২০টি ঘর জ্বালিয়ে দিল মিজো দুষ্কৃতীরা, আটক ৭০ পরিবারে, গুরুতর আহত চার, উত্তেজনা মিজো-সীমান্ত কচুরতলে
আসাম-মিজোরাম সীমান্তে আবার তীব্র উত্তেজনার সৃষ্টি হয়েছে। মঙ্গলবার সন্ধ্যা বেলা সীমান্ত সংলগ্ন কয়েকটি এলাকায় পরপর হামলা চালায় মিজো দুষ্কৃতীরা, প্রায় কুড়িটি ঘর জ্বালিয়ে দেয়া হয়েছে, বেশ কয়েকজন আহত হয়েছেন এবং প্রায় ৭০ পরিবার মিজো দুষ্কৃতীদের দাঁড়া আটক হয়ে আছেন। পুলিশ এবং সেনাবাহিনী এদের উদ্ধার করার চেষ্টা করছে তবে এখনো পরিস্থিতির ব্যাপারে স্পষ্ট কিছু বলতে পারেননি জেলাশাসক মেঘ নিধি দাহাল এবং ডিআইজি দিলীপ কুমার দে।
স্থানীয় সূত্রে খবর অনুযায়ী, প্রধানমন্ত্রী গ্রাম সড়ক যোজনার অধীনে রাস্তার কাজ শুরু হয়েছিল মিজোরাম সীমান্তবর্তী এলাকায়। মিজো দুষ্কৃতীরা এই রাস্তা নির্মাণের তীব্র বিরোধিতা করে আসছিল, এবং লাগাতার হুমকি দিচ্ছিল। শেষমেশ তারা এলাকায় হামলা চালায় প্রায় কুড়িটি ঘর আগুন লাগিয়ে ভষ্মীভূত করে দেয়। স্থানীয় জনতা প্রতিবাদ জানালে তাদের ও আক্রমণ করে মিজো দুষ্কৃতীরা। ইতিমধ্যেই চার জনকে গুরুতর আহত অবস্থায় শিলচর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
হাইলাকান্দির জেলা উপায়ুক্ত মেঘ নিধি দাহাল বরাক বুলেটিনকে বলেন, “আমাদের পুলিশ এবং অন্যান্য সরকারি আধিকারিকরা এলাকায় রয়েছেন, পরিস্থিতি অত্যন্ত জটিল এবং এলাকায় একেবারেই নেটওয়ার্ক নেই। ঘটনাটি আদৌ মিজোরামে হয়েছে না অসমে এটা নিয়েও দ্বিমত রয়েছে। তবে যেহেতু আমাদের অধিকারকে সেখানে রয়েছেন পুরো ঘটনার খবর আমরা আজকেই পাবো। কোনভাবেই যাতে আইন-শৃঙ্খলা নাগালের বাইরে চলে না যায় সেদিকে আমাদের নজর থাকবে।”
ডিআইজি দিলীপ কুমার দে বরাক বলেন, আমাদের পুলিশ বাহিনী এলাকায় রয়েছে এবং তাদের সহায়তা করছেন সুরক্ষা বাহিনীর জওয়ানরা। পরিস্থিতি এখনও আমাদের কাছে স্পষ্ট নয় তবে হামলা হয়েছে এটুকু বলতে পারি। যেটুকু খবর পেয়েছি, কয়েকটি বাড়িতে আগুন লাগানো হয়েছে এবং কিছু লোক আহত হয়েছেন। তবে ঠিক কতটাঘরে আগুন ধরানো হয়েছে এবং কিভাবে আসামের নাগরিকরা সীমান্ত এলাকায় আহত হয়েছেন এনিয়ে এখনও স্পষ্ট ধারণা হয়নি। সর্বাবস্থায় এলাকায় আইন-শৃঙ্খলা বজায় রাখা আমাদের মূল লক্ষ্য।”
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, মঙ্গলবার দিনের বেলা থেকেই কয়েকটি জায়গায় মিজো দুষ্কৃতীরা পরিস্থিতি অশান্ত করে তোলার চেষ্টা করেছে। শেষমেষ সন্ধ্যেবেলা কয়েকটি ঘরে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়েছে। অন্য একটি এলাকায় প্রায় ৭০টি পরিবারকে আটক করে রেখে দিয়েছে দুষ্কৃতীরা।
অতীতে কাছাড় জেলায় প্রায় তিন কিলোমিটার জমি এভাবেই দখল করেছে মিজোরামের দুষ্কৃতীরা। এবার অসমে নির্বাচনের ঠিক আগে এত বড় আক্রমণ অবশ্যই চিন্তার বিষয়। সম্প্রতি হাইলাকান্দি এবং কাছাড়ের জেলাশাসক ও পুলিশ সুপার মিজোরামের আধিকারিকের সঙ্গে বৈঠক করেছিলেন। তারপরেও মিজো বাহিনীর এধরনের আক্রমণ চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিচ্ছে আমাদের প্রশাসন কতটুকু অসহায়।
Comments are closed.