Also read in

'সেরা মহিলা এন্টারপ্রেনার পুরস্কার' উৎসর্গ করতে চাই আমার স্বামী এবং শাশুড়ি মাকে: সারা শবনম

 

মহিলা ব্যবসায়ীর সংখ্যা আগের চেয়ে অনেক বৃদ্ধি পেলেও সংখ্যাটা এখনো পুরুষদের সঙ্গে পাল্লা দেওয়ার জন্য অত্যধিক নয়। আর যখন কথাটা বরাক উপত্যকা নিয়ে হয় তখন সংখ্যাটা আরও কমে যায়। এই অবস্থায় সারা শবনম নামটি বরাক উপত্যকার মহিলাদের গর্বিত করে তোলার ক্ষেত্রে বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য। বরাক উপত্যকার মেয়ে সারা শবনম এবার ‘সেরা মহিলা এন্টারপ্রেনার পুরস্কার’ লাভ করেছেন। ‘ওমেন এন্টারপ্রেনারশিপ সামিটে’ ভারতের ১০ জনের মধ্যে একজন সফল মহিলা ব্যবসায়ী হিসাবে গৌহাটিতে পুরস্কৃত হলেন বরাকের সারা শবনম।

গত রবিবার গুয়াহাটির রেডিসন ব্লু’তে অনুষ্ঠিত এক অনুষ্ঠানে তার হাতে এই পুরস্কার তুলে দেওয়া হয়। তিনি ইতিমধ্যে “জারা কালেকশন” এবং “জারা হিযাব হাট” নামে অনলাইনে দুটো উদ্যোগ শুরু করেছেন, যা মহিলা এন্টারপ্রেনারশিপ সামিটে তার হাতে পুরস্কার তুলে দিতে সাহায্য করেছে।এখানে উল্লেখ করা যেতে পারে, বরাক উপত্যকা থেকে এই প্রথম কেউ এ ধরনের একটি পুরস্কার পেলেন।

তার এই পুরস্কার প্রাপ্তিতে বরাক উপত্যকার জনগণ বিশেষভাবে মহিলারা গর্বিত বোধ করছেন। তাকে দেখে আরো অনেক মহিলা অনুপ্রাণিত হবেন বলে আশা করা যায়।

আমাদের সঙ্গে কথা বলার সময় সারা শবনম তার এই সাফল্যের পেছনের কাহিনীও আমাদের সঙ্গে ভাগ করে নিলেন।

কাজের ক্ষেত্রে ব্যবসায়িক জগতটাকে বেছে নেওয়ার জন্য কিভাবে অনুপ্রাণিত হয়েছেন?

ছোটবেলা থেকেই কিছু একটা করার তাগিদ ছিল। কিন্তু তাড়াতাড়ি বিয়ে হয়ে যাওয়ার জন্য সেই তাগিদটাকে কাজে লাগাতে পারিনি।সংসার এবং বাচ্চা নিয়ে ব্যস্ত ছিলাম। কিন্তু তাগিদটা আমার পিছু ছাড়েনি। তাই একসময় যখন বুঝতে পারছিলাম কিছু একটা করা প্রয়োজন, তখনই মাথায় ‘অনলাইন রিসেলিং’র এই আইডিয়াটা এল। ভালো লেগে গেলো আইডিয়াটা। কারণ বুঝেছিলাম, সংসার বাচ্চা সামলেও আমি এই ব্যবসাকে সুন্দরভাবে চালাতে পারবো।

এ ব্যবসা চালাতে গিয়ে কি ধরনের অসুবিধার সম্মুখীন হতে হয়েছে?

এক্ষেত্রে আমি বলব, আমি যখন শুরু করি অনেকে আমার পেছনে অনেক কিছু বলতো। অনেক নেতিবাচক মন্তব্য কিংবা অনুৎসাহিত করার প্রচেষ্টা। হয়তোবা এখনো বলে। তবে আমি মনে করি, আমার এই পুরস্কার ওদের সব নেতিবাচক মন্তব্যের যোগ্য জবাব দিতে পেরেছে।

তবে এক্ষেত্রে অনুপ্রেরণাও নিশ্চয় মিলেছে। সবচাইতে বেশি সমর্থন কার কাছ থেকে পেয়েছেন?

এই প্রশ্নটার উত্তর দিতে আমার খুব ভালো লাগছে। কারন আমি আজ সবাইকে বলতে চাই, এই সাফল্যের পেছনে সবচেয়ে বড় অবদান কিংবা সমর্থন আমার শাশুড়ি মা এবং আমার স্বামীর। ওদের দুজনের সমর্থন ছাড়া এ অসম্ভব ছিল।তাই আমি আমার পুরস্কারটাও তাদের দুজনের উদ্দেশ্যে উৎসর্গ করতে চাই।

পুরস্কার গ্রহণের পরের অনুভূতি কিভাবে ব্যক্ত করবেন?

পুরস্কার পেলে অবশ্যই সবার ভালো লাগে।কিন্তু আমার এক্ষেত্রে বিশেষভাবে ভালো লাগছে, কারণ বরাকের একজন মহিলা এই পুরস্কার পেয়েছে।বলা যায়, আমাদের বরাকের প্রতিনিধিত্ব করতে পেরেছি আমি।

অন্যান্য মহিলাদের কোন বার্তা দিতে চাইবেন?

এটুকু বলব, প্রত্যেকের মধ্যেই কিছু না কিছু করার ক্ষমতা থাকে। সেটুকু বুঝে এগিয়ে যাওয়া উচিত।কাউকে এগিয়ে যেতে দেখে সমালোচকরা পেছন থেকে অনেক কিছু বলবে।সেগুলোতে কান্না দিতে। আমি তো মনে করি, কাজ দিয়েই এর উত্তর দেওয়া উচিত।আর সমাজের সমালোচকদের বলবো, কাউকে উৎসাহিত করতে না পারেন, ঠিক আছে। কিন্তু কাউকে নিচু দেখাবেন না।

আর গৃহিণীরাও ধরনের বিজনেসে এগিয়ে আসতে পারেন। ঘর সামলে অর্থনৈতিকভাবে স্বনির্ভর হয়ে ওঠার জন্য এটি খুব উপযুক্ত।

Comments are closed.