Also read in

শিলচর মেডিক্যাল কলেজের চারতলা থেকে লাফ যুবকের, বিষপান করে আত্মহত্যার প্রয়াসে অসুস্থ হওয়ায় ভর্তি করা হয়েছিল হাসপাতালে

শিলচর মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে এক ভয়ঙ্কর ঘটনায়, এক রোগী হাসপাতালের চতুর্থ তলার আইসিইউ ওয়ার্ড থেকে লাফ দিয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করেন গতকাল রাতে। হাইলাকান্দির মোহনপুর গ্রামের রোগী ২ দিন আগে নিজের বাড়িতে বিষ সেবন করায় হাসপাতালে ভর্তি করা হয় তাকে।

২৬শে ডিসেম্বর দক্ষিণ মোহনপুরের ২৮ বছর বয়সী হুসেন আহমেদ বড়ভূইয়াকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল কারণ তিনি আত্মহত্যার চেষ্টায় বিষ খেয়েছিলেন। এসএমসিএইচ-এ তাকে আইসিইউতে ভর্তি করা হয় এবং চিকিৎসার পর তিনি সুস্থ হন। শুক্রবারে সুস্থ হয়ে উঠায় তার পরিবারের সদস্যরা তাকে ছেড়ে দেওয়ার জন্য চিকিৎসকদের অনুরোধ করলে তারা তা প্রত্যাখ্যান করেন কারন হাইলাকান্দি পুলিশ তাকে ভর্তি করেছে । হোসেনের ভাইয়ের মতে, “যখন আমি ডাক্তারের কাছে তাকে সুস্থ থাকায় তাকে ছেড়ে দেওয়ার জন্য অনুরোধ করি, তারা আমাদের জানিয়েছিল যে হাইলাকান্দি পুলিশ তাদের ছাড়পত্র না দিলে তারা তাকে ছেড়ে দিতে পারবেন না। এটা শুনে আমাদের ভাই ভয় পেয়ে যায় এবং পালানোর চেষ্টা করে। আমি তখন তাকে বেঁধে রাখতে বলি কারণ যেকোন সময় অঘটন ঘটতে পারে। কিন্তু প্রহরা থাকা সত্ত্বেও শেষপর্যন্ত হাসপাতালের চতুর্থ তলা থেকে ঝাঁপ দিল সে।”

সাংবাদিকদের সাথে আলাপকালে আহত হুসেন আহমেদের বোন বলেন, “আমরা একটি সাধারণ পরিবারের সাধারণ মানুষ। দুই মাস আগে আমাদের মা মারা গেছেন এবং আমাদের পরিবার আমার ভাইকে অনেক বকাঝকা করেছিল, কারণ সে তার নামাজ বাদ দিত; সবসময় তার ফোন নিয়ে ব্যস্ত থাকত।”

“গত তিন দিন আগে সে হতাশা থেকে বিষ পান করেছিল। আমরা তা দেখে তাকে শিলচর মেডিক্যাল কলেজে নিয়ে যাই। চিকিৎসকরা বলেছিলেন যে তার মস্তিষ্কের ক্ষতি হয়েছে। আইসিইউতে তার চিকিৎসার পর তুলনামূলকভাবে স্থিতিশীল হয় সে।” বোন আরও যোগ করেন।

যেহেতু তারা আইসিইউতে আত্মীয়স্বজনদের প্রবেশের অনুমতি দেয় না, তাই বোন পরিচারকদের বলেছিলেন যে, “আমিও এই সেক্টরের একজন কর্মী, আমি আগেও এখানে কাজ করেছি। কিন্তু আমাকে ও অনুমতি দেওয়া হয়নি”।

রোগী আইসিইউ থেকে পালানোর চেষ্টা করলে হাসপাতাল প্রশাসন তাকে বাধা দেয় এবং আহত রোগীর পরিবারকে জানায়। ২৮ তারিখ রাতে কোনরকমে সে পালিয়ে হাসপাতালের ৪র্থ তলা থেকে লাফ দেয় এবং তার শরীরের বিভিন্ন স্থানে গুরুতর জখম হয়। হোসেন আহমেদের ভাই মিডিয়ার কাছে আরও উল্লেখ করেছিলেন যে, “তার দুর্ঘটনার পর যখন তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়, ডাক্তাররা আমাদের চিকিৎসার জন্য দামি ওষুধ কিনতে বলেন। আমরা গরিব মানুষ এবং আমাদের কাছে এত টাকা ও ছিল না।”

মেডিকেল কলেজে কীভাবে এই অবহেলার ঘটনা ঘটল তা রহস্য। যদিও রোগীকে বেঁধে বেঁধে রাখা হয়েছিল, তবে সে কীভাবে পালিয়ে গেল তা রহস্য। তার বিবৃতিতে বোন আরও বলেছিলেন, “আমরা যা চাই তা হ’ল হাসপাতালে রোগীদের সুরক্ষা, অন্য রোগীদের ক্ষেত্রে যেন এ রকম ঘটনা ঘটতে না পারে,” তিনি উপসংহারে বলেন।

Comments are closed.