সব রেকর্ড ভেঙে কাছাড়ে একদিনে ৩৯৮ জন করোনায় আক্রান্ত, সুস্থ হয়েছেন ১৮১
করোনা ভাইরাস সংক্রমণের গতি ক্রমশ দ্রুত হচ্ছে এবং প্রতিদিন আক্রান্তের সংখ্যা নতুন রেকর্ড স্পর্শ করছে। বুধবার কাছাড় জেলায় আক্রান্ত হয়েছিলেন ৩৭০ জন ব্যক্তি, যেটা ছিল এযাবত একদিনে সর্বোচ্চ, বৃহস্পতিবার সেই রেকর্ড ভেঙে কাছাড় জেলায় আক্রান্ত হয়েছেন ৩৯৮ জন। রেপিড এন্টিজেন টেস্টে ২০৫ জন এবং আরটিপিসিআর পরীক্ষায় ১৯৩ জন ব্যক্তির শরীরে থাকা সংক্রমণ শনাক্ত করা হয়েছে। পাশাপাশি ১৮১ জন ব্যক্তি করোনা ভাইরাস মুক্ত হয়েছেন। ভাইরাসের দ্বিতীয় ঢেউয়ে কাছাড় জেলায় এখন পর্যন্ত ৩৬০৭ জন আক্রান্ত হয়েছেন এবং ২৪৫২ জন ব্যক্তি সুস্থ হয়েছেন। বৃহস্পতিবার জেলায় ১৯৯৪ জন ব্যক্তির রেপিড এন্টিজেন টেস্ট হয়েছে, এতে ২০৫ জন পজিটিভ হয়েছেন এবং ১৭৮৯ জন নেগেটিভ হয়েছেন। সংক্রমণের হার ১০.২৮ শতাংশ।
জেলায় আক্রান্ত অবস্থায় চিকিৎসাধীন রয়েছেন ১১২৯ জন ব্যক্তি। শিলচর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন ২২৩ জন, সিভিল হাসপাতালে রয়েছেন ১৭ জন, গ্রীন হিলস হাসপাতালে ২৯ জন, কাছাড় ক্যান্সার হাসপাতালে ১৫ জন, ভ্যালি হাসপাতালে ৯ জন, গ্রেসওয়েল হাসপাতালে ২৪ জন, সিআরপিএফ দয়াপুর হাসপাতালে ২১ জন, সেনা হাসপাতালে ৭ জন এবং বাড়িতে চিকিৎসাধীন ৭৮৪ জন।
স্বাস্থ্যবিভাগের হিসেব অনুযায়ী জেলায় এখন পর্যন্ত ২৬ জন ব্যক্তির মৃত্যু হয়েছে। এর মধ্যে একজনের মৃত্যুর জন্য সরাসরি করোনা ভাইরাসকে দায়ী করেছে অডিট বোর্ড। বাকি ২৫ জনের শরীরে অন্যান্য সমস্যা থাকার পাশাপাশি করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ ছিল। প্রত্যেকের শেষকৃত্য হয়েছে কোভিড প্রটোকল মেনে।
বৃহস্পতিবার শিলচর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে দুই ব্যক্তির মৃত্যু হয়েছে, একজন হাইলাকান্দি জেলার এবং অপরজন করিমগঞ্জের। প্রথমে শিলচর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মারা যান হাইলাকান্দি জেলার আলগাপুরের বাসিন্দা রিজিয়া বেগম বড়ভূঁইয়া। তিনি ১২ মে অর্থাৎ বুধবার অত্যন্ত গুরুতর অসুস্থ অবস্থায় শিলচর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য এসেছিলেন এবং বৃহস্পতিবার সকাল ৬ টা ৩০ মিনিটে তার মৃত্যু হয়েছে। মৃত্যুকালে বয়স হয়েছিল ৪৫ বছর। একসময় তার অক্সিজেনের মাত্রা দ্রুত নেমে আসে এবং হাসপাতালের আইসিইউ ওয়ার্ডে ভেন্টিলেশনে অক্সিজেনের সাহায্যে চিকিৎসা প্রদান করা হয়।
করিমগঞ্জ জেলার বদরপুরের বাসিন্দা পি কে ভট্টাচার্য দুপুর ১টা ৩০ মিনিটে শিলচর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে আইসিইউ ওয়ার্ডে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেছেন। তিনি বুধবার শিলচর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন এবং একদিন চিকিৎসাধীন থাকার পরেই মৃত্যু হয়েছে।
হাসপাতালের বরিষ্ঠ চিকিৎসকরা বলছেন, অনেকেই সময় থাকতে চিকিৎসাধীন হচ্ছেন না, ফলে মৃত্যুর সংখ্যা বাড়ছে। যখন তারা হাসপাতালে আসেন, ততক্ষনে দেরি হয়ে যায়, ফলে প্রয়োজনীয় চিকিৎসা প্রদান করা সম্ভব হয় না।
হাসপাতালের সহকারী অধ্যক্ষ ডাঃ ভাস্কর গুপ্ত জানিয়েছেন, ১০৮ জন রোগী হাসপাতালে অক্সিজেনের সাহায্যে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। ভেন্টিলেশনে রয়েছেন ১৪ জন ব্যক্তি। বৃহস্পতিবার ২৩ জন ব্যক্তি চিকিৎসার জন্য এসেছেন এবং ১৫ জন সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন। ৫০ জন রোগী শরীরের সংক্রমণ থাকা সত্ত্বেও ডাক্তারদের পরামর্শে বাড়িতে চিকিৎসার জন্য চলে গেছেন কেননা তাদের স্বাস্থ্যের উন্নতি হয়েছে।
Comments are closed.