
লকডাউন পরবর্তী সময়ে নতুন আশা নিয়ে যাত্রা শুরু করল শিলচর-ত্রিবান্দ্রম সুপারফাস্ট এক্সপ্রেস
করোনা ভাইরাস সংক্রমণকে সামনে রেখে অন্যান্য পরিষেবার সঙ্গে পুরোপুরি ভাবে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল যাত্রীবাহী রেল। আনলক পঞ্চম স্তরে এসে ধীরে ধীরে এটি আবার চালু হচ্ছে। শিলচর থেকে প্রথম যাত্রীবাহী রেল হিসেবে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় যাত্রা শুরু করল শিলচর-ত্রিবান্দম সুপারফাস্ট এক্সপ্রেস। লকডাউন পরবর্তী সময়ে বরাক উপত্যকা থেকে রাজ্যের বাইরে সরাসরি যাওয়া এটি প্রথম ট্রেন। অত্যন্ত সাবধানতার মধ্য দিয়ে ৪৮১ জন যাত্রী নিয়ে গুয়াহাটির উদ্দেশ্যে পাড়ি দিয়েছে ট্রেনটি। এটি পরীক্ষামূলক ভাবে সফল হলে আগামীতে শিলচর থেকে বাকি যাত্রীবাহী ট্রেনগুলো চলার সম্ভাবনা রয়েছে।
বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় শিলচর থেকে ছেড়ে গুয়াহাটি সহ বিভিন্ন স্টেশন স্পর্শ করে আগামী সোমবার ত্রিবান্দম গিয়ে পৌঁছবে ট্রেনটি। মঙ্গলবার বিকেল ৪ টা 0৫ মিনিটে ত্রিবান্দম থেকে শিলচরের উদ্দেশ্যে আবার যাত্রা করবে। ০২৫০৭/৮ শিলচর ত্রিবান্দম সুপারফাস্ট এক্সপ্রেসের প্রস্তাবিত টাইম সিডিউল অনুযায়ী ট্রেনটি গুয়াহাটি শিলচরের মধ্যে বদরপুর, নিউ হাফলং, মাইবং এবং লামডিং স্টেশনে থামবে। মোট ১৩ টি সাধারণ কোচ, ৩টি এসি থ্রি-টায়ার, একটি এসি টু-টায়ার, প্যানট্রি কোচ সহ অতিরিক্ত সুরক্ষা ব্যবস্থা থাকছে। ট্রেনটি চলার ক্ষেত্রে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্টেশনেও সুরক্ষা ব্যবস্থা খতিয়ে দেখা হবে। শিলচর থেকে গুয়াহাটি পৌঁছানোর পর একবার সুরক্ষা ব্যবস্থা দেখা হবে। পরবর্তীতে অন্যান্য বড় স্টেশনে একইভাবে কড়া নিরাপত্তা ব্যবস্থার মধ্য দিয়ে এগোবে ট্রেনটি।
রেল বিভাগের পক্ষ থেকে আধিকারিকরা এব্যাপারে বলেন, “নর্থ ইস্ট ফ্রন্টিয়র রেলওয়ের পক্ষ থেকে বৃহস্পতিবার জানানো হয়েছে, রেল মন্ত্রকের পক্ষ থেকে ট্রেনটি চালানোর ব্যাপারে গ্রিন সিগন্যাল দেওয়ার পর প্রয়োজনীয় পরীক্ষা নিরীক্ষা করা হয়। স্বাস্থ্য বিভাগের পক্ষ থেকে প্রত্যেক যাত্রীর স্ক্রীনিং করার পাশাপাশি মাস্ক-সেনিটাইজার ইত্যাদি ব্যবহার হচ্ছে কিনা এব্যাপারে স্টেশনে নজরদারি রাখা হয়। স্বাস্থ্য বিভাগের সহায়তা নিয়ে স্ক্রীনিংয়ের প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা হয়েছে।”
স্বাস্থ্য বিভাগের তরফে ১০ জনের একটি দল এদিন বিকেলেই শিলচর রেল স্টেশনে পৌঁছে যায়। বিভাগের পক্ষ থেকে অভিজিৎ ভট্টাচার্য্য জানিয়েছেন, “প্রত্যেক যাত্রীর প্রথমে শরীরের তাপমাত্রা দেখা হয়। স্বাভাবিক থেকে বেশি তাপমাত্রা থাকা ব্যক্তিদের রামনগরের আইএসবিটিতে পাঠানো হয়। সেখানে কোভিড পরীক্ষা করিয়ে নেগেটিভ হলে আবার রেলস্টেশনে যাওয়ার অনুমতি দেওয়া হয়েছে। ৪৮১ জন যাত্রীর পরীক্ষা হয়েছে, কেউ পজিটিভ হননি।”
২২ মার্চ থেকে সারাদেশে সাধারণ রেল পরিষেবা বন্ধ করা হয়েছিল। পরবর্তীতে বিশেষ ট্রেন চালু করে দেশের বিভিন্ন এলাকায় আটকে থাকা যাত্রীদের বাড়ি পৌঁছে দেওয়া হয়েছিল। আনলক প্রক্রিয়া শুরুর পর মালবাহী ট্রেন ধীরে ধীরে চালু হয়। এবার দেশের বিভিন্ন এলাকায় যাত্রীবাহী ট্রেনও চালু করছে রেল বিভাগ। অবশ্যই যাত্রার ক্ষেত্রে বিশেষ কিছু নিয়ম বেঁধে দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি রয়েছে প্রত্যেক যাত্রীর স্বাস্থ্য পরীক্ষা ইত্যাদি বিষয়ও। বিমান পরিষেবার ক্ষেত্রে যে ধরনের সাবধানতা বজায় রাখা হচ্ছে, রেলের ক্ষেত্রেও একই ধরনের চেষ্টা করছে রেল বিভাগ।
এই ট্রেনটি সফলভাবে চালাতে পারলে ভবিষ্যতে অন্যান্য যাত্রীবাহী ট্রেন ধীরে ধীরে শুরু করার পথ প্রশস্ত হবে। এদিক দিয়ে রেল বিভাগ পরীক্ষামূলক ভাবে ট্রেনটি চালু করছে বললেও ভুল হবে না।
Comments are closed.