এই অঞ্চলে ভাল প্রতিভা রয়েছে, তবে ফুটবলকে পার্টটাইম নয়, ফুল টাইম হিসেবে নিতে হবে : এন আর এল টেকনিক্যাল ডিরেক্টর ইকেন্দ্র
৩ মার্চ, শিলচরে সিলেকশন ট্রায়াল ক্যাম্প করতে পেরে দারুণ খুশি নুমলিগড় রিফাইনার অ্যাকাডেমির (এন আর এল) ইয়ুথ ডেভেলপমেন্ট হেড এবং এ এফ সি ‘এ’ লাইসেন্স কোচ এস ইকেন্দ্র সিংহ। আজ শিলচর ফুটবল অ্যাকাডেমিতে বসে এমনটাই জানালেন মণিপুরের এই ফুটবল প্রশাসক কাম কোচ তিনি জানান, অসমে প্রতিভার অভাব নেই। এই অঞ্চলেও অনেক প্রতিভা রয়েছে। দরকার শুধু একটা ভাল প্লাটফর্মের। আর এটাই নিয়ে এসেছে এন আর এল অ্যাকাডেমি। ইকেন্দ্র বাবু মনে করেন, ভারতীয় ফুটবলে বিরাট গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে নথইস্ট। আর এতে পিছিয়ে নেই অসম। জাতীয় ফুটবলে অসমও বড় অবদান রাখছে। নিজেদের আ্যাকাডেমির জন্য আজ শিলচরে সিলেকশন ট্রায়াল করেছে এন আর এল। আর এর ব্যবস্থাপনায় ছিল শিলচর ফুটবল অ্যাকাডেমি।এজন্যই ইকেন্দ্রের শিলচরে আসা। অরআগেও তিনি শহরে এসেছিলেন। তবে এবার এসেছেন বিশেষ ‘মিশনে। শিলচরের আগে অসমের আরও বিভিন্ন স্থানে এভাবে সিলেকশন ট্রায়াল ক্যাম্প করেছে এন আর এল।
বুধবার শিলচর স্পাের্টিং এর মাঠে মােট ১৪০জন একদিনের এই সিলেকশন ট্রায়ালে অংশ নেন। এ থেকে ১৬জন উঠতিকে নিজেদের অ্যাকাডেমির জন্য বেছে নিয়েছে এন আর এল। তবে ট্রায়ালে প্রায় ২০-২২জন এমনও ছিলেন যারা বয়সের কারচুপিতে ধরা পড়েছেন। জালি সার্টিফিটেক নিয়ে আসায় তারা এই প্রক্রিয়া থেকে বাদ পড়েন। বিষয়টা বড়ই দুর্ভাগ্যজনক বলে জানান শিলচর ফুটবল আকাডেমির ডেভেলপমেন্ট প্রোগামের সি ই ও সুবিমল ধর। তার মতে এত সুন্দর একটা প্লাটফর্মে এমনটা মােটেও কাম্য নয়। সচেনতার অভাবেই এটা হয়েছে। এই একটা নেতিবাচক দিকের কথা ছেড়ে দিলে ট্রায়ালের সবচেয়ে বড় ইতিবাচক দিকটা হচ্ছে, বরাক উপত্যকার বিভিন্ন দিক থেকে এতজনের অংশ নেওয়া।
ট্রায়াল ক্যাম্প করতে পেরে খুশি হলেও ইকেন্দ্র সিংহ এটাও জানিয়ে দেন, এভাবে পার্টটাইম ফুটবল খেলে হবে না। ফুটবলকে কেরিয়ার হিসেবে বেছে নিতে হবে। তার জন্য ফুটবলের প্রতি নিষ্ঠাবান হতে হবে। কঠিন পরিশ্রম করতে হবে। তিনি বলেন, ‘এখানে এরকম একটা সিলেকশন ট্রায়াল করতে পেরে ভাল লাপছে। তবে আমায় আরও ভাল লাগবে যখন এখান থেকে আরও ফুটবলার উঠে আসবে যারা একদিন জাতীয় শুরে খেলবে।’ এ এফ সি ‘এ’ লাইসেন্স কোচ বলেন, ‘ভারতীয় ফুটবলে নর্থইস্ট গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। আন্তর্জাতিক ফ্রেন্ডলির জন্য ভারতীয় ফুটবল দলের কোচ ইগর স্টিমিচ ২৫জনের স্কোয়াড ঘোষণা করেছেন। এতে কিন্তু নর্থইস্টের দশজন ফুটবলার রয়েছে। সাতজন মণিপুরের, দুজন মিজোরামের এবং একজন অসমের। এটা কম বড় কথা নয়।’
পড়শি রাজ্য হলেও ফুটবলে মণিপুর থেকে অনেকটাই পিছিয়ে অসম। মণিপুর তাে যেন এখন ফুটবলের কারখানা হয়ে গেছে। তবে অসম এখনও অনেকটাই পিছিয়ে। অথচ ইকেন্দ্র মনে করেন, অসমে কোনও কিছুরই অভব নেই। প্রতিভার দিক থেকে মণিপুরের সঙ্গে একই অবস্থানে রয়েছে। তাহলে কেন এতটা পিছিয়ে এই রাজ্য? বরাক বুলেটিন কে এরজবাবে এন আর এলের ইয়ুথ ডেভেলপমেন্ট হেড বলেন, দেখুন, আসল ব্যাপারটা হচ্ছে মণিপুরে ফুটবলকে পার্টটাইম খেলা হিসেবে দেখা হয় না। সেখানে ফুটবল মানেই একটা সংস্কৃতি। একটা পরস্পরা। মণিপুরের সঙ্গে দেশের বাকি রাজ্যগুলির এটাই পার্থক্য। মণিপুরে ফুটবলের সংস্কৃতি রয়েছে। তবে এটা রাতারাতি গড়ে উঠেনি। সময় লেগেছে। তাই বলছি, অসমেও সম্ভব। এজন্য ফুটবলের সংস্কৃতি গড়ে তুলতে হবে।’ এদিন শিলচরে যে ১৬জন উঠতির বাছাই করা হয়েছে তারা চলতি মাসেই এন আর এল অ্যাকাডেমিতে যােগ দেবেন। যদিও এর দিনক্ষণ এখনও চূড়ান্ত হয়নি। অ্যাকাডেমিতে সূযোগ পাওয়া খেলােয়াড়রা সবাই জুনিয়র স্তরের। অনূর্ধ্ব ১৩ এবং অনুর্ধ্ব ১৫ ক্যাটাগরির।
শিলচরের পর এবার আগামী ৫ মার্চ হাফলংয়ে এরকম আরো একটি সিলেকশন ট্রায়াল ক্যাম্প করবে এন আর এল।
Comments are closed.