Also read in

খুব বড় বিপর্যয় হতে পারত, বিমানের যাত্রীরা তার কানাকড়িও বুঝতে পারেনি, তাই সবাই নিরুদ্বেগ ছিল: বিমান যাত্রী ডঃ অমলেন্দু ভট্টাচার্য

ক্যাপ্টেন সিদ্ধার্থ ঘোষ যখন ১৪০জন যাত্রী সহ বিমান কর্মীদের প্রাণ বাঁচাতে মরিয়া, তখন বিমানের ভেতর যাত্রীদের মধ্যে না ছিল কোনও আলোড়ন, না ছিল কোনও উদ্বেগ। কারণ ঘটনাটা কতটা ভয়ংকর কিংবা বিধ্বংসী রূপ নিতে পারত সে বোধ জাগ্রত হওয়ার মত বিমানের ভেতরে কোনও অস্বাভাবিক পরিবেশের সৃষ্টি হয়নি। ‘প্লেনটা যখন টেক অফ করছিল তখন একটা অস্বাভাবিক শব্দ হয়।তবে এতটা গুরুত্ব দিইনি। হয়ত কোন কারণে এমনটা হচ্ছে। অল্প পরে পোড়া একটা গন্ধ বেরোয়। অনেক বার প্লেনে চড়লেও এধরনের গন্ধ কোনদিন পাইনি। তাই একটু খটকা লাগছিল।ভেতরে ভেতরে একটা চাপা উত্তেজনা কাজ করছিল। নিজের মনের দ্বন্দ্ব নিয়ে ভাবার আগেই খুব শান্ত ভাবে ঘোষণার সুর ভেসে এল, “যান্ত্রিক গোলযোগের জন্য আমরা কুম্ভির গ্রাম বিমানবন্দরে ফিরে যাচ্ছি।” ঐ দিনের অভিজ্ঞতার কথা এভাবেই জানালেন এয়ার ইন্ডিয়ার ফ্লাইট AI754 য়ে শিলচর থেকে কলকাতা যেতে চাওয়া যাত্রী তথা বরাক উপত্যকার বিশিষ্ট লোক সাহিত্যিক ডঃ অমলেন্দু ভট্টাচার্য।

বিমানে 20 C সিটে বসা অমলেন্দু ভট্টাচার্য আরও জানালেন, বিষয়টি নিয়ে যাত্রীদের মধ্যে তেমন কিছু উদ্বেগ কিংবা অস্থিরতা ছিল না।বিমানটি থেমে যাওয়ার পর সিটটা বিমানের মাঝামাঝি জায়গায় থাকার জন্য বিমান থেকে নামতে একটু সময় লেগেছে। তাই নিচে নেমে অস্বাভাবিক কিছু চোখে পড়েনি। শুধু এক জায়গায় অনেকজন যাত্রীরা জড়ো হয়ে থাকতে দেখা গেছে, জানালেন ডঃ ভট্টাচার্য।

‘বিমানটি তড়িঘড়ি করে কুম্ভির গ্রাম বিমানবন্দরে আবার ফিরে আসায় আমরা বুঝতে পারছিলাম এটা একটা ইমার্জেন্সি ল্যান্ডিং। এমনকি বিমানটি যখন ল্যান্ড করে তখনও বিশেষ কোনো ঝাঁকুনি ছিলনা। সাধারণত বিমান ল্যান্ড করার সময় রানওয়েতে অনেকটাই এগিয়ে যায়, তবে এই ল্যান্ডিংয়ে মনে হচ্ছিল যেন গতিটাকে নিয়ন্ত্রণ করে থামিয়ে দেওয়া হয়েছে।’

‘বিমান থেকে নামার পরও আমরা প্রথমে বুঝতে পারিনি এই উড়ান বাতিল করা হয়েছে। আমাদের একটা জায়গায় বসিয়ে দেওয়া হয়। দশ মিনিট পর আমাদেরকে বেরোনোর কথা বলা হয়। ‘এরাইভিং লাউঞ্জ’য়ে সবাইকে বসার জন্য চেয়ারের ব্যবস্থা করা হয়, সেই সঙ্গে খাওয়ার জল দেওয়া হয় সবাইকে। আরো কুড়ি পঁচিশ মিনিট পর ওরা আমাদের মালপত্র নিয়ে আসে। তখনই আমরা বুঝতে পারি যে বিমানটি পুরোপুরি বাতিল করা হয়েছে।’

‘যাত্রীরা বিশেষ কিছু বুঝতে পারেনি তাই হয়তো ওদের মধ্যে ততটা উদ্বেগ-আতঙ্ক ছিল না। তবে এটা বলতে হচ্ছে, বিমানটি কুম্ভীর গ্রামে ফেরত নিয়ে এসে খুব বুদ্ধিমানের কাজ করা হয়েছে। নতুবা কলকাতা অভিমুখে এগিয়ে গেলে বড় বিপর্যয় হতে পারত। তখন যদিও আমরা বিমানের যাত্রীরা কিছুই বুঝতে পারিনি, কিন্তু এই মুহূর্তে পুরো ব্যাপারটা চিন্তা করতে গিয়ে বুক কেঁপে উঠছে।’ ডঃ অমলেন্দু ভট্টাচার্য এভাবেই তার শেষ মন্তব্য করলেন।

Comments are closed.

error: Content is protected !!