
হাইলাকান্দিতে বিত্ত মন্ত্রী হিমন্ত বিশ্বশর্মার রোড শো,'করিমগঞ্জ বিজেপির চাই'
শুক্রবার সন্ধ্যায় হাইলাকান্দি জেলা সদরে সহস্রাধিক বিজেপি নেতা কর্মী সমর্থকদের নিয়ে রোড শো করলেন রাজ্যের বিত্ত মন্ত্রী ড.হিমন্ত বিশ্ব শর্মা। এদিন হাইলাকান্দি শহরে পদযাত্রার পাশাপাশি লালার বিষ্ণুপুর বাইপাস ও হাইলাকান্দি শহরের খেলার মাঠে পৃথক পৃথক নির্বাচনী সভায় অংশ নিয়ে উন্নয়নের স্বার্থে করিমগঞ্জ আসনে বিজেপি প্রার্থী কৃপানাথ মালাহকে বিপুল ভোটে জয়যুক্ত করার পাশাপাশি নরেন্দ্র মোদিকে আবারও দেশের প্রধানমন্ত্রী করার আহ্বান জানান।।
এদিন সন্ধ্যায় হাইলাকান্দি জেলা সদরে সহস্রাধিক বিজেপি নেতা কর্মী সমর্থকদের নিয়ে পদযাত্রায় নেমে সংবর্ধনায় ভাসেন হিমন্ত বিশ্ব শর্মা। শহরের বিভিন্ন স্থানে পুরুষ মহিলারা রাজপথে নেমে তাঁকে গামছা, উত্তরীয়, ফুলের তোড়া দিয়ে সম্মাননা জানান। হিমন্তের রোড শো, পদযাত্রাকে ঘিরে এদিন জেলা সদরে এক উৎসব মুখর পরিবেশের সৃষ্টি হয়। এরপর এক বিশাল নির্বাচনী সভায় অংশ নেন তিনি।৷
এর আগে লালার বিষ্ণুপুর বাইপাস এলাকায় এক নির্বাচনী সভায়ও অংশ নেন তিনি। এদিন বক্তব্য রাখতে গিয়ে মন্ত্রী হিমন্ত বিশ্ব শর্মা বলেন, করিমগঞ্জের প্রতিটি জনসভায় যে ভাবে জনসমর্থন তিনি দেখেছেন, এতে বিজেপি প্রার্থী কৃপানাথ মালাহ’র জয় নিশ্চিত। তিনি বলেন, নরেন্দ্র মোদিকে ফের প্রধানমন্ত্রী করতে করিমগঞ্জ আসন চাই। স্বাস্থ্য মন্ত্রী হাইলাকান্দির অনুন্নয়নের জন্য এ আই ইউ ডি এফ দলের তিন বিধায়ককে দায়ী করে তাদের সমালোচনায় মুখর হন। বলেন, এআইইউডিএফ বিধায়করা শুধু হিন্দু মুসলমানের মধ্যে বিভেদ তৈরি করা নিয়েই ব্যস্ত। উন্নয়নের জন্য কিছু করতে পারেন না।কাটলিছড়া তথা হাইলাকান্দি উন্নয়নের ট্র্যাক থেকে আলাদা হয়ে রয়েছে।যার জন্য এই জেলা উন্নয়নে পিছিয়ে গেছে।
দিল্লি আর আসামে চলছে বিজেপি সরকার, আর কেবল হাইলাকান্দিতে এআইইউডিএফের সরকার।তাহলে উন্নয়ন কী ভাবে হবে।তিনি উদাহরণ দিয়ে বলেন যে দিল্লিতে বসে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি রাজধানী ট্রেন চালাচ্ছেন। আর রাজ্যে সর্বানন্দ সোনোয়াল সেই রাজধানী ট্রেনের পিছনে যোগ হয়ে এক ট্র্যাকে এসে যাওয়ায় রাজ্যে উন্নয়নের গতি ফুল স্পিডে চলছে।যদি কাটলিছড়ার তথা হাইলাকান্দির উন্নয়ন ওই স্পিডে নিয়ে যেতে হয় তবে করিমগঞ্জ থেকে কৃপানাথ মালাহকে জয়ী করে ওই একি ট্র্যাকে জোড়া লাগিয়ে দিতে হবে।কিন্ত যদি এআইইউডিএফ প্রার্থী রাধেশ্যাম বিশ্বাসকে জয়ী করানো হয় তবে উন্নয়নের ট্র্যাক থেকে তিনি আউট হয়ে যাবেন।
বিগত পাঁচ বছর যেমন তিনি কিছু করতে পারেন নি। হিমন্ত বিশ্ব শর্মা এদিন প্রত্যয়ের শুরে বলেন যে পুনরায় প্রধানমন্ত্রী হতে চলেছেন নরেন্দ্র মোদি।যখন মোদি পুনরায় প্রধান মন্ত্রী হচ্ছেন তখন করিমগঞ্জ থকে এআইইউডিএফকে ভোট দেওয়ার কোন প্রশ্নই উঠে না।তিনি আরও বলেন, অনেকই বলেন যে বিজেপিকে প্রতিহিত করতে নাকি এআইইউডিএফ কে ভোট দেওয়া দরকার।এই প্রসঙ্গে তিনি পাল্টা প্রশ্ন তোলেন, বিজেপিকে কেন প্রতিহিত করতে যাবেন মুসলমানেরা।বিজেপি কি কেবল হিন্দুদের জন্য কাজ করছে? মুসলমানদের জন্য করছে না?তিনি আরও বলেন, মোদি সরকারের আমলে হিন্দু মুসুলমান সবার জন্য সমান তালে কাজ হয়েছে।জাতপাতের উর্ধ্বে উঠে ‘সবকা সাথ সবকা বিকাস’ এই লক্ষ নিয়ে বিজেপি সবার উন্নয়নে কাজ করে গেছে।
হাইলকান্দির বিজেপি জেলা সভাপতি সুব্রত নাথের পৌরোহিত্যে আয়োজিত সভায় বিজেপি সরকারের বিভিন্ন জনমুখী প্রকল্পের কথা তুলে ধরেন বিত্ত মন্ত্রী।তিনি বলেন, রাজ্যে বিজেপি সরকার আসার পর শিক্ষা থেকে শুরু করে স্বাস্থ্য সব বিভাগে বিভিন্ন জনমুখী প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়েছে।আগামী কয়েক মাসের মধ্যে রাজ্যে চালু হতে যাওয়া একটি প্রকল্প নিয়ে বিত্ত মন্ত্রী জানান যে এখন থেকে স্বামী মারা যাওয়ার এক মাসের মধ্যে মহিলাদের এককালীন ২৫ হাজার টাকা দেবে রাজ্য সরকার।এখন থেকে প্রত্যেক মেয়ের বিয়েতে এক ভরি সোনা দেবে রাজ্য সরকার।এই খাতে বছরে ৬০০ কোটি টাকা ব্যয় হবে।মহিলাদের পরিচালিত এসএইচজি কে এখন থেকে এক লক্ষ টাকা পর্যন্ত দেওয়া হবে।লোক সভা ভোটের পর থেকেই ডিলার থেকে ১৫ টাকা কিলোতে চিনি ও ২৫ টাকা লিটার দরে কেরোসিন পাবেন রাজ্যের জনগণ।
তার পর কোন বাছাই পদ্ধতি ছাড়াই এবার থেকে ষাটোর্ধ্ব যে কোন ব্যক্তিকে বৃদ্ধ ভাতা দেওয়া হবে। এধরনের অনেক প্রকল্পের কথা শুনিয়ে কৃপানাথ মালাহ’র হয়ে ভোট চান তিনি। যদি করিমগঞ্জ থেকে বিজেপি প্রার্থী জয়ী হন তবে আগামী এক দুই মাসের মধ্যে কৃপানাথ মালাহকে নিয়ে কাটলিছড়ায় এসে সব ভাঙ্গাচোরা রাস্তা এক বছরের মধ্যে বানিয়ে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেন হিমন্ত শর্মা।
এদিনের সভায় অন্যান্যদের মধ্য উপস্থিত ছিলেন পাথরকান্দির বিধায়ক কৃষ্ণেন্দু পাল,বিজেপি প্রার্থী কৃপানাথ মালাহ,জেলা সভাপতি সুব্রত নাথ,যুবমোর্চার সর্বভারতীয় সম্পাদক সৈকত দত্ত চৌধুরী প্রমুখ।
Comments are closed.