
হাসপাতাল থেকে কিছুটা সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরলেন শিলচরের প্রাক্তন খেলোয়াড় ভরত হাজাম
খেলোয়াড় জীবনে তিনি ছিলেন একজন ফাইটার। বিনা লড়াইয়ে এক ইঞ্চি জমিও ছেড়ে দিতেন না। জীবন সংগ্রামেও সেই একই মানসিকতার পরিচয় দিচ্ছেন শিলচরের প্রাক্তন খেলোয়াড় ভরত হাজাম। বয়স হয়েছে, ফলে শরীরে জাঁকিয়ে বসেছে বিভিন্ন রোগ। এরপরও কিন্তু লড়াই চালিয়ে যাচ্ছেন প্রাক্তন তারকা খেলোয়াড়। একজন খেলোয়াড় হিসেবে যেমন তিনি অন্যদের জন্য উদাহরণ, ঠিক তেমনি জীবন যুদ্ধেও।
পুজোর আগে একবার স্ট্রোক হয়। এর ফলে হাসপাতালেও ভর্তি হতে হয়েছিল তাকে। এরপর স্বাস্থ্যের কিছুটা উন্নতি হওয়ায় তারাপুরের বাড়িতে নিয়ে আসা হয়। তবে লক্ষ্মী পুজোর দিন ফের মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণ হয়। তড়িঘড়ি করে তাঁকে নিয়ে যাওয়া হয় স্থানীয় একটি হাসপাতালে। কন্ডিশন সিরিয়াস থাকায় ভর্তি করা হয় আইসিইউতে। কয়েকদিন ছিলেন সেখানে। এরপর আস্তে আস্তে তার শারীরিক অবস্থার উন্নতি হয়। ফলে তাকে শিফট করা হয় কেবিনে। বিভিন্ন ধরনের টেস্টের রিপোর্ট ও নরমাল আসে। বুধবার রাতে তিনি হাসপাতাল থেকে ছাড় পেয়েছেন। তবে দু-দুটি স্ট্রোক এর ফলে শারীরিক দুর্বলতা রয়েছে। ভরত হাজামের ছোট ছেলে বিশ্বনাথ বলেন, ‘আগের তুলনায় এখন বাবা অনেকটাই ভালো। তবে প্রচন্ড দুর্বল। শুধু তরল পদার্থ খাওয়ানো হচ্ছে।’
এর আগে কোভিডে আক্রান্ত হয়েছিলেন অতীতের এই দিকপাল খেলোয়াড়। মহামারি ভাইরাসের সঙ্গে লড়াই করে সেরে উঠলেও দেখা দিয়েছিল নানা সমস্যা। বুকে সংক্রমণ ধরা পড়েছিল। যার ফলে বেশ ক’দিন থাকতে হয়েছিল স্থানীয় এক নার্সিংহোমে।
ভরত হাজাম ছিলেন একজন ভার্সাটাইল খেলোয়াড়। ক্রিকেট ও ফুটবল দুটোতেই তিনি জেলা দলের প্রতিনিধিত্ব করেছিলেন। ক্রিকেটার হিসেবে ১৯৬৬ সালে খেলেন স্কুল টুর্নামেন্ট। আন্তঃজেলা ক্রিকেটে শুধু শিলচরের নয়, করিমগঞ্জ এবং ধুবড়ির হয়েও প্রতিনিধিত্ব করেছিলেন। শিলচর ও করিমগঞ্জ দলের হয় ১৯৬৮ থেকে ১৯৭১ এবং ১৯৭৬ থেকে ১৯৮১ সাল পর্যন্ত আন্তঃজেলা ক্রিকেট খেলেছেন। ধুবড়ির হয়ে খেলেছেন ১৯৮৩ থেকে ১৯৮৫ সাল পর্যন্ত। ডানহাতি ওপেনার ছিলেন তিনি।
ফুটবলার হিসেবে ১৯৫৫ সালে ক্লাব ফুটবলে অংশগ্রহণ করেন। ১৯৬৩ সালে যোগ দেন পি ডব্লিউ ডি তে। তার আগে খেলেন টাউন ক্লাবে। ১৯৬৪ সালে চাকরি পান ফায়ার সার্ভিসে। এরপর ট্রেনিংয়ের জন্য নাগপুর ও মুম্বাই যেতে হয়েছিল তাকে। ১৯৬৬ সালে অসমে ফিরেন। পোস্টিং হয় যোরহাটে। সেখানেই লিগ খেলেন। ফুটবলার হিসেবে খেলেছেন অসম ফায়ার সার্ভিস দলেও। একবার রাজ্য দলেও ডাক পেয়েছিলেন। একজন ফুটবলার হিসেবে আরো অনেক এগিয়ে যেতে পারতেন ভরত হাজাম। তবে হাঁটুর চোটের জন্য সময়ের আগেই তাকে ফুটবল ছাড়তে হয়।
Comments are closed.