চলে গেলেন প্রাক্তন তারকা ক্রীড়াবিদ-সংগঠক সুজিত দত্তগুপ্ত
প্রয়াত হলেন জেলার প্রাক্তন তারকা ক্রীড়াবিদ তথা শিলচর জেলা ক্রীড়া সংস্থার প্রতিষ্ঠাতা সদস্য সুজিত দত্তগুপ্ত। বেশ কিছু সময় থেকে অসুস্থ থাকার পর রবিবার রাত ১২:২৫ মিনিটে স্থানীয় এক নার্সিংহোমে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি। বয়স হয়েছিল ৮৪।
গত কয়েক মাস থেকেই কিডনি সমস্যায় ভুগছিলেন প্রয়াত সুজিত দত্তগুপ্ত। এরই মধ্যে হার্টের সমস্যা নিয়ে ভর্তি হন হাসপাতালে। তবে শেষ রক্ষা হয়নি। এদিন প্রাক্তন তারকা ক্রীড়াবিদকে শেষ শ্রদ্ধা জানায় শিলচর জেলা ক্রীড়া সংস্থা। তারপর নরসিং এইচএস স্কুল, টেনিস ক্লাব, ইন্ডিয়া ক্লাব এবং রটারি ক্লাব এর পক্ষ থেকে শেষ শ্রদ্ধা জানানো হয়।
১৯৩৮ সালের ১ মার্চ হাইলাকান্দিতে জন্মগ্রহণ করেছিলেন সুজিত দত্তগুপ্ত। ১৯৫৫ থেকে ১৯৮০ সাল পর্যন্ত একটানা ২৫ বছর সিনিয়র জেলা দলের প্রতিনিধিত্ব করেছিলেন তিনি। যা আজও এক রেকর্ড। চাকরি সূত্রে তিনি ছিলেন একজন শিক্ষক। নরসিং স্কুলের। ক্রিকেটের সঙ্গে ফুটবল, টেনিস এবং ব্যাডমিন্টনেও দাপট দেখিয়েছেন তিনি।
শিলচর জেলা ক্রীড়া সংস্থার প্রতিষ্ঠাতা সদস্য সচিব দত্তগুপ্ত বিভিন্ন সময়ে ফুটবল, স্টেডিয়াম সচিব এবং কোষাধ্যক্ষের দায়িত্ব পালন করেছেন। শিলচর ডিএসএর সচিব ছিলেন ১৯৭৯ সালে। খেলোয়াড় জীবন থেকেই ইন্ডিয়া ক্লাবের সঙ্গে ছিল তার হৃদয়ের সম্পর্ক। ১৯৮৫ সালে ইন্ডিয়া ক্লাবের সচিব নির্বাচিত হয়েছিলেন। ১৯৯৭ সাল পর্যন্ত এই দায়িত্বে ছিলেন। ২০০৫ সালে ইন্ডিয়া ক্লাবের সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেন। এই পদে এক দশকেরও বেশি সময় ছিলেন।
১৯৫৫ সালে প্রথমবার জেলা দলের হয়ে খেলেন সবার প্রিয় ‘সুজিত দা’। সে ছিল শুরু। তারপর আর পেছনে ফিরে তাকাতে হয়নি তাকে। ক্রিকেট ছাড়াও ব্যাডমিন্টন, টেবিল টেনিস এবং হকিতেও ছিলেন পারদর্শী। ১৯৬৪ সালে রাজ্য লন টেনিস চ্যাম্পিয়নশিপে ডাবলসে জিতেন্দ্র চন্দ্র দাসগুপ্তের সঙ্গে জুটি বেঁধে চ্যাম্পিয়ন হয়েছিলেন। ঘরোয়া ক্রিকেটে ইন্ডিয়া ক্লাব, শিলচর স্পোর্টিং এবং টাউন ক্লাবের হয়ে খেলেছেন। ফুটবল খেলেছেন শুধু ইন্ডিয়া ক্লাবের জার্সি গায়ে। খেলার পাশাপাশি ছিলেন আম্পায়ারও। হকি, ক্রিকেট, টেবিল টেনিস এবং টেনিস রাজ্য ক্লাস টু রেফারি হিসেবে সুনাম অর্জন করেছিলেন তিনি। ১৯৬২ সালে সুব্রত মুখার্জি কাপে স্কুল দল নিয়ে গিয়েছিলেন নয়া দিল্লিতে। ১৯৭৬ ও ১৯৭৮ সালে দিল্লিতে স্কুলের হকি দল নিয়ে গিয়েছিলেন জুনিয়র হকি টুর্নামেন্টে।
শিলচরে ক্রিকেট হোক অথবা ফুটবল, খেলা থাকলেই মাঠে আসতেন। নিজের প্রিয় ইন্ডিয়া ক্লাবের ম্যাচ থাকলে গোটা ম্যাচ মাঠে বসেই দেখতেন। খেলোয়ারদের টিপস দিতেন। এমন একজন ক্রীড়াবিদের প্রয়াণে শোকস্তব্ধ ক্রীড়াঙ্গন।
Comments are closed.