৪০টি আইসিইউ এবং ১০০ সাধারণ শয্যা নিয়ে করোনা চিকিৎসায় তৈরি শিলচর মেডিক্যাল কলেজ
বরাক উপত্যকায় জনসংখ্যা ৪০ লক্ষের বেশি এবং তিন জেলায় রয়েছে বিভিন্ন সরকারি হাসপাতাল। তবে শিলচর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল ছাড়া অন্য কোনও সরকারি হাসপাতালে আইসিইউ স্তরের চিকিৎসা পরিকাঠামো নেই। গতবছর যখন বরাক উপত্যকায় রাজ্যের প্রথম করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত ব্যক্তির সন্ধান মেলে, তখন চিকিৎসার ক্ষেত্রে ভরসার প্রতিষ্ঠান হয়ে দাঁড়ায় শিলচর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল। এক সময় কোভিড-শূণ্য হয়েছিল, তবে সারাদেশে যখন সংক্রমণ আবার বড় আকার নিচ্ছে, করোনার বিরুদ্ধে লড়াই করতে তৈরি হচ্ছে হাসপাতালটি। ৪০ শয্যার আইসিইউকে আবার পুরোপুরিভাবে করোনা চিকিৎসায় ব্যবহার করা হবে। এছাড়া আপাতত একশটি সাধারণ শয্যা এক্ষেত্রে ব্যবহারের জন্য ঠিক করা হয়েছে। সঙ্গে পর্যাপ্ত চিকিৎসক এবং অন্যান্য স্বাস্থ্যকর্মীদের দল গঠন করা হয়ে গেছে, সংক্রমণের সংখ্যা বৃদ্ধি পেলে তারা পুরোপুরি ভাবে একে কাজে লাগবেন।
হাসপাতালের অধ্যক্ষ ডাঃ বাবুল বেজবরুয়া জানিয়েছেন, তাদের ধারণা অনুযায়ী করোনা ভাইরাস আরও শক্তিশালী হয়ে ফিরে আসছে, ফলে গত বছর থেকে লড়াই আর একটু কঠিন হবে। তিনি বলেন, “ভাইরাস এখন আগের থেকে শক্তিশালী এবং অনেক দ্রুত আক্রমণ করছে, এবার সংক্রমনের ধরন আগের থেকে আলাদা। স্বাস্থ্য বিভাগের পক্ষ থেকে অনেককেই ভ্যাকসিন প্রদান করা হয়েছে, তবে জনগণের সচেতনতা এখন কম। ফলে হঠাৎ করে সংক্রমণের সংখ্যা বৃদ্ধি পাওয়া অস্বাভাবিক নয়। গতবছর একটা সময়ে আমরা হাসপাতালে সব ধরনের পরিষেবা বন্ধ করে শুধুমাত্র করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত ব্যক্তিদের চিকিৎসা করেছি, কেননা এছাড়া কোনও উপায় ছিল না। অনেক ব্যক্তি দেরিতে চিকিৎসার জন্য এসেছিলেন এবং তাদের মধ্যে কিছু মানুষের প্রাণ গেছে। তবু দুই হাজারের কাছাকাছি লোক সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন। আমরা এখন বলতে পারি না আগামীতে কি হবে, কিন্তু গত বছর যেরকম ধীরে ধীরে সংক্রমনের সংখ্যা বাড়ছিল, এবারও যদি তেমনটা হয়, তাহলে আমরা যাতে পরিস্থিতি সামাল দিতে পারি তার জন্য তৈরি থাকছি। সাধারণ মানুষের প্রতি আমার আবেদন, প্রথমত মাস্ক-স্যানিটাইজার ইত্যাদি ব্যবহার করে নিজেদের সুরক্ষিত রাখুন। তবে যদি কোনও লক্ষণ চোখে পড়ে, যত তাড়াতাড়ি সম্ভব পরীক্ষা করিয়ে নিন এবং চিকিৎসাধীন থাকুন।”
গতবছর প্রথমদিকে শিলচর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা হলেও পরবর্তীতে তিন জেলার সিভিল হাসপাতাল এবং অন্যান্য সরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা হয়েছে। পরবর্তীতে উপসর্গ না থাকা ব্যক্তিদের বাড়িতেই চিকিৎসার জন্য থাকতে দেওয়া হয়েছে। তবে শিলচর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল ছাড়া অন্য কোথাও এখনও আইসিইউ স্তরের চিকিৎসা পরিষেবা দেওয়ার মতো পরিকাঠামো গড়ে ওঠেনি। মেডিক্যালেও এক সময় মাত্র ১৯টি আইসিইউ ছিল। করোনা পরিস্থিতিতে প্রধানমন্ত্রী কেয়ারের তরফ থেকে মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ৪০ শয্যার আইসিইউ বানানো হয়। সেটা উদ্বোধন করতে এসেছিলেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্ব শর্মা। তিনি বলেছিলেন তিন মাসের মধ্যে আরও ৬০টি আইসিইউ শয্যা গড়ে উঠবে। তার কথা মতো কাজ শুরু হলেও পরবর্তীতে সেটা এগোয়নি। যারা কাজটির দায়িত্ব নিয়েছিলেন, মাঝপথে ছেড়ে চলে গেছেন। এব্যাপারে কোন পরিষ্কার তথ্য প্রশাসন বা সরকারের তরফে তুলে ধরা হয়নি।
Comments are closed.