উপত্যকার দ্বিতীয় বেসরকারি করোনা চিকিৎসা কেন্দ্র শুরু করল ভ্যালি হাসপাতাল
গতমাসে উপত্যকার প্রথম বেসরকারি করোনা চিকিৎসা পরিষেবা শুরু করেছিল গ্রীন হিলস হাসপাতাল। এতে ব্যাপক সাড়া মিলেছে এবং তাদের পথ অনুসরণ করে এবার ২০ শয্যার করোনা চিকিৎসা পরিষেবা শুরু করেছে মেহেরপুরের ভ্যালি হাসপাতাল।
বৃহস্পতিবার সকালে এর আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন সাংসদ রাজদীপ রায় এবং বিধায়ক রাজদীপ গোয়ালা। সঙ্গে হাসপাতালের পক্ষ থেকে চিকিৎসকরা ও যোগ দেন।
হাসপাতালের পক্ষ থেকে চিকিৎসক সুতপা ভট্টাচার্য জানিয়েছেন, ২০টি শয্যা বিশিষ্ট কোভিড চিকিৎসা কেন্দ্রে চারটি আইসিইউ থাকছে। এছাড়া রয়েছে একটি সিঙ্গেল কেবিন, দুটো ডাবল কেবিন, এগারটি জেনারেল শয্যা। জেনারেল রোগীর জন্য প্রতিদিন ছয় হাজার টাকা নেওয়া হবে, যার মধ্যে খাবারের খরচ ও অন্তর্ভুক্ত। যারা কেবিনে থাকবেন তাদের জন্য খাবারের খরচ নিয়ে আট হাজার টাকা এবং আইসিইউতে যেসব রোগীরা চিকিৎসাধীন থাকবেন তাদের জন্য প্রতিদিন দশ হাজার টাকা খরচ নির্ধারণ করা হয়েছে।
তিনি বলেন, “আমরা আইসিএমআর-এর অনুমতি নিয়েই এই কোভিড চিকিৎসাকেন্দ্র শুরু করেছি। এর আগে গ্রীন হিলস হাসপাতাল বেসরকারিভাবে চিকিৎসা পরিষেবাটি শুরু করেছিল। একসময় সরকারের পক্ষ থেকেও আমাদের বলা হয়েছে আমরা যাতে কোভিড পরীক্ষা এবং চিকিৎসার ব্যবস্থা গড়ে তুলি। আমরা ধীরে ধীরে হাসপাতলে পরিষেবাটি চালু করার জন্য পরিবেশ গড়ে তুলেছি। এটি চালু করার ফলে যাতে অন্যান্য পরিষেবা স্তব্ধ না হয় এটাও খেয়াল রাখতে হবে। এই ভারসাম্য বজায় রাখার জন্যই আমাদের শুরু করতে কিছুটা দেরি হয়েছে। গ্রীন হিলস হাসপাতালের কর্ণধার রুদ্র নারায়ণ গুপ্ত খুব সুন্দরভাবে পরিষেবাটি এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন। এতেও আমরা কিছুটা সাহস পেয়েছি। আশা রাখছি, আগামীতে এই বিশেষ পরিস্থিতি সামাল দিতে আমরা বিশেষ অবদান রাখবো।”
তিনি জানিয়েছেন, সাংসদ তথা চিকিৎসক রাজদীপ রায় তাদের এই উদ্যোগকে সাধুবাদ জানিয়েছেন। তিনি বলেন, “একজন চিকিৎসক হিসেবে অত্যন্ত দক্ষ রাজদীপ রায়। তিনি আমাদের এই কাজটির প্রশংসা করেছেন। আমাদের এই উদ্যোগে পাশে থাকার আশ্বাস দিয়েছেন তিনি, যেটা আমাদের কাছে অত্যন্ত সুখদায়ক।”
উল্লেখ্য গত মাসে গ্রীন হাসপাতালে পরিষেবাটি শুরু হওয়ার পর অনেকেই সেখানে গিয়ে চিকিৎসা করানোর আগ্রহ প্রকাশ করেছেন। অনেকেই অত্যন্ত ক্রিটিক্যাল পরিস্থিতিতে সেখানে ভর্তি হয়েছেন এবং কয়েকজনের মৃত্যুও হয়েছে। তবু সাধারণ মানুষ বেসরকারি চিকিৎসার পরিসেবা নিতে আগ্রহ প্রকাশ করছেন। সেখানে ১৫টি শয্যা ছিল যেটা বাড়িয়ে ২০ টি করা হয়েছে। তবু প্রায় পুরো ওয়ার্ড ভর্তি থাকছে। এবার ভ্যালি হাসপাতলে আরো কুড়িটি শয্যা চালু হওয়ায় সাধারণ মানুষ আরো একটু সাহস পাবেন বলে মনে করছেন অনেকে।
বেসরকারি হাসপাতাল সংস্থার পক্ষ থেকে মৃদুল মজুমদার জানিয়েছেন, আগামীতে আরও বেসরকারী হাসপাতাল করোনা চিকিৎসা পরিষেবা শুরু করতে চলেছে। তিনি বলেন, “সম্প্রতি রাজ্য সরকারের তরফে আমাদের সঙ্গে বৈঠক করা হয় এবং বলা হয় আমরা যাতে ধীরে ধীরে এধরনের সেটআপ গড়ে তুলি। এ ব্যাপারে প্রথমে এগিয়ে আসে গ্রীন হিলস হাসপাতাল এবং এবার ভেলি হাসপাতাল এটি শুরু করলো। আগামীতে আরও কয়েকটি হাসপাতাল পরিষেবাটি চালু করার কথা ভাবছে এবং তারা ইতিমধ্যে কাজ শুরু করে দিয়েছে। হাসপাতালের প্রথম উদ্দেশ্যই হচ্ছে জনগণের পাশে দাঁড়ানো এবং এই দুঃসময়ে আমরা প্রত্যেকেই কাজটি করতে চাইছি।”
Comments are closed.