Also read in

শিলচরের ডিভিশন্যাল ফরেস্ট অফিস রাতে বারে পরিণত; স্টিং অপারেশনে ধরা পরল পার্টির দৃশ্য ,ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিলেন ডিএফও

সরকার বনবিভাগের রেঞ্জার এবং অন্যান্য কর্মকর্তাদের নিয়োগ করে থাকেন চব্বিশ ঘন্টা ধরে বনভূমি এবং বন্যপ্রাণী সুরক্ষার জন্য। প্রশিক্ষিত ব্যক্তিদের দ্বারা দিনরাত পর্যবেক্ষণের জন্য বিভিন্ন শিফটে তাদের মোতায়েন করা হয়। স্বাভাবিকভাবেই কাছাড় বন বিভাগের অধীন ডিভিশনাল ফরেস্ট অফিস কার্যালয় একটি গুরুত্বপূর্ণ দপ্তর এবং এই দপ্তরের কর্মচারীদের বনভূমি ও বন্যপ্রাণীর সুরক্ষার জন্য দায়বদ্ধ থাকা উচিত। দুর্বৃত্তরা এবং চোরা শিকারীরা সাধারণত রাতেই সক্রিয় হয়। তাই রাতের ডিউটিতে থাকা রেঞ্জারদের অন্ধকারে ও চোখ-কান খোলা রাখার আহ্বান জানানো হয়।

কিন্তু, আশ্চর্যজনক ভাবে শিলচর ডিভিশনাল ফরেস্ট অফিসটি রাতে বারে পরিণত হয়। সরকারের বেতনভোগী কর্তব্যরত কর্মকর্তারা পার্টির মেজাজে থাকেন , তাই তাদের চোখ কান খোলা রাখার মোডটি অফ করে দেন। এতদিন এটি একটি গুজব ছিল, বরাক বুলেটিনের স্টিং অপারেশন ফরেস্ট অফিসের ভেতরের রাতের রহস্য উন্মোচন করল।

ফরেস্ট রেঞ্জারের অফিসের পাশের একটি কক্ষে ইউনিফর্ম পরিহিত ডিউটিতে থাকা অবস্থায় ধ্রুবজ্যোতি পুরকায়স্থ এবং সার্ভেয়ার সৌম্য কান্তি সিনহা (রানা) কে মদ্যপান করতে দেখা যায়। প্রটেকশন রেঞ্জার তথা শিলচর সদর ইনচার্জ – রেঞ্জার শিবহরি সিনহা ও মাদকাসক্ত ছিলেন। যাইহোক, তিনি তড়িঘড়ি সেই ঘর থেকে সরে গিয়ে কাজের ভান করে তার টেবিলে বসে পড়েন।

মিডিয়াকে দেখতে পেয়ে কর্মকর্তারা ক্যামেরা ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করেন। তাদের মধ্যে কয়েকজন ট্রাকের নীচে লুকিয়ে ছিলেন এবং কয়েকজন কর্মকর্তা দৌড়ে পালান।

প্রটেকশন রেঞ্জার কাম শিলচর সদর ইনচার্জ – রেঞ্জার শিবহরি সিনহাকে তার অফিস সংলগ্ন কক্ষে চলতে থাকা গতিবিধি সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করা হয়েছিল। তিনি জানান, এ বিষয়ে তার কোনো ধারণা নেই। যখন জিজ্ঞাসা করা হল কিভাবে এটা সম্ভব যে এত গুরুত্বপূর্ণ পদে থাকা সত্ত্বেও, তার অফিসে কী ঘটছে সে সম্পর্কে তার কোন ধারণা নেই? তিনি নিরুত্তর হয়ে পড়েন কারণ বলার মত কিছু ছিল না তার।

সরকারি সবগুলো অফিসের মত এই অফিসটি ও করদাতাদের টাকায় চলে। সমাজের প্রতি এটির ও একটি দায়বদ্ধতা রয়েছে। ডিভিশন্যাল ফরেস্ট অফিসার তেজাস মারিস্বামী এই কাজের নিন্দা জানিয়েছেন। “অফিস প্রাঙ্গনে এটি অবশ্যই অনুমোদিত নয়। এই বিষয়ে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে, ” আশ্বাস দেন কাছাড় জেলার ডিএফও ।

 

প্রাপ্তবয়স্কদের অ্যালকোহল গ্রহণে কোন সমস্যা নেই এবং তা করার অধিকার তাদের রয়েছে। প্রশ্ন হল, কোনো সরকারি অফিসকে একটি বারে পরিণত করে করদাতাদের অর্থের অপব্যবহার এবং কর্তব্যরত কর্মকর্তারা নিজেদেরকে মদের মধ্যে ডুবিয়ে রাখা কতটুকু যুক্তিসঙ্গত !!

 

Comments are closed.