Also read in

সক্রিয় দুষ্কৃতীরা! ভর-সন্ধ্যায় দরজা ভেঙ্গে রাধামাধব রোডে লুট দুই লক্ষাধিক টাকা-সোনা

কিছুদিন আগে শহরে একের পর এক ছিনতাইয়ের ডাকাতির ঘটনায় জনরোষের ফলে নড়েচড়ে বসেছিল পুলিশ বিভাগ। তাদের তৎপরতা দেখে দুষ্কৃতীরা কিছু সময়ের জন্য গা-ঢাকা দিলেও আবার সক্রিয় হয়েছে তারা। বুধবার সন্ধ্যাবেলায় শিলচর শহরের রাধামাধব রোড এলাকা থেকে দরজা ভেঙ্গে সোয়া দুইলক্ষ টাকা, সোনা-গয়না সহ অনেক মূল্যবান সম্পত্তি নিয়ে যায় চোরের দল। শিলচরের সাংসদ রাজদীপ রায়ের বাড়ির থেকে প্রায় একশো মিটার দূরত্বে ঘটনাটি ঘটেছে। বাড়ির মালকিন পারিবারিক কাজে ঘর থেকে বেরোনোর কিছুক্ষণের মধ্যেই দুষ্কৃতীরা দরজা ভেঙে টাকা সহ মূল্যবান জিনিসপত্র নিয়ে গেছে। এক ঘন্টা থেকে কম সময় ঘর খালি ছিলো, তবু খুব সাবধানে ঘরে ঢুকে রান্নাঘরের দা ব্যবহার করে আলমারি ভেঙ্গে জিনিসপত্র নিয়ে গেছে দুষ্কৃতীরা। ঘটনার ধরনের সঙ্গে সামঞ্জস্য রয়েছে অতীতের কিছু চুরির ঘটনার। অর্থাৎ দুষ্কৃতির দল আবার তাদের পরিকল্পনা বানিয়ে সক্রিয় হওয়ার চেষ্টা করছে।

রাধামাধব রোডের রানু পাল চৌধুরীর বাড়িতে ভাড়া থাকেন বিশ্বজিৎ পাল এবং তার স্ত্রী রুপা পাল। বিশ্বজিৎ পাল ফাটক বাজারের ব্যবসায়ী, তাদের একমাত্র সন্তান স্কুলে পড়ে। সম্প্রতি কিছু পেমেন্ট দেওয়ার জন্য টাকা ঘরে রেখেছিলেন। তিনি সন্ধেবেলা দোকানেই ছিলেন। তার স্ত্রী রুপা পাল সোনাই রোডে এক অসুস্থ আত্মীয়কে দেখতে ছেলেকে সঙ্গে নিয়ে বেরিয়েছিলেন। বিকেল পাঁচটা নাগাদ তারা ঘরে তালা মেরে বেরিয়ে যান এবং সোয়া ছয়টা নাগাদ বাড়ি ফেরেন বিশ্বজিৎ পাল। তিনি জানতেন তার স্ত্রী দরজা বন্ধ করে গেছেন, কিন্তু বাড়ি ফিরে দেখেন দরজা খোলা। ভিতরে ঢুকতেই তার মাথায় হাত, ঘরের স্টিলের আলমারি ভেঙে দিয়েছে কেউ এবং পুরো ঘর লন্ডভন্ড। সঙ্গে সঙ্গেই স্ত্রীকে ফোন করেন এবং ফিরে এসে তিনি এটা দেখে হতবাক হন। তারা রাঙ্গিরখাড়ি থানায় ফোন করেন এবং পুলিশের দল সঙ্গে সঙ্গে এলাকায় ছুটে আসে। তারা হিসেব করে জানিয়েছেন সোয়া দুই লক্ষ টাকা ক্যাশ সহ প্রায় পাঁচলক্ষের ক্ষতি হয়েছে। এরমধ্যে রয়েছে অনেক দিনের পুরনো সোনা-গয়না এবং ঘরের প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র।

এলাকায় শিলচরের সাংসদ রাজদীপ রায়ের বাড়ি, অথচ তার পাশে সন্ধেবেলা ডাকাতের দল পরিকল্পিতভাবে এরকম ঘটনা ঘটাচ্ছে এবং পুলিশ কিছুই করতে পারছে না। এতে এলাকাবাসীরা ক্ষোভ ব্যক্ত করেছেন। তারা বলছেন, “এত জনবহুল এলাকায় সন্ধেবেলা একদল দুষ্কৃতী ঢুকে খুব সাবধানে এত বড় চুরি করছে অথচ আমাদের পুলিশ বাহিনী নিষ্ক্রিয়। যদি কাছাড় জেলার সাংসদের বাড়ির ১০০ মিটার দূরত্বে এমনটা হতে পারে, তাহলে জেলার মানুষ কতটুকু সুরক্ষিত এটা ভাবতে হবে।”

রাঙ্গিরখাড়ি থানার ইনচার্জ প্রণব ডেকা জানিয়েছেন, ঘটনার পর পুলিশের আধিকারিকরা সেখানে গেছেন এবং সব দিক তদন্ত করেছেন। এলাকায় একটি সিসিটিভি রয়েছে এবং তার ফুটেজ সংগ্রহ করে কিছু মানুষ দেখা গেছে। তবে তাদের এখনো শনাক্ত করা যায়নি। তদন্তে হয়তো অনেকেই ধরা পড়বেন। পাশাপাশি তিনি বলেন, ঘরে মূল্যবান সামগ্রী থাকলে আরেকটু সচেতন থাকতে হয়। এতগুলো টাকা ঘরে রেখে বাড়ির মালিক শুধুমাত্র দরজায় তালা দিয়ে ঘর একা ফেলে চলে গেছেন এতে দুষ্কৃতীরা সুযোগ পেয়েছে। জনসংখ্যার তুলনায় পুলিশের সংখ্যা কম তাই মানুষকে আরেকটু সচেতন হতে হবে।

Comments are closed.

error: Content is protected !!