একই ঘরে মা-ছেলের মৃতদেহ; বিছানায় বৃদ্ধা মা, পাশে ঝুলন্ত ছেলে, শোকের ছায়া তারাপুর এলাকায়
শিলচরের বৃহত্তর তারাপুর এলাকার শিববাড়ি রোড তারকেশ্বর লেনের এক বাড়িতে একই ঘরের ভেতর থেকে রোববার উদ্ধার হল বৃদ্ধা মা ও ছেলের মৃতদেহ। বছর সত্তরের বৃদ্ধা মা প্রতিভা রানী দাসের মৃতদেহ শায়িত ছিল বিছানায়, পাশেই সিলিং ফ্যানে ঝুলছিল ছেলে সাগর রঞ্জন দাসের (৪৭) মৃতদেহ। মৃত সাগর রঞ্জন দাসের পরিবার তারকেশ্বর লেনের অমিত ওরফে কাবুল বর্ধনের বাড়িতে ভাড়া থাকতেন।
সাগর দাসের স্ত্রী ছবি রানী দাস সংবাদ মাধ্যমকে জানিয়েছেন, নবম শ্রেণীতে পাঠরতা মেয়ে থাকে তার (ছবিরানীর) বাবার বাড়িতে। সাগরবাবু আগে অটো চালাতেন। কিছুদিন ধরে অটো বিকল হয়ে পড়ায় তিনি ছিলেন প্রায় বেকার। এসবের মাঝে বাড়িভাড়া বকেয়া পড়ে যায় বেশ কয়েক মাসের। বাড়ির মালিক ঘর ছেড়ে দেওয়ার জন্য চাপ সৃষ্টি করছিলেন কিছুদিন ধরে। ছবি রানী সেলাইয়ের কাজ করে পরিবার চালাবার চেষ্টা করছিলেন। ইতিমধ্যে, বাড়ির মালিক ঘর ছেড়ে দেবার জন্য চাপ সৃষ্টি করায় তিনি তার ভাইয়ের বাড়িতে উঠে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেন, রবিবারই ঘর ছেড়ে দেওয়ার কথা ছিল।
সেই ব্যাপারে সবকিছু ঠিকঠাক করতে রোববার সকাল ৮টা নাগাদ যান বাবার বাড়িতে। যাবার আগে স্বামী এবং শাশুড়িকে চা দিয়ে যান, তখন দুজন স্বাভাবিক অবস্থায়ই ছিলেন। বাবার বাড়ি গিয়ে কথা বলে তিনি ফিরে আসেন সকাল ৯ টা ৩০ মিনিট নাগাদ। বাড়ি ফিরে দরজা খুলতেই চোখে পড়ে সেই ভয়ানক দৃশ্য। বিছানায় শায়িত বৃদ্ধা শাশুড়ি এবং পাশে সিলিং ফ্যানে গলায় ফাঁস লাগানো স্বামীর মৃতদেহ।
এই ঘটনার কথা ছড়িয়ে পড়ার পর এলাকাজুড়ে সৃষ্টি হয় তীব্র চাঞ্চল্যের। খবর পেয়ে হাজির হয় পুলিশও। প্রাথমিক তদন্তের পর মৃতদেহ দুটি উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয় শিলচর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে। পুলিশের তদন্তকারী অফিসার বলেন, এই মুহূর্তে ঘটনা নিয়ে কোন মন্তব্য করা সমীচীন নয়। বর্তমানে ময়নাতদন্তের রিপোর্টের জন্য অপেক্ষা করছেন তারা। রিপোর্ট এলে এই ব্যাপারে বিস্তারিত জানা যাবে।
বাড়ির মালিক অমিত বর্ধনের পরিবারের লোকেরা জানিয়েছেন, সাগর বাবু কয়েকমাস ভাড়া দিতে না পারায় তারা ঘর ছেড়ে দিতে বলেছিলেন ঠিকই। তবে সঙ্গে এও বলেছিলেন ঘর ছেড়ে দিলে বকেয়া ভাড়া মেটানোর আর প্রয়োজন নেই। ঠিক কিভাবে ঘটনাটা ঘটেছে এনিয়ে কিছুই জানেন না তারা।
Comments are closed.