দুদিন পর ভেসে উঠলো গভীর রাতে ঝাঁপ দেওয়া যুবকের মৃতদেহ, মৃত্যুর রহস্য নিয়ে তদন্তে পুলিশ
মঙ্গলবার রাতে সোনাই তোলারগ্রাম প্রথম খণ্ডের বাসিন্দা সৌভিক দাস বাড়ি থেকে নিখোঁজ হয়েছিল। পরে সোনাই বাজার সংলগ্ন বিসর্জন ঘাটে তার মোবাইল ফোন এবং চপ্পল পাওয়া যায়। বৃহস্পতিবার সকালে বিসর্জন ঘাট সংলগ্ন এলাকায় নদী থেকে তার মৃতদেহ উদ্ধার হয়েছে। মাত্র ২২ বছর বয়সে এভাবে যুবকের মৃত্যু হওয়ায় এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে। তবে তার মৃত্যু নিয়ে কিছুটা সংশয় রয়েছে, প্রাথমিক তদন্তে মনে করা হচ্ছে যুবকটি নিজেই আত্মহত্যার উদ্দেশ্যে নদীতে ঝাঁপ দিয়েছিল। দুর্যোগ মোকাবিলা বিভাগের পক্ষ থেকে আপাতত এটুকুই বলা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে আটটা নাগাদ সোনাই বাজার সংলগ্ন বিসর্জন ঘাটের পাশে ভেসে ওঠে ২২ বছর বয়সের যুবক সৌভিক দাসের মৃতদেহ। এলাকাবাসীরা মৃতদেহ দেখতে পেয়ে স্থানীয় পুলিশকে খবর দেন এবং পুলিশের পক্ষ থেকে দুর্যোগ মোকাবেলা বিভাগের সাহায্য চাওয়া হয়। বিভাগের ডুবুরিরা এসে মৃতদেহ উদ্ধার করেন এবং পুলিশের তত্ত্বাবধানে সেটি শিলচর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠিয়ে দেওয়া হয়।
পুলিশ সূত্রের খবর অনুযায়ী, মঙ্গলবার রাতে ঘরের কাউকে না জানিয়ে হঠাৎ বেরিয়ে যায় সৌভিক। অনেক রাত পর্যন্ত ফিরে না আসায় তাকে খুঁজতে শুরু করেন পরিবারের লোকেরা। তার মোবাইলে অনেক বার ফোন করলেও সেটা প্রথমে সে রিসিভ করেনি এবং পরে মোবাইল সুইচ অফ হয়ে যায়। শেষমেষ যুবকটির বাবা সলিল দাস সোনাই থানায় খবরটি জানান এবং লিখিতভাবে একটি মিসিং ডায়েরি দায়ের করেন।
এদিকে পরিবারের লোক সহ আত্মীয়-স্বজন এবং বন্ধুবান্ধবরা সারারাত ধরে তাকে খোঁজাখুঁজি করেন। বুধবার ভোরে সোনাই বাজার সংলগ্ন বিসর্জন ঘাটে সেই যুবকের মোবাইল ফোন এবং চপ্পল চোখে পড়ে। এতে সন্দেহ করা হয় যুবকটি নদীতে তলিয়ে গেছে। দুর্যোগ মোকাবেলা বিভাগের তত্ত্বাবধানে এসডিআরএফ ও এনডিআরএফ বাহিনী সোনাই নদীতে তল্লাশি শুরু করে। কিন্তু দিনভর তল্লাশি করে নিখোঁজ যুবকের কোনও সন্ধান পাওয়া যায়নি।
পুলিশের তরফে বলা হয়েছে এটি আত্মহত্যা কিনা সে বিষয়ে তদন্ত চলছে। এভাবে গভীর রাতে ঘর থেকে বেরিয়ে এসে চপ্পল এবং মোবাইল নদীর ধারে রেখে ঝাঁপ দেওয়া একটু সন্দেহজনক ব্যাপার। এর পেছনে অন্য কোনও রহস্য রয়েছে কিনা সেটাও খতিয়ে দেখা হচ্ছে। আপাতত যুবকটির মৃতদেহ শিলচর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে, সেখানে ময়নাতদন্তের রিপোর্টে অনেক তথ্য বেরিয়ে আসবে।
দুর্যোগ মোকাবিলা বিভাগের তরফে বলা হয়েছে, যদিও এটি জলে ডুবে মৃত্যু কিন্তু এর পেছনে অন্য রহস্য থাকার সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে। আপাতত পুলিশ ঘটনার তদন্ত করছে এবং মৃতদেহ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। পুলিশের তদন্তের রিপোর্ট আসার পরেই বিভাগের তরফে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে এটি নেহাত জলে ডুবে মৃত্যু, না আত্মহত্যার ঘটনা।
Comments are closed.