হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে ২৪ বছর বয়সে অসময়ে চলে গেলেন সামাজিক ও সাংস্কৃতিক কর্মী বিশ্বরূপ,মেনে নিতে পারছেন না কেউ
অত্যন্ত দুঃখজনক ঘটনা যে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে বিশ্বরূপ ভট্টাচার্য মাত্র ২৪ বছর বয়সে চলে গেলেন এ পৃথিবী ছেড়ে। এভাবে তার হঠাৎ করে চলে যাওয়াকে আত্মীয় স্বজন সহ শিলচরের জনগণ মানতে পারছেন না। সকালে যিনি রূপমের শোভাযাত্রায় একজন স্বেচ্ছাসেবক হিসেবে স্বতঃস্ফূর্তভাবে অংশগ্রহণ করেছেন, কয়েক ঘন্টার ব্যবধানে তার মৃত্যুর কোলে বলে পড়ার খবর শিলচরকে শোকস্তব্ধ করে তোলে। শিলচরের পাবলিক স্কুল রোডের বাসিন্দা বিশ্বরূপ বিভিন্ন সামাজিক এবং সাংস্কৃতিক সংস্থার সঙ্গে যুক্ত হয়ে নানা সামাজিক, সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডে সক্রিয়ভাবে জড়িত ছিলেন। পাবলিক স্কুল রোড সহ বিলপাড়ের সবাই বিশ্বরূপকে ভুবন নামে এক ডাকে চিনত। সেই ভুবনের এভাবে অসময়ে চলে যাওয়াকে মেনে নিতে পারছেন না সামাজিক ও সাংস্কৃতিক কর্মীসহ শিলচরের সাধারণ মানুষও।
পারিবারিক সূত্র থেকে জানা যায়, সকালে তিনি শিলচরের নাটক প্রতিযোগিতার সূচনা উপলক্ষে সাংস্কৃতিক সংগঠন রূপমের শোভাযাত্রায় অংশগ্রহণ করেন। কিন্তু কিছুটা পথ চলার পর বুকে ব্যথা অনুভব করায় অসুস্থতা বোধ করেন। সঙ্গে সঙ্গে তাকে শিলচর সিভিল হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। ওখানকার চিকিৎসকরা প্রাথমিক চিকিৎসার পর তাকে বাড়ি নিয়ে যাওয়ার জন্য পরামর্শ দেন। সেই অনুযায়ী বাড়িতে নিয়ে যাওয়া হলেও কিছুক্ষণ পর তিনি আবার অস্বস্তিবোধ করেন। সেই সঙ্গে বুকে প্রচণ্ড ব্যথা অনুভব করেন। সঙ্গে সঙ্গে দ্রুত তাকে শিলচর মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। কিন্তু সেখানে চিকিৎসকরা তাকে মৃত বলে ঘোষণা করেন।
উল্লেখ্য,বিশ্বরূপ ভট্টাচার্যের বাবা বিশ্বজিৎ ভট্টাচার্য গত বছর মারা যান। তিনি পাবলিক স্কুলের শিক্ষক ছিলেন। এবার বিশ্বরূপের এভাবে অসময়ে চলে যাওয়ায় তার মা ভীষণভাবে একা হয়ে গেলেন।
বিশ্বরূপ ভট্টাচার্য ছিলেন শিলচরের বরাক ভ্যালি ইয়ুথ ইউনিয়ন(বিভিওয়াইইউ)’র প্রধান আহ্বায়ক ও প্রতিষ্ঠাতা। উল্লেখ্য, এটি একটি এনজিও, যা যুব সমাজকে সঠিক পথে চালিত করার জন্য কাজ করে থাকে। এই এনজিওটি বরাক উপত্যকার জনগণকে মাতৃভাষার গুরুত্ব তথা আসামে বাংলা ভাষার অখন্ডতা রক্ষার জন্য কিভাবে লড়াই করতে হবে সে সম্পর্কে সচেতন করে তুলতে বিভিন্ন কর্মসূচির আয়োজন করেছে।
বিশ্বরূপের এভাবে অসময়ে চলে যাওয়ায় শিলচরের সাংস্কৃতিক মহলে শোকের ছায়া নেমে এসেছে।
Comments are closed.