রোজকান্দিতে পুকুরের জলে ডুবে মারা গেল একই পরিবারের তিন শিশু
ধলাই বিধানসভা সমষ্টির অন্তর্গত রোজকান্দি চা বাগান অঞ্চলে একই পরিবারের তিন শিশুর জলে ডুবে মৃত্যু হয়েছে। এই মর্মান্তিক দুর্ঘটনায় পরিবার এবং এলাকাবাসী শোকস্তব্ধ।
চাবাগান কর্মী সুনীল রবিদাস এবং তার স্ত্রী রুবিয়া রবিদাসের তিন সন্তান এলাকার এক পুকুরে স্নান করতে গিয়ে মারা গেছে, তবে ঘটনার সময়ে আশেপাশে অন্য কেউ না থাকায় কেউ জানতে পারেননি ঘটনাটি কি করে ঘটল। তাদের কন্যা তন্ডামনি রবিদাস (১৪) এবং দুই ছেলে অজয় রবিদাস (৮) ও বিকি রবিদাস (১২) একই সঙ্গে ডুবে মারা যাওয়ায় ঘটনা নিয়ে কিছুটা সন্দেহ ও দানা বাঁধছে।
পরিবার সূত্রে জানা গেছে, সুনীল রবিদাস এবং তার স্ত্রী রুবিয়া রবিদাস রবিবার দুপুরে কোনও একটা কাজে বাড়ির বাইরে ছিলেন। বিকেল তিনটে নাগাদ তারা বাড়ি ফেরেন এবং দেখেন তাদের সন্তানেরা ঘরে নেই । প্রথমে মনে হয় তারা হয়তো খেলাধুলার জন্য আশেপাশে কোথাও রয়েছে কিন্তু কিছুক্ষণ পরেই জানা যায় পাশেই একটি পুকুরে দুটি মৃতদেহ ভেসে উঠেছে। এলাকার অন্যান্য লোকেদের সঙ্গে সুনীল রবিদাস এবং তার স্ত্রীও সেখানে যান; গিয়ে দেখেন তাদের দুই সন্তানের দেহ জলে ভাসছে। সঙ্গে সঙ্গে অনেকেই ঝাঁপিয়ে পড়ে দুজনকে তুলে আনেন, তবে ততক্ষণে তাদের ধারণা হয় দুজনেই মারা গেছে। আরেকটু খোঁজাখুঁজির পর জলের নিচ থেকে তাদের তৃতীয় সন্তানের অচেতন দেহ উদ্ধার করা হয়। সঙ্গে সঙ্গে খবর দেওয়া হয় পুলিশের আধিকারিকদের এবং তারা এসে শিলচর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে তিন অচেতন দেহ নিয়ে যাওয়ার ব্যবস্থা করেন। সেখানে যাওয়ার পর ডাক্তাররা বলেন এরা অনেক আগেই মারা গেছে এবং মৃত্যুর প্রাথমিক কারণ হিসেবে জলে ডুবে যাওয়াই মনে করা হচ্ছে।
পুলিশের তরফে তিনটি মৃতদেহই শিলচর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ময়নাতদন্তের জন্য নিয়ে যাওয়া হয়। রবিবার বিকেলে কিছু গোলযোগের জন্য ময়নাতদন্ত প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়নি। সোমবার সকালে সেই প্রক্রিয়া সম্পন্ন হওয়ার পর তিন শিশুর মৃতদেহ পরিবারের হাতে তুলে দেওয়া হয়।
একই পরিবারের তিন শিশুর এভাবে অসাবধানতাবশত জলে ডুবে মারা যাওয়ায় পরিবারের লোক সহ এলাকার মানুষ একেবারেই শোকস্তব্ধ। তিন শিশুর মাতা-পিতার মানসিক অবস্থা ভয়াবহ হয়ে দাঁড়িয়েছে এবং তাদের সামাল দিতে পরিবারের লোকেরা চেষ্টা করছেন। এদিকে রোজকান্দি চা-বাগানের ম্যানেজার ঈশ্বর ভাই ওবাদিয়া এই ঘটনায় শোক প্রকাশ করেছেন এবং কঠিন সময়ে পরিবারের পাশে থাকার আশ্বাস দিয়েছেন। এছাড়া পরিবারকে সরকারি তরফে কিছু আর্থিক সাহায্য পাইয়ে দেওয়ার ব্যাপারে চেষ্টা করা হবে বলে জানিয়েছেন তিনি।
Comments are closed.