Also read in

কাগজকল চালুর দাবিতে পাঁচগ্রামে জাতীয় সড়ক অবরোধ,  উত্তেজনা, গ্রেফতার

 

কাছাড় ও নগাঁও কাগজ কল পুনরুজ্জীবিত করার দাবিতে বুধবার ২৬ সেপ্টেম্বর পাঁচগ্রামেও  ৩৭ নম্বর জাতীয় সড়ক অবরোধ করল এইচ পি সি পেপার মিল রিভাইভ্যাল অ্যাকশন কমিটি সহ বিভিন্ন দল সংগঠন। কাগজ কল ইস্যুতে বিজেপি সরকারের বিরুদ্ধে তোপ দেগে  এদিন রাজ্য ও কেন্দ্র সরকারের কাছে স্পষ্ট নীতি ঘোষণার দাবি জানানো হয়।  কাছাড় ও নগাঁও কাগজ কল পুনরুজ্জীবিত করার দাবিতে এদিন বিভিন্ন দল সংগঠনের প্রতিনিধিরা হাতে হাতে প্ল্যাকার্ড, ফেস্টুন নিয়ে রাজপথে হাজির হন।

পেপার মিল রিভ্যাইভ্যাল অ্যাকশন কমিটির এই আন্দোলনকে  বিভিন্ন দল সংগঠন সমর্থন জানিয়ে এগিয়ে আসায় এদিন পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে উঠে।  বুধবার সকাল ন’টা থেকে হাজার হাজার প্রতিবাদী মানুষ বরাকের তিন জেলার সংযোগস্থল ধলেশ্বর তেমাথায় জাতীয় সড়ক  অবরোধ করে প্রতিবাদে সামিল হন।

প্রতিবাদকারীরা কেন্দ্র এবং রাজ্য সরকারের তীব্র সমালোচনা করে স্লোগান দেন। এদিনের প্রতিবাদী আন্দোলনে বিপন্ন কাগজকল কর্মীর পরিবারের সদস্য, বিভিন্ন সংস্থা ও সংগঠনের সদস্য, স্কুল কলেজের ছাত্র এবং সাধারণ মানুষ অংশ নিয়েছিলেন। সকাল থেকে হাজার হাজার নারীপুরুষ জাতীয় সড়ক অবরোধ করে বসে থাকায় হাইলাকান্দি, করিমগঞ্জ এবং শিলচরে আসাযাওয়ার শতশত যানবাহন রাস্তায়  দাঁড়িয়ে পড়ে। এতে পথাচলা মানুষকে গভীর সমস্যায় পড়তে হয়। এদিনের প্রতিবাদী আন্দোলনে অংশ নেওয়া মানুষ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী হায় হায় , মুখ্যমন্ত্রী সর্বানন্দ সানোয়াল হায় হায়, শিল্পমন্ত্রী চন্দ্রমোহন পাটোয়ারি মিথ্যাবাদী ইত্যাদি স্লোগানে প্রতিবাদস্থল  মুখরিত করে তোলেন।

এদিনের এই আন্দোলনে পাঁচগ্রামের কেন্দ্রীয় বিদ্যালয়ের ছাত্ররা অংশ নিয়ে তাদের  দুর্দশার কথা তুলে ধরেন। প্রতিবাদে অংশগ্রহণ করা কৃষক মুক্তি সংগ্রাম সমিতির কেন্দ্রীয় সম্পাদক জহির উদ্দিন লস্কর সরকারের তীব্র সমালোচনা করে বলেন, প্রধানমন্ত্রী বরাকে নির্বাচনী প্রচারে এসে অসমে বিজেপি ক্ষমতায় এলে কাগজকল চালু করা হবে বলে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। কিন্তু অসমে বিজেপি সরকার ক্ষমতায় আসার দুবছর পেরিয়ে গেলেও কাগজকল খোলাতো দূরের কথা এই মিলকে মৃত্যুর দিকে ঠেলে দিয়েছে সরকার। জহির উদ্দিন হুমকি  দিয়ে বলেন, যদি বরাকের একমাত্র বৃহৎ শিল্প প্রতিষ্ঠান পাঁচগ্রামের কাছাড় কাগজকল অতিসত্বর চালু করতে সরকার পদক্ষেপ না নেয় তাহলে কে এম এস এস বৃহত্তর গণ আন্দোলন গড়ে তোলে জনজীবন অচল করে দেবে । আন্দোলনকারী আরেক নেতা মানবেন্দ্র চক্রবর্তী কাগজকল নিয়ে সরকারের ভূমিকার তীব্র সমালোচনা করেন। তিনি কোনো রাখঢাক না করেই বলেন, সরকার কাগজকল কর্মী এবং বরাকের জনগণের সঙ্গে প্রতারনা করেছে। প্রধানমন্ত্রী কথা দিয়ে কথা রাখেননি বলে চক্রবর্তী অভিযোগ করেন।

এদিনের এই প্রতিবাদী আন্দোলনে কাগজকলের শ্রমিক কর্মচারীদের বিভিন্ন সংগঠন, এ আই ইউ ডি এফ, অগপ যুব পরিষদ, কেন্দ্রীয় বিদ্যালয়ের ছাত্র এবং বিভিন্ন কলেজের ছাত্র সহ সাধারণ নাগরিকরা অংশ নিয়ে কাগজকল খোলার দাবি জানান।

সকাল থেকে এভাবে আন্দোলন চলার ফলে জনজীবন অচল হয়ে পড়ায় এক সময় পুলিশ শক্তহাতে এই আন্দোলনকে বানচাল করতে মাঠে নামে বলে জানা যায়। হাইলাকান্দি পুলিশের ডি এস পি নয়নমনি বর্মনের উপস্থিতিতে পুলিশ এবং সি আর পি এফ প্রতিবাদকারীদের জোর করে রাস্তা থেকে হটিয়ে দিয়ে জাতীয়সড়ক অবরোধমুক্ত করে।  পুলিশ বেশ ক’জন  আন্দোলনকারীকে গ্রেফতার করে, যদিও বিকেলে ছেড়ে দেয়।।

Comments are closed.