়ার পক্ষে নয় রাজ্য সরকার, এমনটাই কড়া বার্তা দিলেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্ব শর্মা।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার নির্দেশ অনুযায়ী কেন্দ্র সরকার দেশের প্রত্যেকটি রাজ্যের জেলাগুলোকে রেড, হোয়াইট এবং গ্রীন জোনে ভাগ করেছে। যেসব জেলায় একবার সংক্রমণ হয়েছে কিন্তু সেটি ছড়িয়ে পড়েনি সেগুলো হোয়াইট জোনে আছে। বরাক উপত্যকার তিন জেলা হোয়াইট জোনে পড়েছে, তার মানে এই জেলাগুলো করোনা আক্রমনের হটস্পট জোনে পড়ছে না।
তবে লকডাউনের নিয়ম ভাঙার ক্ষেত্রে রাজ্যের প্রথম সারিতে রয়েছে কাছাড় জেলা। পুলিশ সূত্র অনুযায়ী সরকারি পাস’য়ের অনেক বেশি দুর্ব্যবহার হয়েছে জেলায়। এমনও দেখা গেছে ডাক্তারের গাড়িতে ডাক্তার নেই, তার পরিবার আত্মীয়-স্বজনরা ঘুরে বেড়াচ্ছেন। অত্যধিক মাত্রায় পাস প্রদান করায় জেলা প্রশাসনের দিকেও আঙ্গুল তুলেছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী।
কেন্দ্র সরকারের নিয়ম অনুযায়ী কোন জেলায় এক ব্যক্তি আক্রান্ত হলে এরপর যদি আর আক্রান্তের ঘটনা না ঘটে তবে প্রথম ঘটনা থেকে ২৮ দিন পর জেলাটি গ্রীন জোনে ঢোকার যোগ্যতা অর্জন করে। কাছাড় জেলায় প্রথম আক্রান্তের সন্ধান পাওয়া গিয়েছিল ২ এপ্রিল, অর্থাৎ ৩০ এপ্রিল পর্যন্ত জেলাটি গ্রীন জোনে আসতে পারবে না। কেন্দ্র সরকারের তরফে ২০ এপ্রিলের পর যেসব এলাকায় লকডাউন কিছুটা শিথিল করার কথা হয়েছে সেটা শুধুমাত্র গ্রীন জোনে থাকা জেলার জন্যই প্রযোজ্য। তাই এখনই কাছাড় জেলা লকডাউনের ক্ষেত্রে ছাড় পাচ্ছে না।
যেসব ব্যক্তি তবলীগ জামাতে অংশ নিয়েছেন তাদের সঙ্গে সময় কাটানো প্রত্যেক ব্যক্তিকে ২৮ দিনের হোম কোয়ারেন্টাইন পালন করতে হবে। এছাড়া করোনা আক্রান্ত ব্যক্তির পরিবারের সদস্য সহ যারাই ওই ব্যক্তির সংস্পর্শে এসেছেন তাদেরও ২৮ দিন হোম কোয়ারেন্টাইনে থাকা বাধ্যতামূলক বলে জানিয়েছে স্বাস্থ্য বিভাগ।
স্বাস্থ্যমন্ত্রীর সুর ধরেই রাজ্য বিধানসভার উপাধ্যক্ষ তথা সোনাইয়ের বিধায়ক আমিনুল হক লস্কর বলেন, জেলার একমাত্র আক্রান্ত ব্যক্তি মুক্তি পেয়েছেন ভেবে আমরা সব ভুলে রাস্তায় বেরিয়ে পড়বো, এটা ভাবলে চলবে না। আমাদের জেলায় একজন ব্যক্তি করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছিলেন, অত্যন্ত বিপদজনক একটি সংবাদ এবং অন্তত ২৮ দিন আমরা ঘর থেকে বেরোবো না। আমাদের সৌভাগ্য প্রধানমন্ত্রীর নরেন্দ্র মোদি লকডাউনের যে মেয়াদ দিয়েছেন সেটা কাছাড় জেলার প্রথম আক্রান্তের সন্ধান পাওয়ার ২৮ দিনের কাছাকাছি। তাই প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশ মত চললে আমরা এই অবস্থা থেকে সাবধানে বেরিয়ে আসতে পারি।
কাছাড় জেলায় প্রয়োজনের বেশি সরকারি পাস দেওয়ার কথায় কিছুটা ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন জেলাশাসক বর্ণালী শর্মা। যদিও তিনি সরাসরি এ ব্যাপারে কিছু বলেননি। তবে তার সূত্রে জানা গেছে, রবিবার তিনি এ ব্যাপারে তার বয়ান তুলে ধরবেন।
পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে এবার কাছাড় জেলায় আরো কড়া মনোভাব নিয়ে কাজ করবে প্রশাসন।
Comments are closed.