Also read in

সরকারি কার্যালয়ে দুর্নীতি রুখতে ব্যর্থ বিজেপি সরকার, ১২ ঘণ্টা অনশন প্রহরী'র

 

‘দেবো না-নেবো না’ ক্যাম্পেইন চালু করে ফলাও করে দুর্নীতির বিরুদ্ধে আওয়াজ তুললেন সর্বানন্দ সোনোয়াল। ক্যাম্পেইনের প্রচারে কোটি কোটি টাকা খরচ হয়েছে, অথচ সরকারি কার্যালয়গুলোতে দেওয়া-নেওয়া ছাড়া কোনও কাজ আজও হয় না, এমনটাই অভিযোগ সামাজিক সংস্থা ‘প্রহরী’র সদস্যদের।

 

দুর্নীতির বিরুদ্ধে আওয়াজ তুলতে কিছুদিন আগে প্রহরী নামের একটি সংগঠন বানিয়েছিলেন শহরের একদল সচেতন ব্যক্তি। সোমবার তারা সরকারি কার্যালয়গুলোর দুর্নীতির বিরুদ্ধে ১২ ঘন্টা অনশন পালন করলেন। তারপর জেলাশাসকের মাধ্যমে মুখ্যমন্ত্রী সর্বানন্দ সোনোয়ালের কাছে চিঠি পাঠিয়ে নালিশ জানালেন।

 

সংগঠনের সদস্যরা এদিন সকালে ক্ষুদিরাম মূর্তির সামনে অনশন শুরু করেন। তাদের কথা হচ্ছে, বিজেপির সরকার ‘দেবো না-নেবো না’ ক্যাম্পেইনের প্রচারে কোটি কোটি টাকা খরচ করছে, অথচ সরকারি কার্যালয়গুলোতে দেওয়া-নেওয়া ছাড়া কোনও কাজ আজও হয় না। কাছাড়ের নির্বাচন আধিকারিক কার্যালয়ের কর্মচারি অতসী তালুকদারের বিরুদ্ধেও দুর্নীতির প্রমাণ পাওয়া গেছে। তবুও এখনো তার কোনো বড় শাস্তির ব্যবস্থা করা হয়নি, ফলে বিভাগে একই ভাবে চলছে আর্থিক লেনদেনের ধারাটি। আগে যে কাজটি টেবিলের তলা দিয়ে ১০০ টাকা দিলে হয়ে যেত এখন ৫০০ টাকা না দিলে হয় না, পরিবর্তন শুধু এটুকুই হয়েছে। আমাদের জেলায় শাসক দলের ছয়জন বিধায়ক রয়েছেন, তারা এসব ব্যাপারে নীরব। আমরা বিভিন্ন তথ্য জানতে আরটিআই করলেও এর সরাসরি উত্তর আসেনা, ঘুরিয়ে উত্তর দেওয়া হয়। বর্তমান বনমন্ত্রী পরিমল শুক্লবৈদ্য তাদের সরকার আসার আগে একসময় ধর্নায় বসে বলেছিলেন সরকারি আধিকারিকরা চোর। তারা এই চোরদের শায়েস্তা করবেন কথা দিয়ে সরকার গড়লেন অথচ সরে রাজত্ব যেখানে ছিল সেখানেই আছে। আমরা সাধারন মানুষ হিসেবে বারবার এর কাছে নয়, তার কাছে ঠকেই যাবো, আর নির্বাচনের আগে আমাদের উদ্দেশ্যে টোপ ফেলা হবে, এই ধারা কতদিন চলবে? প্রশ্ন তোলেন সদস্যরা।

 

 

প্রধানমন্ত্রীর নরেন্দ্র মোদির সবথেকে জনপ্রিয় স্লোগান হচ্ছে স্বচ্ছ ভারত, এই স্বচ্ছ ভারত দুর্নীতিমুক্ত নয়। স্বচ্ছ ভারতের নামে কাড়ি কাড়ি টাকা আসে অথচ শহরে স্বচ্ছতার দেখা মেলে না। এ বিষয়গুলো একটু ঘাঁটলেই বুঝা যাবে টাকাগুলো দুর্নীতিবাজদের হাতে চলে যাচ্ছে। আমরা আজ এখানে জড়ো হয়েছি এবং দুর্নীতির বিরুদ্ধে অনশন করছি। এতে কতটুকু পরিবর্তন আসবে আমরা বলতে পারছি না তবে কোন একটা জায়গা থেকে আওয়াজ তো তুলতেই হবে। আজ পাঁচ জন মিলে আওয়াজ তুলতে পারলে হয়তো ভবিষ্যতে ৫০০ জন আমাদের পাশে দাঁড়াবে। কারণ সরকারি কার্যালয়ে এসে বিভিন্ন হেনস্থার মুখোমুখি হয়েছেন এমন মানুষের সংখ্যা অনেক বেশি বলে তারা উল্লেখ করেন।

 

তারা বলেন,কাছাড় জেলা সিন্ডিকেট রাজদের জন্য প্রসিদ্ধ হয়ে পড়েছে, কয়লা সিন্ডিকেট, সুপারি সিন্ডিকেট, সাড়ের সিন্ডিকেট, নাম গুলো কেমন লোভনীয়,  প্রচার মাধ্যমে খুব প্রশিদ্ধ। তবে ধারনা হতে পারে, এগুলোর মাধ্যমে আমাদের কত বড় ক্ষতি হচ্ছে এটা সাধারন মানুষ হয়ত বুঝেন না।  এবার থেকে প্রত্যেক বিষয়ে আমরা আওয়াজ তুলব, তাদের চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দেব, সাধারণ মানুষ সবটাই বুঝেন এবং প্রয়োজনে আপনাদের বিরুদ্ধে দাঁড়াতেও জানেন। জেলায় যতগুলো সরকারি কার্যালয় আছে এর দায়িত্ব জেলা শাসকের। যদি ভালো করে খোঁজ নেওয়া যায়, কোন সরকারি কার্যালয় দুর্নীতিমুক্ত নয়। তাই আমরা কাছাড়ের জেলাশাসকের অপসারণ দাবি করছি।

 

দিনভর ক্ষুদিরাম মূর্তির সামনে ধর্না প্রদর্শনের পর বিকেলে তারা জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে পৌঁছে স্মারক পত্র প্রদান করেন। সংস্থার পক্ষ থেকে সুজিত চন্দ, হারান দে, গীতা পান্ডে, মনোজ কান্তি দে পুরকায়স্থ, সুজিত দেবনাথ, শশাঙ্ক দেব চৌধুরী, অরুণ কুমার নাথ সহ অন্যান্যরা এদিন অনশনে যোগ দেন।

Comments are closed.