Also read in

এন আর সি, নাগরিকত্ব ও আসাম

 

যে কোন শুভবুদ্ধি সম্পন্ন মানুষ এন আর সি’র বিরোধিতা করবে না। এন আর সি হোক সকল ভারতবাসী চায় এবং হওয়া উচিত। ভারতের প্রতিটি রাজ্যে ” ডিজিটাল ” প্রযুক্তিকে কাজে লাগিয়ে এন আর সি বাস্তবায়িত করা হোক। যে কোনও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ছাত্র ছাত্রীদের বা অফিস আদালতে কর্মচারিদের যেমন তালিকা থাকে, পরিচয় পত্র থাকে তেমন দেশের নাগরিকদের তালিকা থাকা চাই। আধার কার্ড, প্যান কার্ড, ভোটার পরিচয় পত্রের মত একাধিক পরিচয় পত্র না থাকাই বাঞ্ছনীয়, তার পরিবর্তে একটা কার্ডে সব কিছু ধরা থাকবে ” চিপস” এর ভিতর যা ডিকোড করে বিভিন্ন কাজ বিভিন্ন সময়ে করা যাবে।

 

কিন্তু বাস্তবে এন আর সি এক রাজনৈতিক কর্মসূচি হয়েছে। আর, একবার বলা হচ্ছে ত্রিপুরাতে হবে, একবার বলা হচ্ছে পশ্চিমবঙ্গে হবে, এই হুমকির মধ্যে জুজুর ভয় দেখানো হচ্ছে। কেউ কেন দাবি তুলছে না সমগ্র দেশে করা হবে! ভুলে গেলে চলবে না ভারত আমেরিকার মত যুক্তরাষ্ট্রীয় দেশ নয় যে ভিন্ন ভিন্ন রাজ্যের জন্য ভিন্ন ভিন্ন নাগরিকত্ব আইন থাকবে। সংবিধান প্রদত্ত একই আইনের ভিত্তিতে সমগ্র দেশে এন আর সি হোক এটা সময়ের দাবি!একটা কথা তুলে ধরা হচ্ছে যে সব বাংলাদেশি আসামে এসে যাচ্ছে, বা এখন বলা হচ্ছে ত্রিপুরা ও পশ্চিমবঙ্গের কথা। কেন বাপু বাংলাদেশিদের এত ভয়? ভারতের সীমান্ত রক্ষী আছে, আছে কাঁটাতার। তারপরে বাংলাদেশিরা কোন গুহা পথে আসে? চিন, মায়ানমার, নেপাল ভুটান এমনকি পাকিস্থানের ক্ষেত্রে এই কথা উঠে না। বাংলাদেশিরা কি পবন পুত্র হয়ে গেল সব যে আটকানো যাচ্ছে না। এতে নিজেদের দুর্বলতা প্রকাশ পায়।

 

এন আর সি নিয়ে হয়রানির অভিযোগ পাওয়া যাচ্ছে, নথি বিভ্রাটে অনেকেই আতঙ্কিত। মানবাধিকারের ঘোষিত নীতি ও সংবিদান প্রদত্ত আইনের আওতায় এন আর সি কে বিচার করতে হবে। কোন ব্যক্তির মস্তিষ্ক প্রসূত নিয়ম দিয়ে নয়। এন আর সি খসড়া অনুযায়ী ঘোষিত মানুষ কিন্তু মানব সম্পদ এরা উইপোকা নয় এদের দিয়ে পতিত জমি আবাদ করা যাবে, শিল্পে জোয়ার আনা যাবে, শিক্ষায় অগ্রগতি ঘটানো যাবে। এমন নয় এই সব ঘোষিত বিদেশি আফ্রিকা বা ল্যাটিন আমেরিকা থেকে আসছে। এরা আমাদের স্বজাতি, দেশ ভাগের নষ্ট রাজনীতির শিকার।

আসামের সংস্কৃতি সমন্বয়ের সংস্কৃতি, দেওয়া নেওয়ার মাধ্যমে সংস্কৃতি বিকশিত হয়। এই সহজ কথা বুঝতে না পেরে আসামের জনগণ উগ্র প্রাদেশিকতাবাদের শিকার হচ্ছেন। একদল ধর্মকে অন্যদল ভাষাকে বিভেদের অস্ত্র করে রাজনীতি করে নিজের পকেট ভরাচ্ছে আর শঙ্করদেবের ধর্ম সিক্ত মাটিতে শোণিতধারা বইয়ে দিচ্ছে।

 

সামাজিক সাংস্কৃতিক আন্দোলন উন্মত্ততার বিপ্রতীপে মানবতাকে উর্দ্ধে তুলে ধরবে। অন্ধকারের পর আলো আসবেই। আমরা আলোর প্রতিক্ষায় আছি, থাকব। “মানুষের মৃত্যু হলেও মানব থেকে যায়”

Comments are closed.