Also read in

হাইকোর্টে চন্দ্রধরের নাগরিকত্বের জন্য পরিবারকে লড়তে বললেন সুস্মিতা

 

বিদেশি ট্রাইব্যুনালের রায়ে ২০১৮ সালে ভারতীয় নাগরিকত্ব হারিয়েছিলেন আমরাঘাটের চন্দ্রধর দাস। শেষ ইচ্ছে ছিল মৃত্যুর আগে নিজের ভারতীয় নাগরিকত্ব প্রমাণ করে যাবেন। সেটা হয়নি, অবৈধ অনুপ্রবেশকারীর তকমা নিয়েই রবিবার রাতে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেছেন তিনি। তার মৃত্যুতে স্তব্ধ গোটা উপত্যকা, অনেকেই পরিবারের পাশে দাঁড়িয়েছেন। সোমবার সন্ধ্যেবেলা তাদের বাড়িতে পৌঁছে প্রাক্তন সাংসদ তথা জাতীয় মহিলা কংগ্রেসের সভানেত্রী সুস্মিতা দেব পরামর্শ দেন, তারা যেন নাগরিকত্বের লড়াই বন্ধ না করেন। মৃত্যুর পরেও যাতে চন্দ্রধর দাস তার নাগরিকত্ব প্রমাণ করতে পারেন এই চেষ্টা পরিবারকে করতে বলেন তিনি। এই প্রক্রিয়ার পুরও দায়িত্ব তিনি নিজে নিতে রাজি আছেন বলে জানান সুস্মিতা।

বরাক বুলেটিনের সঙ্গে আলাপচারিতায় সুস্মিতা বলেন, “এটা শুধুমাত্র একজন ব্যক্তির মৃত্যুর ঘটনা নয়, আমাদের পুরো আইন এবং সমাজ ব্যবস্থার ব্যর্থতার একটি উদাহরণ। যে লোকটি শুধুমাত্র ভারতীয় নাগরিকত্বের স্বীকৃতি পাওয়ার আশা নিয়ে পৃথিবী ছেড়েছেন, তার জন্য পরিবারকে এখন লড়াই করা উচিত। তবে মুখে বললেও হাইকোর্টে গিয়ে এই প্রক্রিয়ায় যোগ দেওয়া এবং জয়ী হয়ে বেরিয়ে আসা একটি সময়-সাপেক্ষ এবং খরচ-সাপেক্ষ ব্যাপার। আমি পরিবারের সদস্যদের আশ্বাস দিয়েছি, তারা যদি হাইকোর্টে যেতে রাজি হন তাহলে এর পুরো খরচ বহন করব। এছাড়া সেখানে যাতে তাদের সঙ্গে অন্যায় না হয় তাই পাশেও থাকব। এটা শুধু রাজনীতিবিদ হিসেবে নয় একজন মানুষ হিসেবে আমি করতে চাই, কেননা আমাদের যন্ত্রণার ইতিহাস একদিনের নয়।”

রবিবার রাতে চন্দ্রধর দাস শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেছেন এবং তাঁর শেষকৃত্য বাড়িতেই সম্পন্ন হয়েছে। সারাদেশের প্রথম সারির সংবাদমাধ্যমগুলো তার খবর প্রথম পাতায় ছেপেছে। সারাদেশে এই ঘটনায় আলোড়ন পড়ে গিয়েছে এবং অনেকেই পরিবারের পাশে দাঁড়াতে চাইছেন। তবে সদ্য বাবা হারানো নিয়তি রায় এবং তার ভাই এখনও মামলা লড়া নিয়ে কোনও সিদ্ধান্ত নেননি। তারা বলেন, “বাবা জীবিত থাকতে আমরা নিজেদের সর্বস্ব দিয়ে লড়াই করতে চেয়েছি, এখনও চাই তার নাগরিকত্ব যাতে মৃত্যুর পরেও স্বীকার করা। হয় তবে আমাদের যা অবস্থা সেটা নিয়ে গুয়াহাটি গিয়ে কতটুকু লড়াই করতে পারবো, জানিনা। এছাড়া আমাদের সঙ্গে মা’ রয়েছেন এবার তাকে দেখে রাখতে হবে। তিনিও আমাদের লড়াইয়ে সমান সহযোগি, তারও মনের অবস্থা এখন অত্যন্ত খারাপ। আমরা সাধারন মানুষ, শুধুমাত্র শান্তিতে বেঁচে থাকাটাই আমাদের কাছে সবথেকে বড় প্রাপ্তি।”

Comments are closed.