
অযোধ্যায় প্রস্তাবিত রাম মন্দিরে রাম কথা বর্ণিত হবে শিলচরের দুই শিল্পীর হাত ধরে
অযোধ্যার সঙ্গে শিলচরের একটা সম্পর্ক গড়ে উঠেছে নিবিড় ভাবে। কথাটা শুনতে হয়তোবা একটু অদ্ভুত লাগছে। এই সম্পর্ক গড়ে তুলেছেন শিলচর ঘনিয়ালা রামকৃষ্ণ পল্লীর নারায়ণ চন্দ্র মন্ডল এবং রঞ্জিত মন্ডল।অযোধ্যায় রাম কথা কুঞ্জ নির্মাণের দায়িত্ব পেয়েছেন শিলচরের এই দুই শিল্পী। প্রস্তাবিত রাম মন্দির নির্মাণ স্থলের শোভা বর্ধনের উদ্দেশ্যে কাজ করছেন নারায়ন মন্ডল এবং রঞ্জিত মন্ডল। তারা সর্ব মোট দু’শোরও বেশি মূর্তি গড়ে তুলছেন এজন্য।
ছোটবেলা থেকেই রঞ্জিত মন্ডলের মূর্তি তৈরি করার শখ ছিল। গুয়াহাটিতে একটি অনুষ্ঠানে ব্যাসদেবের মূর্তি তৈরি করে তিনি বিশ্ব হিন্দু পরিষদের নেক নজরে আসেন।পরবর্তীতে দিল্লিতে অশোক সিংঘলের হাত ধরে তিনি অযোধ্যায় এই কাজে নিয়োজিত হন। ছয় বছর আগে ২০১৩ সালে এই মূর্তি নির্মাণের কাজ শুরু করেন পিতা নারায়ন চন্দ্র মন্ডল এবং পুত্র রঞ্জিত মন্ডল। রামের জন্মের জন্য যে পুত্রাষ্ঠি যঞ্জ করা হয়েছিল, সেই সেই মূর্তিটি হচ্ছে রাম কাহিনীর প্রথম মূর্তি। এরপর জন্মের পর রাম, লক্ষণ, ভরত শত্রুঘ্নের শিশু অবস্থার মূর্তি থেকে শুরু করে একে একে রাম কাহিনী বর্ণনার যাবতীয় মূর্তিগুলো পরপর সাজানো থাকবে। যদিও কাজটি কবে পর্যন্ত শেষ করতে হবে তার কোনো নির্দিষ্ট সময়সীমা বেঁধে দেওয়া হয়নি। তবে এখন পর্যন্ত এই কাহিনীর চল্লিশটি প্রসঙ্গ সম্পন্ন করা সম্ভব হয়েছে। কাজ সম্পূর্ণ করতে আরো ষাটটি প্রসঙ্গ বাকি রয়েছে।এক একটি প্রসঙ্গ কথা শেষ করতে প্রায় দুই থেকে তিন মাস সময়ের প্রয়োজন হয়।
দুজন মিলে কাজ করছেন বলে সময়টা বেশি লাগছে। এখন যেহেতু রাম মন্দির নির্মাণে সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ এসে গেছে তখন কাজটা যাতে তাড়াতাড়ি সম্পন্ন করা সম্ভব হয় সে উদ্দেশ্যে অন্যান্য আরো শিল্পীদেরও তাদের সঙ্গে কাজে যোগ দেওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। মূর্তিগুলো আকারে অনেক বড়। এখন পর্যন্ত নির্মিত মূর্তিগুলো ৩ থেকে সাড়ে ৩ ফুট উঁচু রয়েছে। তবে সাড়ে পাঁচ থেকে ছয় ফুট পর্যন্ত উঁচু মূর্তি তৈরি করা হবে।
প্রস্তাবিত রাম মন্দিরে এই মূর্তিগুলো রাখা হবে। এই মূর্তিগুলো খোদাই করতেই এখন ব্যস্ত রয়েছেন শিলচরের এই দুজন শিল্পী।রামের জীবন কাহিনী বর্ণিত করবে এই মূর্তিগুলো, তাদের বানানো মূর্তির সাহায্যে সবার কাছে রামের জীবন কাহিনী ফুটে উঠবে শৈল্পিক চেতনায়। রামের জন্মের আগের ঘটনা থেকে শুরু করে এই মহাপুরুষের পুরো জীবন কাহিনী বর্ণিত হবে শিলচরের দুজন শিল্পীর হাত ধরে। এই কথাগুলো অবশ্যই মনে ধরার মতো। মন্দিরের নির্মাণে সামিল হতে পেরে স্বভাবতই বাবা ছেলে গর্ববোধ করছেন। রঞ্জিত মন্ডল মনে করেন, পূর্ব জন্মের কোন পুণ্যের ফলে তারা এ জন্মে এত বড় সুযোগ পেয়েছেন। তবে এটা নিশ্চিত, তাদের এই সুযোগ শিলচর তথা আসামের অনেকের কাছেই এক গৌরবের বিষয়।
Comments are closed.