
'ফেবারিট' শিলচর স্পোর্টিংয়ের বিরুদ্ধে বাজিমাত টাউন ক্লাবের, দুরন্ত জয় দিয়ে বড় চমক লাল-হলুদের
রামানুজ গুপ্ত স্মৃতি প্রাইজমানি সুপার ডিভিশন ফুটবলে বড়োসড়ো চমক দিল টাউন ক্লাব। শুক্রবার তারা ৪-২ গোলে হারিয়েছে টুর্নামেন্টের অন্যতম ফেবারিট শিলচর স্পোর্টিং ক্লাব কে। দলবদলের দিন থেকেই এই স্পোর্টিং কে ফেবারিট বলছিলেন অধিকাংশ ফুটবলপ্রেমী। দলটাকে নিয়ে দারুণ একটা হাইপ তৈরি হয়েছিল স্থানীয় ফুটবল মহলে। তবে এদিন টাউন ক্লাবের দুরন্ত ফুটবলে কাৎ হয়ে গেল স্পোর্টিং। এই না হলো ফুটবল!
সত্যিকার অর্থে কোনোদিক থেকেই স্পোর্টিং কে ফেবারিট বলে মনে হয়নি। যা প্রত্যাশা ছিল, তার ধারেকাছেও পৌঁছতে পারেনি দলটা। এর প্রধান কারণ ছিল শৃঙ্খলার অভাব। গত কয়েকদিন থেকেই দলটা একসঙ্গে প্র্যাকটিস করছে। তারপরও তাদের খেলায় ছিল বোঝাপড়ার অভাব। এখানেই শেষ নয়, দলের মধ্যেও ছিল শৃঙ্খলার অভাব।
কোচ সুভাষ মন্ডলের এক সিদ্ধান্তের প্রকাশ্যে বিরোধিতা করেন স্পোর্টিং দলের একাংশ খেলোয়াড়। ম্যাচের বয়স তখন ৭৭ মিনিট। ডিফেন্ডার লালডিনসাংকে বদলি করে গাইজেন রংমাইকে মাঠে নামাতে চেয়েছিলেন’ স্পোর্টিং কোচ। সে অনুসারে চতুর্থ রেফারি হাতে বদলির বোর্ড নিয়ে সিগন্যালও দেন। পাশেই দাঁড়িয়ে ছিলেন মাঠে নামার অপেক্ষায় থাকা গাইজেন। কিন্তু সবাইকে অবাক করে দিয়ে স্পোর্টিং দলের কয়েকজন কোচের এই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ান। দু এক পা এগিয়ে যাবার পর লালডিনসাংকে হাত ধরে আটকে দেন স্পোর্টিংয়ের খেলোয়াড়। ফলে মাঠেই থেকে যান লালডিনসাং।
উল্টোদিকে, শুরু থেকে একেবারে শেষ পর্যন্ত একই টেম্পো ধরে খেলে টাউন ক্লাব। দু মিনিটে ডেইজি রংমাই এর পাস থেকে গোল করে লাল-হলুদদের ১-০ গোলে এগিয়ে দেন থাঙ্গা। শুরুতেই গোল খেয়ে সমতায় ফেরার জন্য মরিয়া হয়ে ওঠে স্পোর্টিং। ২৫ মিনিটে দ্বিতীয় গোল আদায় করে নেয় টাউন ক্লাব। দুরন্ত এক হেডারে গোল করেন বৃন্দা রিয়াং। স্কোর ২-০। দু গোলে পিছিয়ে পড়লেও স্পোর্টিং কিন্তু লড়াইয়ে ছিল। ৩১ ও ৩৩ মিনিটে দুটি সহজ সুযোগ মিস করে দলটা। এখানেই শেষ নয়, প্রথমার্ধে অন্তত তিনটি গোল করার মতো সহজ সুযোগ নষ্ট করে স্পোর্টিংয়ের ফরয়ার্ড লাইন।
২-০ গোলে এগিয়ে থাকায় দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতেই কিছুটা ডিফেন্সিভ হয়ে পড়ে টাউন ক্লাব। এটাই স্পোর্টিং কে লড়াইয়ে ফিরে আসার সুযোগ করে দেন। ৫৩ মিনিটে জিশোভা মারের লম্বা পাশ ধরে গোল করে দেন স্পোর্টিংয়ের জলেশ্বর মিশ্রা (১-২)। ম্যাচ এই প্রথম টাউন ক্লাব কে কিছুটা চাপে মনে হচ্ছিল। ৭২ মিনিটে গোল করে স্পোর্টিং কে (২-২) সমতায় ফেরান দিনদয়াল থাপা। দুটি গোল হজম করে টনক নড়ে টাউন ক্লাবের। ডিফেন্সিভ খোলস ছেড়ে বেরিয়ে আসা তারা। ডানদিক থেকে এক আক্রমণ গড়ে তুলে টাউন ক্লাব। খুবই কঠিন একটা কোণ থেকে স্পোর্টিংয়ের জাল কাঁপিয়ে দেন পাউসিন রংমাই (৩-২)। ৮৫ মিনিটে স্পোর্টিংয়ের কফিনে শেষ পেরেক ঠুকেন বৃন্দা রিয়াং।
Comments are closed.