পার্লারে ফেসিয়াল করাতে গিয়ে মুখে ফোস্কা শিলচরের বিনীতা নাথের, "গ্রাহকই ব্লিচ লাগাতে বলেছিলেন," পাল্টা মালিকের
শিলচরের মেয়ে বিনীতা নাথ সম্প্রতি শহরের একটি পার্লারে ফেসিয়াল করাতে গেছিলেন, সেখানেই ঘটে বিপত্তি। ফেসিয়াল করানোর সময় হঠাৎ করে তার মুখে জ্বালা হয় এবং তিনি সঙ্গে সঙ্গে পার্লারের কর্মচারীদের ডেকে পাঠান। মুখে লাগানো ফেসিয়াল সরাতেই দেখা যায় গালের ত্বক জ্বলে গেছে। এতে আতঙ্কিত হয়ে পড়েন তিনি, অথচ পার্লারের মালিক পাল্টা তাকেই দোষারোপ করতে শুরু করে।
শিলচরের মেয়ে বিনীতা গুয়াহাটি আইআইটির ছাত্রী, বর্তমানে ইতালির রোমে পোস্ট ডক্টরেট স্টাডিজ করছেন। গুয়াহাটি যাওয়ার আগে তিনি শিলচর এনআইটি থেকে ইঞ্জিনিয়ারিং করেছেন, এর আগে শিলচর হলিক্রস স্কুলের ছাত্রী ছিলেন; পিএইচডি করার জন্য গুয়াহাটি আইআইটিতে চলে যান। সম্প্রতি নিজের শহরে ফিরেছেন এবং শহরের সারদা পার্লারে ফেসিয়াল করাতে গিয়েছিলেন।
তিনি বলেন, “গুয়াহাটিতে একটি বিয়ের যাওয়ার জন্য আমি তৈরী হচ্ছিলাম, তাই শিলচরের সারদা পার্লারে যাই। আমি সাধারণত পার্লারে যাই না, তবে এখানে বাড়িতে সব ধরনের ব্যবস্থা না থাকায় ভাবলাম পার্লারে যাই। সেখানে গিয়ে আমি তাদের বলেছিলাম চুল এবং মুখের কিছুটা কাজ করে দিতে। তার মধ্যে অন্যতম ছিল ফেসিয়াল হেয়ার দূর করার একটি কাজ। তাদের বলেছিলাম ফেসিয়াল-টোন করে দিতে, তারা বলল ডি-টেনড ফেসিয়াল নামের একটি প্রক্রিয়া রয়েছে, এর মধ্যেই নাকি ফেসিয়াল হেয়ার সরানোর প্রক্রিয়া থাকবে। বিশেষ ব্লিচের মাধ্যমে সেটা করানো সম্ভব। আমি তাদের কথায় বিশ্বাস করি এবং সম্মতি জানাই।
তবে বিউটিশিয়ান যখন আমার মুখে সেটা লাগালেন আমি গরম অনুভব করি। ধীরে ধীরে যন্ত্রনা বাড়তে শুরু করে এবং তাদের আমি জানাই আর সহ্য করা যাচ্ছে না। একসময় যন্ত্রণায় চিৎকার করতে থাকি এবং প্রাথমিকভাবে মুখে আইসবাগ লাগাতে শুরু করি। পরে যখন তারা মুখ থেকে ফেসিয়াল ছড়াতে শুরু করেন আমি দেখি গালের মধ্যে বিশ্রী দাগ পড়ে গেছে। ততক্ষণে অনেক দেরী হয়ে গেছে আমার মুখের অবস্থা এখন করুন।
বিনীতা নাথের ছবি দেখলেই বুঝা যাচ্ছে মুখের ত্বক অনেকটাই পুড়ে গেছে। সঙ্গে সঙ্গে ডাক্তারের কাছে খবর দেন এবং আলোচনা করেন তিনি। এব্যাপারে বলেন, “ডাক্তার আমাকে বলেছেন এগুলো জ্বলে যাওয়ার দাগ এবং তারা আমাকে ওষুধ দিয়েছেন। ভুল কেমিক্যাল গালে লেগে যাওয়ার জন্যই কাজটি হয়েছে এবং এই দাগ উঠতে অনেক দিন সময় লাগবে।”
এদিকে সারদা পার্লারের মালিক দীপ দেব রায় বলেন, “আমরা এই ঘটনায় একেবারেই স্তম্ভিত এবং গ্রাহকের কাছে ক্ষমাপ্রার্থী। আমার বাবা অসুস্থ এবং শয্যাশায়ী, আমার স্ত্রী তাকে শুশ্রূষা করতে বাড়িতে ছিলেন। সেই সময়ে কর্মচারীরা ভুলবশত এমন কাজটি করে ফেলেছে। আমি তার যন্ত্রণা বুঝতে পারছি এবং ক্ষমা চেয়ে নিচ্ছি। এখন ভাবছি যদি আমরা যদি সেই সময় উপস্থিত থাকতাম এমন একটা ঘটনা ঘটত না।”
তিনি আরও বলেন, “প্রাথমিক কথোপকথনে এটুকু জানতে পেরেছি, গ্রাহক নিজেই চাইছিলেন তার মুখে ব্লিচ লাগানো হোক। আমাদের কর্মচারীরা বলেছিলেন হয়তো ডি-টোনের সঙ্গে ব্লিচ সহ্য হবেনা এবং এর পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা দিতে পারে। কিন্তু ভদ্রমহিলা চেয়ে ছিলেন বলেই সেটা লাগানো হয়।”
বিনীতা যদিও এর পাল্টা উত্তরে বলেন, “আমার মাথা খারাপ নয় আমি না জেনে গালে ব্লিচ লাগাতে বলবো। তারা আমাকে বলেছিলেন ব্লিচ লাগাতে, তাই অনুমতি দিয়েছিলাম, তারা ভুল করে আমার এই অবস্থা করেছেন, এখন পাল্টা দোষারোপ করছেন। ঘটনার পর আমি পার্লারের মালকিনকে ফোন করেছিলাম, আমার অবস্থা ফটো তুলে তার হোয়াটসঅ্যাপে পাঠিয়েছিলাম, তিনি মেসেজ দেখেছেন হোয়াটসঅ্যাপে ব্লু-টিক এসেছে। ক্ষমা চাওয়া তো দূরের কথা, তিনি আমার কথার উত্তর পর্যন্ত দেননি।”
Comments are closed.