
শুক্রবার বরদলৈ ট্রফির সেমিতে নামছে ইন্ডিয়া ক্লাব, নাগাল্যান্ড পুলিশের বিরুদ্ধে জয় নিয়ে আত্মবিশ্বাসী শিলচরের চ্যাম্পিয়নরা
৬৮ তম বরদলৈ ট্রফিতে দুরন্ত প্রদর্শনের সুবাদে সেমি ফাইনালে পৌঁছে গেছে শিলচরের ইন্ডিয়া ক্লাব। শুক্রবার শেষ চারের লড়াইয়ে তাদের প্রতিপক্ষ নাগাল্যান্ড পুলিশ। গ্রুপ স্তরের সবকটা ম্যাচ জাজেস ফিল্ডে খেলেছিল শিলচরের চ্যাম্পিয়নরা। তবে সেমিফাইনাল ম্যাচটি হবে গুয়াহাটির নেহেরু স্টেডিয়ামে।
সেমিফাইনাল ম্যাচের আগে বেশ চনমনে মেজাজে রয়েছে টুর্ণামেন্টে অপরাজিত থাকা ইন্ডিয়া ক্লাব। ৬৮ বছর পর বরদলৈ ট্রফিতে খেলতে গিয়েছিল শিলচরের শতাব্দীপ্রাচীন ক্লাবটি। শুরুতে তারা ছিল আন্ডারডগ। এ এস ই বি, গুয়াহাটি টাউন ক্লাব ও আই টি বিপির মতো দলের সঙ্গে একই গ্রুপে থাকায় টুর্নামেন্টের শুরুতে কেউই ইন্ডিয়া ক্লাবকে তেমন পাত্তা দেননি। তবে ডিফেন্ডিং চ্যাম্পিয়ন তথা রাজ্যের ফুটবলের পাওয়ার হাউস এ এস ই বির বিরুদ্ধে প্রথম ম্যাচেই সবাইকে চমকে দেয় শিলচরের চ্যাম্পিয়নরা। সে ছিল শুরু। সেদিন ইন্ডিয়া ক্লাব এমনই অ্যাটাকিং ব্র্যান্ডের ফুটবল খেলে যে বাধ্য হয়ে খেলার গতি কমাতে এ এস ই বিকে স্লো খেলতে হয়েছিল।
দ্বিতীয় ম্যাচে আই টি বিপির বিরুদ্ধে ও দুরন্ত ফুটবল উপহার দিয়ে জয় ছিনিয়ে নিয়েছিল ইন্ডিয়া ক্লাব। তবে এখন পর্যন্ত তাদের সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জের মুখে পড়তে হয়েছিল টাউন ক্লাবের বিরুদ্ধে। জাজেস ফিল্ডে কঠিন কন্ডিশনে ঘরোয়া দল টাউন ক্লাবের বিরুদ্ধে দু দুবার পিছিয়ে পড়েছিল ইন্ডিয়া ক্লাব। ঝড় বৃষ্টির ফলে মাঠে জল জমে গিয়েছিল। তা সত্ত্বেও দুরন্ত লড়াই উপহার দিয়ে ম্যাচ ড্র করে নেয় শিলচরের চ্যাম্পিয়নরা। যার ফলে তিন ম্যাচে ৭ পয়েন্ট নিয়ে শেষ চারের ছাড়পত্র আদায় করে নেয় তারা। এবার ইন্ডিয়া ক্লাবের জন্য অপেক্ষা করছে আরও বড় চ্যালেঞ্জ।
গ্রুপ সি থেকে চ্যাম্পিয়ন দল হিসেবে শেষ চারের টিকিট আদায় করেছে নাগাল্যান্ড পুলিশ। আসলে সিআইএসএফ ও নাগাল্যান্ড পুলিশের পয়েন্ট সমান ছিল। গোল পার্থক্য ও দু’দলের সমান ছিল। এমন অবস্থায় গ্রুপ থেকে কোন দল সেমিফাইনাল খেলবে, তা ঠিক করার জন্য টস করার সিদ্ধান্ত নেন আয়োজকরা। আর টসে ছিটকে যায় সিআইএসএফ।
ভিন্ন একটা ভেনুতে সি গ্রুপের সব ম্যাচ অনুষ্ঠিত হওয়ায় নাগাল্যান্ড পুলিশ সম্পর্কে ইন্ডিয়া ক্লাবের কাছে তেমন কোনো তথ্য নেই। একইভাবে ইন্ডিয়া ক্লাব সম্পর্কেও নাগাল্যান্ড পুলিশ কিছু জানেনা। কাজেই কালকের লড়াইটা হবে ওপেন। মাঠে নামার পরই দুই দলকে স্ট্রেটেজি তৈরি করতে হবে। খেলার সময় এর সঙ্গে পরিস্থিতি বুঝে স্ট্র্যাটেজি পরিবর্তন করতে হবে। ইন্ডিয়া ক্লাবের পক্ষে একটা অ্যাডভান্টেজ হচ্ছে গ্রুপ পর্বে তারা তিনটি শক্তিশালী দলের বিরুদ্ধে খেলেছিল। ফলে প্রতিটা ক্ষেত্রে তাদের কঠিন লড়াই করতে হয়েছে। সেই অভিজ্ঞতা এবার সেমিফাইনালে খুব কাজ দেবে।
সেমিফাইনাল ম্যাচ নিয়ে ইন্ডিয়া ক্লাব আত্মবিশ্বাসী। এমনটাই জানালেন দলের ম্যানেজার অর্ণব দত্ত। তিনি জানান, আজ সকালে নেহেরু স্টেডিয়ামে দল দু’ঘণ্টা প্র্যাকটিস করেছে। দলের সবাই ভালো মুডে রয়েছে। সবচেয়ে বড় কথা হচ্ছে, গ্রুপ পর্বে কঠিন লড়াইয়ের পর দলের প্রত্যেকেরই আত্মবিশ্বাস অনেকটাই বেড়ে গেছে। এবার দল আরো একধাপ এগিয়ে যেতে চায়।
টুর্নামেন্টের দ্বিতীয় সেমিফাইনালে দিল্লি পুলিশ খেলবে চিরাং এফ সির বিরুদ্ধে। দুটি সেমিফাইনালের আগে আজ চারটি দলের ম্যানেজার, ম্যাচ রেফারি এবং আয়োজকদের সঙ্গে এক বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। উল্লেখযোগ্য বিষয় হচ্ছে, এ এস ই বি, টাউন ক্লাব ও আসাম রেজিমেন্টাল সেন্টার এর মত শক্তিশালী দলগুলি টুর্নামেন্ট থেকে ছিটকে গেছে। ফলে এই মুহূর্তে শেষ চারে আসামের শুধু দুটি দল টিকে রয়েছে। চিরাং এফসি ও শিলচরের ইন্ডিয়া ক্লাব। আন্ডারডগ হিসেবে শুরু করলেও এই মুহূর্তে টুর্নামেন্টের অন্যতম ফেবারিট শিলচরের চ্যাম্পিয়নরা। এই ফেবারিটের ট্যাগ অর্জন করাই তো ইন্ডিয়া ক্লাবের জন্য এক বিরাট পাওনা। তবে এই মুহূর্তে এই ট্যাগ নিয়ে ভাবছে না কালি কঙ্কন আচার্যর ছেলেরা। তাদের ভাবনায় রয়েছে নাগাল্যান্ড পুলিশ। আপাতত ফোকাস সেদিকেই।
Comments are closed.