Also read in

হাইলাকান্দিতে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে ফের ছাত্রের করুণ মৃত্যু

হাইলাকান্দির  ভজন্তিপুর প্রথম খণ্ড গ্রামে  গত সপ্তাহে  বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে  এক কিশোরের  অকাল  মৃত্যু, অলইছড়ায় বিদ্যুতের তার ছিঁড়ে এক  মহিলার মৃত্যুর  পর এবার   বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে আরেক স্কুল ছাত্রের মর্মান্তিক মৃত্যু হল।   দুর্ঘটনাটি সোমবার  আনুমানিক বিকেল তিনটায়  আলগাপুর  থানার অধীনস্থ  মোহনপুর তৃতীয় খণ্ড গ্রামে ।

নিহত এই স্কুল ছাত্র ছিল মোহনপুর পল্লী উন্নয়ন এল পি স্কুলের দ্বিতীয় শ্রেনীর  আশিক  আলি লস্কর (৭ )। মোহনপুর  গ্রামের হতদরিদ্র আবুল হোসেন লস্কর ও কুলসুমা বেগম লস্করের পুত্র । প্রত্যক্ষদর্শী এবং স্থানীয়দের প্রচেষ্টায়  ঘটনাস্থল থেকে  বিদ্যুৎস্পৃষ্ট স্কুল ছাত্রটিকে কোনক্রমে উদ্ধার করে প্রথমে মোহনপুর প্রাথমিক স্বাস্থ্য কেন্দ্রে এবং পরে হাইলাকান্দির এস কে রায় সিভিল হাসপাতালে নিয়ে গেলেও মৃত্যুর হাত  থেকে তাকে রক্ষা করা সম্ভব হয় নি । সিভিল হাসপাতালের চিকিৎসকরা হাসপাতালে পৌঁছার পূর্বেই ছাত্রটির মৃত্যু হয়ে গেছে বলে ঘোষণা করেন ।

তার এই অকাল মৃত্যুতে সমগ্র মোহনপুর  অঞ্চল জুড়ে শোকের ছায়া নেমে এসেছে। এই মর্মান্তিক  দূর্ঘটনার জন্য বিদ্যুৎ বিভাগের গাফিলতিকে দায়ী করেন মৃত আশিকের কাকা আনোয়ার হোসেন লস্কর, ভাই দিলুয়ার হোসেন লস্কর, পশ্চিম মোহনপুর জিপির প্রাক্তন সভাপতি নাসির উদ্দিন বড়ভূইয়া, ফারুক  আহমদ লস্কর, জাকির হোসেন বড়ভূইয়া সহ  এলাকাবাসীরা। তারা সবাই বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে  নিহত স্কুল ছাত্রের  পরিবারকে পাঁচ লক্ষ টাকা  ক্ষতিপূরণ দেওয়ার জোরালো  দাবি তুলেছেন।

এখানে উল্লেখ করা যেতে পারে, অনেক  দিন ধরে মোহনপুর তৃতীয় খণ্ড  গ্রামে বৈদ্যুতিক লাইন ছিল  অনেক পুরোনো।যেকোনো সময় বিপদ ঘটতে পারে এই অভিযোগ করে  বারবার হাইলাকান্দির  বিদ্যুৎ বিভাগকে অবগত করার পরও বিভাগের পক্ষ থেকে কোন পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি বলে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হওয়া স্কুল ছাত্রের মা-বাবা, কাকা, ভাই, প্রাক্তন পঞ্চায়েত প্রতিনিধি সহ গ্রামবাসীরা অভিযোগ করেন।

ঘটনার বিবরনে  জানা গেছে, প্রতিদিনের মতো সোমবার স্কুল থেকে বাড়ি ফিরছিল আশিক। তার আগেই  বাড়ির রাস্তায় বিদ্যুতের লাইন ছিঁড়ে মাটিতে পড়েছিল । কিন্তু  অবুঝ স্কুল ছাত্রটি  যাওয়ার সময় অগোচরে মাটিতে ছিঁড়ে পড়ে থাকা বিদ্যুতের এল টি কন্ডাকটর লাইনের সংস্পর্শে চলে আসে । তখন সে মাটিতে লুটিয়ে পড়েছিল। তার মা কুলসুমা বেগম লস্কর বিষয়টি প্রথমেই লক্ষ্য করেন। মা কুলসুমা বেগম তাকে উদ্ধারের জন্য হাল্লা-চিৎকার শুরু করেন ।চিৎকার শুনে কাকা আনোয়ার হোসেন লস্কর সহ অন্যান্য  প্রতিবেশীরা ছুটে আসেন। তারা অনেক চেষ্টা করে বিদ্যুতের সংযোগ বিছিন্ন করলেও ততক্ষণে ঘটনাস্থলেই অচেতন হয়ে পড়ে ছাত্র আশিকের দেহ ।  মর্মান্তিক এঘটনার খবর ছড়িয়ে পড়লে ঘটনাস্থলে জড়ো হতে থাকেন গ্রামের মানুষ সহ  অন্যান্যরা । সঙ্গে সঙ্গেই আশিক আলিকে হাসপাতালে নিয়ে গেলেও শেষ রক্ষা করা সম্ভব হয়নি।

Comments are closed.