
তারাপুরে দিনের আলোয় ড্রাগস বিক্রি করতে গিয়ে আটক তিন যুবক, উদ্ধার নিষিদ্ধ হেরোইন সহ ক্যাশ টাকা
দিনের আলোয় প্রায় প্রকাশ্যে ড্রাগস বিক্রির অভিযোগে তারাপুরের তিন যুবককে আটক করেছে পুলিশ। গোপন সূত্রে খবর পেয়ে মঙ্গলবার দুপুরে পুলিশের একটি বিশেষ দল তারাপুর এলাকার কালীমোহন রোডে অভিযান চালায়। এতে নেতৃত্ব দেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার পার্থ প্রতিম শইকীয়া, তারাপুর থানার ইনচার্জ আনন্দ মেধি এবং সদর থানার ওসি দিতুমনি গোস্বামী। তারা তিন ব্যক্তিকে ড্রাগস ও নগদ টাকা সহ হাতেনাতে ধরেন এবং তাদের গ্রেফতার করে থানায় নিয়ে আসেন। নিষিদ্ধ হেরোইন সহ বেশ কয়েকটি মোবাইল এবং ক্যাশ টাকা উদ্ধার করা হয়েছে।
অতিরিক্ত পুলিশসুপার পার্থ প্রতিম শইকীয়া বলেন, “রাজ্য সরকারের নির্দেশে জেলার প্রত্যেক থানা ড্রাগসের বিরুদ্ধে বিশেষ অভিযানে নিয়োজিত রয়েছে। বিভিন্ন সূত্রে ড্রাগস পাচারকারী এবং সেগুলো যারা বিক্রি করে তাদের তথ্য সংগ্রহ করা হচ্ছে। খবর পাওয়ার পর আমাদের বিশেষ টাস্কফোর্স অত্যন্ত সাবধানে অভিযান চালাচ্ছে এবং এর সঙ্গে যুক্ত থাকা ব্যক্তিদের হাতেনাতে ধরা হচ্ছে। আমরা জনগণের কাছে আবেদন রাখছি, কোনও ব্যক্তির সন্দেহজনক কার্যকলাপ চোখে পড়লে আমাদের জানাবেন, আপনাদের তথ্য সম্পূর্ণ গোপন থাকবে।”
আটক ব্যক্তিরা স্থানীয়, তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করা চলছে, কিভাবে তাদের হাতে নিষিদ্ধ ড্রাগস এসে পৌঁছে যাচ্ছে সেটা যাচাই করে দেখছে পুলিশ। তবে যতগুলো মামলা সামনে এসেছে, প্রত্যেক ক্ষেত্রে স্থানীয় যুবকদের আটক করা হলেও মূল সূত্র এখনও পুলিশ জনসমক্ষে তুলে ধরেনি। যে ড্রাগস কাছাড় জেলার আনাচে-কানাচে ধরা পড়ছে, সেগুলো মূলত আন্তর্জাতিক সীমান্ত হয়ে বাইরের রাজ্য থেকে জেলায় ঢুকছে। এই কাজে কারা জড়িত রয়েছে এবং কাছাড় জেলায় কাদের সঙ্গে এদের যোগসূত্র রয়েছে এটা পুলিশ এখনো খুঁজে পাইনি।
এই বিষয়ে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার বলেন, “যাদের আটক করা হচ্ছে, বিভিন্নভাবে তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করে মূল সূত্র খোঁজার চেষ্টা চলছে। আমরাও চাই আসল সূত্রের কাছাকাছি পৌঁছে যেতে, যাতে জেলায় সব ধরনের পাচার বন্ধ করে দেওয়া যায়। তবে এখনও অনেক তথ্য রয়েছে সেটা জনসমক্ষে তুলে ধরার মত নয়, সময় এলে অবশ্যই সবাই জানবেন।”
সম্প্রতি তারাপুর এলাকায় আরও কয়েকটি অভিযানে ড্রাগস সহ পাচারকারীদের আটক করেছে পুলিশ। শুধুমাত্র তারাপুর নয়, জেলার প্রায় প্রত্যেক এলাকায় ড্রাগস পাচারকারীদের ধরা হচ্ছে এবং উদ্ধার হচ্ছে বড় পরিমাণে ড্রাগস সহ অন্যান্য নিষিদ্ধ জিনিসপত্র। পুলিশ বিভাগের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, ১ মে থেকে ৩১ মে পর্যন্ত ১৯ জন ব্যক্তিকে ড্রাগস পাচারের সঙ্গে যুক্ত থাকার দায়ে গ্রেফতার করা হয়েছে। দশটি মামলা গ্রহণ করেছে পুলিশ। ৪৩০.১২ গ্রাম সন্দেহজনক হেরোইন এবং ১০, ৩৪৭টি নিষিদ্ধ ট্যাবলেট উদ্ধার করা হয়েছে। অবশ্যই লাগাতার অভিযানের ফলে ড্রাগস পাচারকারীদের মধ্যে আতঙ্ক বাড়তে শুরু করেছে। এছাড়া যারা এগুলো সেবন করছে, তারাও সতর্ক হয়েছে। অনেকেই মনে করছেন, এভাবে লাগাতার অভিযান চলতে থাকলে অনেক যুবক ছেলে-মেয়েরা ড্রাগস পাচারকারীদের কবল থেকে দূরে থাকবেন। তবে ড্রাগস সেবনের ক্ষতিকারক দিকগুলো নিয়ে সমাজে আরও সচেতনতা জরুরি।
Comments are closed.