ভ্যাকসিনের দ্বিতীয় ডোজ নেওয়ার পরও করোনা-পজিটিভ করিমগঞ্জ সিভিল হাসপাতালের সুপার
সারাদেশে যখন ভ্যাকসিন প্রক্রিয়া শুরু হয়, প্রথমে সেটা নেওয়ার সুযোগ পান স্বাস্থ্যকর্মীরা। বরাক উপত্যকায় কোভিশিল্ড ভ্যাকসিনই প্রত্যেক ব্যক্তিকে দেওয়া হয়েছে। ভ্যাকসিনের দ্বিতীয় ডোজ নেওয়ার পরও করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হলেন করিমগঞ্জ সিভিল হাসপাতালের সুপার ডাঃ অরুনাভ চৌধুরী। বুধবার তার পরীক্ষা হয় এবং রেজাল্ট পজিটিভ আসে। এবার তাকে বাড়িতেই চিকিৎসার জন্য অনুমতি দেওয়া হয়েছে।
জেলা স্বাস্থ্য বিভাগের যুগ্ম সঞ্চালক ডাঃ অনুপ দত্যারি খবরটি জানিয়েছেন। তিনি বলেন, “আমরা জেলার প্রত্যেক স্বাস্থ্যকর্মীকে ইতিমধ্যে ভ্যাকসিনের দ্বিতীয় ডোজ দিয়েছি। দ্বিতীয় ডোজ নেওয়ার পরও আমাদের বিভাগের বরিষ্ঠ কর্মী করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন। তবে এই ঘটনাকে আমরা ভ্যাকসিনের ব্যর্থতা বলতে চাইছি না। এইবার করোনা ভাইরাস অনেক বেশি শক্তিশালী হয়ে ফিরে এসেছে। এই মুহূর্তে যারা ভ্যাকসিন নিয়েছেন, তারা বাকিদের থেকে হয়তো একটু বেশি ক্ষমতা নিয়ে লড়াই করবেন। জেলার প্রত্যেক ব্যক্তিকে ভ্যাকসিন দেওয়ার প্রক্রিয়া অনেকটা এগিয়ে গেছে, ফলে আমরা আশা করছি ভাইরাস আমাদের অনেক কম ক্ষতি করতে পারবে।”
গতবছর রাজ্যের প্রথম করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত ব্যক্তির সন্ধান পাওয়া গেছিল করিমগঞ্জ জেলার বদরপুরে। দিল্লি-ফেরত জামাল উদ্দিন ছিলেন রাজ্যের প্রথম করোনা আক্রান্ত ব্যক্তি। প্রায় ৩৯ দিন শিলচর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন থেকেছেন, ১৩ নম্বর পরীক্ষায় তার রেজাল্ট নেগেটিভ হয়েছিল। পরবর্তীতে ভাইরাসের কবলে অনেক মানুষ এসেছেন, অনেকের মৃত্যু হয়েছে এবং তার থেকে অনেক বেশি মানুষ সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন। সম্প্রতি নির্বাচন শেষ হয়েছে এবং এখন জনমনে ভাইরাস নিয়ে সচেতনতা আতঙ্ক দুটোই কম। খুব কম সংখ্যক মানুষ এখন জনসমাগমে গেলে মাস্ক ব্যবহার করেন, স্যানিটাইজারের ব্যবহারও একেবারে কমে গেছে। তবে সম্প্রতি স্বাস্থ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্ব শর্মা ইঙ্গিত দিয়েছেন, বিহু উৎসব পালনের পর সরকার হয়তো একটু কড়া মনোভাব নেবে।
উপত্যকার যেসব সরকারি স্বাস্থ্য কেন্দ্রে ভ্যাকসিন প্রদান চলছে সেখানে মানুষের ভিড় বাড়ছে। অনেকে লম্বা লাইনে দাঁড়িয়ে ভ্যাকসিন নিচ্ছেন এবং কেউ কেউ জানিয়েছেন এটা নেওয়ার পর বিভিন্ন সমস্যাও দেখা দিয়েছে। যদিও এখনও এমন কোনও সমীক্ষা হয়নি যে ভ্যাকসিন নেওয়ার পর মানুষ কতটুকু সুরক্ষিত। তবে দ্বিতীয়বার ভ্যাকসিন নেওয়ার পর একজন স্বাস্থ্য বিভাগের আধিকারিক করোনা পজিটিভ হওয়ায় জনমনে একটা সংশয় এবং আতঙ্ক অবশ্যই দেখা দিয়েছে।
Comments are closed.