
১৮ জুলাই থেকে আনলক হচ্ছে শিলচর জেলা ক্রীড়া সংস্থা, শুরু হচ্ছে ক্রিকেট অ্যাকাডেমির প্রশিক্ষণ
করোনার জেরে গত ২৬ এপ্রিল সতীন্দ্র মোহন দেব স্টেডিয়ামের গেটে তালা ঝুলিয়ে ছিল শিলচর জেলা ক্রীড়া সংস্থা। তারপর থেকেই স্তব্ধ খেলাধুলা। এমনকি গেট বন্ধ থাকায় স্টেডিয়াম চত্বরেও কারোর প্রবেশের অনুমতি ছিল না। তবে আগামী ১৮ জুলাই থেকে শুরু হচ্ছে সংস্থার আনলক প্রক্রিয়া। রবিবার এক ম্যারাথন বৈঠকের পর এমনটা সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন সংস্থার সচিব বিজেন্দ্র প্রসাদ সিং।
১৮ জুলাই থেকে সংস্থার ক্রিকেট অ্যাকাডেমির প্রশিক্ষণ শুরু হবে। সম্পূর্ণ কোভিড প্রটোকল মেনে শুরু হবে অ্যাকাডেমির প্রশিক্ষণ। তার জন্য কিছু বিধিনিষেধ তৈরি করা হয়েছে। প্রথমত,অ্যাকাডেমির প্রশিক্ষণে ১৪ বছরের কম কাউকে রাখা হবে না। দ্বিতীয়ত, প্রশিক্ষণ নিতে হলে আর টি পি সি আর অথবা রেট টেস্টের নেগেটিভ রিপোর্ট লাগবে। সঙ্গে আনতে হবে অভিবাবকদের অনুমতি পত্র ও। এমনকি যারা প্রশিক্ষণ দেবেন, সেইসব কোচদের জন্যও কোভিড টেস্ট বাধ্যতামূলক। অ্যাকাডেমি চালু করার ব্যাপারে আগামী দু’একদিনের মধ্যেই অসম ক্রিকেট সংস্থা তে একটি চিঠি পাঠাবে শিলচর ডি এস এ।
অ্যাকাডেমির সঙ্গে স্টেডিয়ামের গেট ও খুলে দেওয়া হবে। তবে শুধু চার ঘন্টার জন্য। সকাল ৬টা থেকে ১০টা পর্যন্ত খোলা থাকবে গেট। সেই সময় মর্নিং ওয়াক করা যাবে। তবে ঘড়ির কাটাতে দশটা বাজার সঙ্গে সঙ্গেই ফের বন্ধ করে দেওয়া হবে স্টেডিয়ামের গেট। তখন আর কেউ স্টেডিয়াম চত্বরে প্রবেশ করতে পারবেন না। তবে এজন্য কিছু গাইডলাইন তৈরি করে দিয়েছে সংস্থা। মর্নিং ওয়াকে যারাই আসবেন তারা নিজেদের সঙ্গে বাচ্চাদের নিয়ে আসতে পারবেন না। সেইসঙ্গে এক স্থানে জড়ো হয়ে আড্ডা দেওয়া যাবে না। মাস্ক ও সোশ্যাল ডিসটেন্সিং বাধ্যতামূলক।
বৈঠকে ইনডোর গেমস এবং ফুটবল নিয়েও দীর্ঘসময় আলোচনা হয়েছে। সচিব বিজেন্দ্র জানান, বৈঠকে বিশেষ আমন্ত্রিত হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সংস্থার অন্যতম সহ-সভাপতি ডঃ সিদ্ধার্থ ভট্টাচার্য। তার পরামর্শ মেনেই তৈরি করা হয়েছে গাইডলাইন।
ইনডোর শাখার সঙ্গে বৈঠকে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে ব্যাডমিন্টন অ্যাকাডেমি ও টেবিল টেনিস অ্যাকাডেমি শুরু করার ক্ষেত্রে আরো কিছুটা সময় অপেক্ষা করা হবে। আগামী ৩১ জুলাই পর্যন্ত অপেক্ষা করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সংস্থা। পরিস্থিতির উন্নতি হলে আগস্টের প্রথম সপ্তাহ থেকে শুরু হতে পারে টি টি ও ব্যাডমিন্টন অ্যাকাডেমি। এক্ষেত্রে সংস্থার যুক্তি হল, টিটি ও ব্যাডমিন্টন খেলা হয়ে থাকে ইনডোরে। দুটি ডিসিপ্লিনেই প্রশিক্ষার্থীদের বয়স ১৪-র কম। আর বিশেষজ্ঞরা বলছেন, করোনার তৃতীয় ঢেউ এলে বাচ্চারা বেশি সংক্রমিত হবেন। তাই সে আশঙ্কার কথা মাথায় রেখে কোনো ঝুঁকি নিতে রাজি নয় সংস্থা। চলতি মাসের শেষে ফের একবার করোনা পরিস্থিতি নিয়ে রিভিউ মিটিং এ বসবে সংস্থার ইনডোর ব্রাঞ্চ।
ডিএসএ সচিব জানান, ইনডোরে নতুন ফ্লোরিং ম্যাটের জন্য পরিকল্পনা করা হচ্ছে। ইতিমধ্যেই এ নিয়ে দু একজনের সঙ্গে আলাপ করা হয়েছে। সবকিছু ঠিক থাকলে শীঘ্রই ইনডোরে বসতে চলেছে নতুন ফ্লোরিং ম্যাট। এজন্য প্রায় ৯-১০ লক্ষ টাকা খরচ হতে পারে। যদিও এ নিয়ে এখনো চূড়ান্ত কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি।
সবশেষে ফুটবল শাখার বৈঠক সম্পর্কে সংস্থার সচিব জানান, যেহেতু অসম ফুটবল সংস্থা ফুটবল চালু করার জন্য কোনও নির্দিষ্ট গাইডলাইন দেয়নি, তাই এই মুহূর্তে কোনও টুর্নামেন্ট আয়োজন করবে না শিলচর ডি এস এ। আগামী দু-একদিনের মধ্যে সুপার ডিভিশন ও প্রথম বিভাগের মোট ১২টি ক্লাব কে এটা জানিয়ে দেওয়া হবে। সংস্থার সচিব আরো জানান, রাজ্য তথা জেলা দলের দুই প্রাক্তন ফুটবলার বাবু সিং ও হেলেন মারের শারীরিক অবস্থা মোটেও ভালো নয়। তাই তাদের আর্থিক সাহায্যের জন্য অসম ফুটবল সংস্থার কাছে একটা চিঠি দেবে শিলচর ডি এস এ।
Comments are closed.