Also read in

শিলচরের দুই যমজ ভাই কামনাশীষ এবং কপিনজল চৌধুরীর জাতীয় স্তরের কর্পোরেট কুইজে সাফল্য

শিলচর শহরের দুই যমজ ভাই কপিনজল চৌধুরী এবং কামনাশীষ চৌধুরী তাদের উঠতি বছরগুলি একই সঙ্গে কাটিয়েছেন। হাই স্কুল থেকে শুরু করে স্নাতক পর্যন্ত একসাথে তাদের বেড়ে উঠা। পরবর্তীতে জীবনযাপনের প্রয়োজনে ভিন্ন পথ নিতে হয়েছে। কিন্তু একটি বিষয় সবসময় তাদের একত্রিত করে রেখেছে, তা হলো কুইজের প্রতি তাদের সহজাত ভালোবাসা। উঠতি এই জুটি কুইজ প্রতিযোগিতায় যে কোনও ফর্ম বা স্তরে অংশ নেওয়ার সুযোগ কখনই হাতছাড়া করেননি।

এবার, দুজনেই জাতীয় স্তরের কর্পোরেট কুইজেও একসাথে যোগদান করেছেন। সম্প্রতি শেষ হওয়া টাটা ক্রুসিবল কর্পোরেট কুইজে ( Tata Crucible Corporate Quiz), কাপিনজল চৌধুরী অন্ধ্র/তেলেঙ্গানা ক্লাস্টারে ১ ম পুরস্কার পেয়েছেন, যেখানে তার ভাই কামনাশীষ চৌধুরী দিল্লি এনসিআর ক্লাস্টারে ২ য় পুরস্কার পেয়েছেন। টাটা ক্রুসিবল কর্পোরেট কুইজ হল একটি বার্ষিক কর্পোরেট কুইজ প্রতিযোগিতা যা সারা ভারত জুড়ে টাটা কনসালটেন্সি সার্ভিসেস দ্বারা ১২ টি ক্লাস্টারে আয়োজিত হয়, যেখান থেকে প্রতিটি ক্লাস্টারের বিজয়ীরা সেমিফাইলের জন্য যোগ্যতা অর্জন করেন। সেখান থেকে, মাত্র ৬ জনই ফাইনালের যোগ্যতা অর্জন করবে, জাতীয় পর্যায়ে বিজয়ীর স্থান পাওয়ার জন্য।

সুতরাং, অন্ধ্র/তেলেঙ্গানা ক্লাস্টারের বিজয়ী হয়ে কাপিনজল ইতিমধ্যেই টাটা ক্রুসিবল কর্পোরেট কুইজের সেমিফাইলের জন্য যোগ্যতা অর্জন করেছেন এবং গ্র্যান্ড ফাইনালে পা রাখার মাত্র এক ধাপ দূরে তিনি। এই সাফল্য সম্পর্কে বরাক বুলেটিনের সাথে কথা বলতে গিয়ে কপিনজল বলেন, ” আমি বিজয়ী হয়ে পরের রাউন্ডের জন্য যোগ্যতা অর্জন করতে পেরে উচ্ছ্বসিত। এর চেয়েও উত্তেজনাপূর্ণ বিষয় হল আমি বর্তমান জাতীয় চ্যাম্পিয়ন নবীন কুমারকে পরাজিত করতে পেরেছি কারন নবীন কুমার আমার গুরুও । কপিনজল বর্তমানে হায়দ্রাবাদের বাইরে এবং টাটা কনসালটেন্সি সার্ভিসে নিযুক্ত।

কপিনজল এবং কামনাশিস উভয়েই শিলচরে জন্মেছিলেন এবং বেড়ে উঠেছিলেন। তারা প্রথমে সাউথ পয়েন্ট স্কুলে পড়াশোনা করেন এবং পরে রামানুজ গুপ্ত সিনিয়র সেকেন্ডারি স্কুল থেকে উচ্চ মাধ্যমিক পাস করেন। উচ্চ মাধ্যমিক শেষ করার পর, যমজ দুই ভাই গুয়াহাটির আসাম ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ (AEC) থেকে ইঞ্জিনিয়ারিং পড়েন। তাদের কুইজিং দক্ষতা সম্পর্কে উভয় ভাই বিশ্বাস করে যে একজন ভাল কুইজার হওয়া কেবল প্রস্তুতি বা মুখস্থ করা নয়, এটি একটি আজীবন অভ্যাসও।

“আমাদের স্কুলের দিনগুলি থেকেই আমরা কুইজ প্রতিযোগিতায় উৎসাহী ছিলাম। তখন টিভির সাথে লেগে থাকতাম এবং সেই কুইজগুলি থেকে আমরা যা কিছু প্রয়োজনীয় তা লিখে রাখতাম। তারপর, আমরা স্কুলের কুইজ প্রতিযোগিতায় অংশ নিতে শুরু করি এবং আমরা কোনও সুযোগ মিস করিনি, এবং চলার পথে আমরা অনেকের প্রতিযোগিতায় জিতেছি “, কপিনজল বলেন। তিনি এখন টাটা ক্রুসিবল কর্পোরেট কুইজের পরবর্তী রাউন্ডের জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছেন।

ছোট বেলা থেকেই, এই জুটি পাকা কুইজার হওয়ার লক্ষণ দেখিয়েছিল। অনেক অনুষ্ঠানে তাদের স্কুলের প্রতিনিধিত্ব করা এবং সেখানে প্রশংসা অর্জন করা ছাড়াও, তারা গুয়াহাটির আসাম ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজে তাদের কারিগরি পড়াশুনার দিনগুলিতেও কুইজে অংশ নেওয়ার সংস্কৃতি বজায় রেখেছিলেন। “শিলচরে ফিরে আমাদের কুইজে অংশ নেওয়ার খুব বেশি সুযোগ ছিল না কারণ তখন খুব কম কুইজ হতৈ এখানে। আমাদের ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের দিনগুলিতে শুধু একটি কুইজে অংশ নেওয়ার জন্য এবং পুরস্কার নেওয়ার জন্য অনেক ঘোরাঘুরি করতাম। ততদিনে, কুইজিং আমাদের একটি জীবনের সহজাত অধ্যায় হয়ে গিয়েছিল, তাই আমরা প্রায় সবসময়ই কিছু না কিছু জিতে যাচ্ছিলাম, ” বর্তমানে দিল্লিতে বসবাসকারী কামনাশীষ চৌধুরী বলেন।

Comments are closed.