ষষ্ঠ আসাম পুলিশ ব্যাটালিয়নের দুই পুলিশ কর্মী আটক; বিষয় বার্মিজ সুপারি
মিজোরামের ভাইরেংটিকে কাছাড়ের খুলিছড়ার সাথে সংযোগকারী রাস্তা দিয়ে বার্মিজ সুপারি পাচার চলছে বলে অভিযোগ করা হয়েছে। খুলিছড়ায় সিক্সথ্ এপি ব্যাটালিয়নের একটি ক্যাম্প রয়েছে যা দুই বছর আগে মিজোরামের সাথে সীমান্ত সংঘর্ষের পরে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। ক্যাম্পের ভেতর দিয়ে যাওয়া যানবাহন পুলিশেরা তল্লাশি করে।
গত রোববার ভাগা ও কাবুগঞ্জ থেকে বার্মিজ সুপারি বহনকারী দুটি মিনি ট্রাক ধলাই থানার পুলিশের হাতে ধরা পড়ে, উদ্ধার করা হয় বহু ব্যাগ বার্মিজ সুপারি। আটকের পর খুলিছড়া ক্যাম্প থেকে ৬ এপি ব্যাটালিয়নের দুই পুলিশ সদস্য সালেহ আহমেদ নামে এক সাধারণ নাগরিককে নিয়ে ধলাই থানায় পৌঁছান। তারা ধলাই পুলিশকে মিনি ট্রাক দুটি ছেড়ে দিতে বলে। ধলাইয়ের টহল পুলিশ তাদের যেতে দিতে অস্বীকার করলে ধলাই ওসিকে বিষয়টি অবহিত করা হয়। ধলাই ওসি পালংঘাট পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জের কাছে মিনি ট্রাক দুটি উদ্ধার করে ফাঁড়িতে নিয়ে যাওয়ার আবেদন জানান। সে অনুযায়ী মিনি ট্রাক দুটিকে পালংঘাট পুলিশ ফাঁড়িতে নিয়ে যাওয়া হয়। ৬ এপি ব্যাটালিয়নের দুই পুলিশ কর্মী এবং সিভিলিয়ান আবার পালংঘাট পুলিশ ফাঁড়িতে গিয়ে ইনচার্জকে ১০,০০০ টাকা ঘুষ দেওয়ার চেষ্টা করে দুটি মিনি ট্রাক ছেড়ে দেওয়ার জন্য অনুরোধ করেন। ইনচার্জ বিষয়টি ধলাই ওসিকে অবহিত করলে তিনি তাদের তিনজনকেই আটক করতে বলেন। ফলে তাদের তিনজনকেই রাতের জন্য আটক করা হয়।
পরদিন তিনজনকে ধলাই থানায় নিয়ে যাওয়া হয়। কাছাড়ের এসপি ও ৬ এপি ব্যাটালিয়নের কমান্ডেন্ট ধলাই থানায় পৌঁছে তাদের বক্তব্য গ্রহণ করেন। বিভাগীয় তদন্তের জন্য ৬ এপি ব্যাটালিয়নের দুই পুলিশ সদস্যকে কাছাড়ের এসপি কমান্ডেন্টের কাছে হস্তান্তর করেছেন। সালেহ আহমেদকে আটক করে পুলিশ হেফাজতে নেওয়া হয়েছে। অভিযোগ করা হয়েছে যে সালেহ আহমেদ একজন “পাসিং মাফিয়া” হিসাবে জড়িত ছিলেন যিনি বার্মিজ সুপারি পাচারকারী এবং পুলিশের সাথে মধ্যস্থতা করেছিলেন, তার বাড়ি আমড়াঘাটে। তার বক্তব্যের ভিত্তিতে পুলিশ জব্দকৃত বার্মিজ সুপারির মালিক তিনজনকে খুঁজছে। পলাতক তিন আসামি হলেন ইসলামাবাদ, ভাগা থেকে হিলাল উদ্দিন ও সাহারুল হোসেন; কাবুগঞ্জ থেকে সাপ্পন আহমেদ। ৬ এপি ব্যাটালিয়নের দুই পুলিশ সদস্যসহ এই তিনজন বার্মিজ সুপারি সিন্ডিকেটের সঙ্গে জড়িত বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। প্রতিটি ট্রাক থেকে তারা খালাসের জন্য ১০ হাজার থেকে ২০ হাজার টাকা আদায় করত।
আমাদের প্রতিবেদকের সাথে কথা বলতে গিয়ে, ষষ্ঠ এ পি ব্যাটালিয়নের কমান্ড্যান্ট বলেছেন, “ কাছাড়ের এসপি আমাদেরকে এই শৃঙ্খলাভঙ্গের কাজটি জানিয়েছেন এবং আমরা আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া শুরু করেছি। আমরা এখন পর্যন্ত যা সংগ্রহ করেছি তা হল যে দুজন পুলিশ কর্মী অভিযুক্ত চোরাকারবারিদের পক্ষে কথা বলতে পুলিশের কাছে গিয়েছিলেন যারা একই গ্রামের বাসিন্দা।”
কমান্ড্যান্ট যোগ করেছেন, “প্রাথমিক শাস্তি হিসাবে, তাদের উভয়কে তাদের বাড়ির অবস্থান থেকে দূরবর্তী দুটি পৃথক স্থানে স্থানান্তর করা হয়েছে। বিভাগ প্রোটোকল অনুযায়ী পরবর্তী ব্যবস্থা নেবে।”
Comments are closed.