আসন্ন ক্রিকেট মরশুমের জন্য নতুন সাজে নতুন রূপে তৈরি সতীন্দ্রমোহন দেব ক্রিকেট স্টেডিয়াম। আউট ফিল্ডকে দেখে মনে হবে যেন কোন আন্তর্জাতিক ম্যাচের জন্য তৈরি করে রাখা হয়েছে। সাধারণত ফুটবল মরশুম শেষ হলেই সতীন্দ্র মোহনদেব পিচ ও আউট ফিল্ড তৈরির কাজে হাত দেওয়া হয়। প্রতি মরশুমেই ফুটবলের জন্য মাঠের বেশ ক্ষতি হয়। ফুটবলারদের বুটের স্পাইক পিচ আউট ফিল্ডের বেশ ক্ষতি করে। বর্ষার মরশুমে ফুটবল ম্যাচের ফলে মাঠ হয়ে ওঠে অসমান। তবে এবার করোনার জন্য ফুটবল মরশুম বাতিল হয়ে গিয়েছিল। এতে শাপে বর হয়েছে।
অন্য বছরের তুলনায় এবার ক্রিকেট মরশুমের জন্য মাঠ ও আউট ফিল্ড তৈরি করতে অনেক সময় মিলেছে। ফলে ডিএসএ মাঠকে খুব সুন্দর ভাবে গড়ে তোলা গেছে। এমনটাই জানালেন শিলচর ডি এস এ’র গ্রাউন্ড সচিব নিলয় পাল। তিনি বলেন, ‘মাঠ পুরোপুরি তৈরি। এবার প্রস্তুতির জন্য অন্য বছরের তুলনায় একটু বেশি সময় মিলেছে।’
অনেক বছর থেকেই শিলচর ডিএসএ’র পিচ কিউরেটর’র দায়িত্বে রয়েছেন রাম বেহরা। এবারও পিচ ও আউটফিল্ড তৈরির দায়িত্বে রয়েছেন তিনি। তবে এবার শুরুর দিকে তাকে পাওয়া যায়নি। আসলে ওডিষায় নিজের বাড়িতে ছুটি কাটাতে গিয়েছিলেন রাম। কিন্তু শিলচরে ফিরতে তার কিছুটা সময় লেগে যায়। এমন পরিস্থিতিতে ডিএসএস সচিব বিজেন্দ্র প্রসাদ সিং এর অনুরোধে পিচ ও আউটফিল্ড তৈরির কাজে এগিয়ে আসেন প্রাক্তন গ্রাউন্ড সচিব তথা এজিএস চন্দন শর্মা। এরপর কিউরেটর রাম এসে যাবার পর চন্দন’র সঙ্গে যোগ দেন। অবশ্য বর্তমান সচিব নিলয় পাল গোটা প্রক্রিয়ার তদারকিতে ছিলেন।
আসন্ন মরশুমের জন্য এবার মোট আটটি পিচ তৈরি করা হয়েছে। এরমধ্যে মাঠের একদিকে দুটি প্র্যাকটিস পিচ সম্পূর্ণ তৈরি। প্র্যাকটিস পিচের রোলিং ও মারকিংও সম্পূর্ণ। সবচেয়ে বড় কথা হচ্ছে দীর্ঘ ৯ মাস পর কাল সকাল থেকে প্র্যাকটিস পিচে অনুশীলন করবে ডিএসএ’র একাডেমির প্রশিক্ষার্থীরা।
ডি এস এ’র সূত্র মতে জানা গেছে, ইতিমধ্যে দুটো পিচ পুরোপুরি তৈরি। আর এই দুই পিচেই খেলা হবে দ্বিতীয় ডিভিশন ক্রিকেট। তবে তার আগে আগামী সোমবার এই দুই পিচে প্র্যাকটিস ম্যাচ খেলা হবে। নতুন উইকেট কেমন আচরণ করবে, তা খতিয়ে দেখার জন্যই প্র্যাকটিস ম্যাচ আয়োজন করা হবে।
এদিকে ডিএসএ’র ক্রিকেট সচিব নিরঞ্জন দাস বরাক বুলেটিনকে জানান, আগামী ২০ নভেম্বর থেকে শুরু হচ্ছে শিলচরের ক্রিকেট মরশুম। এবার দ্বিতীয় ডিভিশন ক্রিকেট দিয়েই ২২ গজে বল গড়াবে। শুক্রবার সন্ধ্যায় ক্রিকেট শাখার এক বৈঠকে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। আসলে প্রথমে মনে করা হচ্ছিল সুপার ডিভিশন ক্রিকেট দিয়েই মরশুম শুরু হবে। তবে সুপার লিগের কয়েকটি ক্লাব আন্তঃজেলা দলবদলের জন্য ডিএস এতে আবেদন করেছিল। এই তালিকায় রয়েছে ইন্ডিয়া ক্লাব, ইউনাইটেড ক্লাব এবং প্রথম ডিভিশনের দল তারাপুর এসি। কিন্তু অনেকটা দেরি করেই গত সপ্তাহে অসম ক্রিকেট সংস্থার পক্ষ থেকে এ নিয়ে রাজ্যের প্রতিটি জেলা ক্রিকেট সংস্থায় চিঠি দেওয়া হয়েছে। এতে বলা হয়েছে, আগামী ৩০ নভেম্বর পর্যন্ত ইচ্ছুক ক্লাব গুলি আন্তঃজেলা দলবদল করাতে পারবে। সেই অনুসারে ক্রিকেট সচিব নিরঞ্জনও শিলচরের ক্লাব গুলিকে সেটা জানিয়ে দেন। তবে এখন পর্যন্ত কোন ক্লাবই আন্তঃজেলা দলবদল করাইনি। ফলে এই প্রক্রিয়ায় কিছুটা বিলম্ব হবে, সেটা অনুমান করেই বি ডিভিশন দিয়ে মরশুম শুরু করার সিদ্ধান্ত নেয় ক্রিকেট শাখা। সংস্থার ক্রিকেট সচিব জানান আগামী মাসে শুরু হবে সুপার ডিভিশন। জানা গেছে এবারের বি ডিভিশনে মোট চব্বিশটি দল অংশ নিয়েছে।
Comments are closed.