Also read in

বাঙালির দেশ কোনটা , জানতে চান বাঙালিরা

সকল সরকারি বেসরকারি আশ্বাসকে বৃদ্ধাঙ্গুষ্ঠ দেখিয়ে আন্তঃরাজ্য সীমান্তে বাঙালি নিগ্রহ অব্যাহত রয়েছে।নাগরিকপঞ্জির খসড়া প্রকাশের পর থেকেই বাঙ্গালীদের চিহ্নিত করে হেনস্তা করা হচ্ছে অসম মেঘালয় সীমান্তে। গতকাল সকাল ১০ টা থেকে সম্পূর্ণ অবৈধ ভাবে আবার এনআরসির নথি পরীক্ষা শুরু করল খাসি ছাত্ররা ।

সোমবারে এনআরসির খসড়া প্রকাশের পর মঙ্গলবার সকাল থেকে অভাবনীয় হয়রানি নেমে এসেছে মেঘালয়গামী বরাকবাসীর উপরে।

আসাম মেঘালয় সীমান্তের রাতাছড়ায় আচমকা জাতীয় সড়কের উপরে গৌহাটি মুখী যানবাহনের গতি রোধ করতে শুরু করে ছাত্র সংস্থা খাসি স্টুডেন্টস ইউনিয়ন এবং নর্থ ইস্ট স্টূডেন্টস ইউনিয়ন। তাদের যুক্তি হচ্ছে আসামে প্রকাশিত এনআরসিতে রাতে ৪০ লক্ষাধিক অনুপ্রবেশকারী শনাক্ত হয়েছে, ফলে যাদের নাম এনআরসি তে নেই তারা অনুপ্রবেশকারী এবং এদের মেঘালয় ঢুকতে দেওয়া হবে না। মঙ্গলবার অফিস খুলে সারা দিন ধরে রাতাছড়ায় ‘কেএসইউ ইনফিলট্রেশন ক্যাম্প’ নাম দিয়ে তারা তল্লাশি চালিয়ে যায়। মেঘালয় পুলিশ কখনো ঠুঁটো জগন্নাথ হয়ে দাঁড়িয়ে থাকে আবার কখনো তাদের সহায়তা ও করে।

সারাদিন ধরে এই ঘটনা চলার পর সরকারের টনক নড়ে এবং কাছাড় ও করিমগঞ্জ জেলা শাসকরা এ নিয়ে মেঘালয় প্রশাসনের সঙ্গে কথা বলেন; এরপর খাসি ছাত্ররা রাস্তা ছেড়ে দেয়, ফলে মঙ্গলবার রাত থেকে অ-উপজাতিরা বিনা বাধায় গন্তব্যে যেতে পেরেছেন। এই অবস্থা বুধবার সকাল ১০ টা পর্যন্ত বজায় ছিল।

বুধবার সকাল থেকে ফের রাস্তায় নামে খাসি ছাত্র সংস্থার সদস্যরা, আগের দিনের মতোই তারা নথিপত্র পরীক্ষা করতে শুরু করে। এদিন কিছু যাত্রী এনআরসির ছাপানো কপি সঙ্গী নিয়ে গিয়েছিলেন, তাদেরকে যেতে দেওয়া হয়- তবে অধিকাংশকেই ফিরিয়ে দেয় ছাত্ররা।

শুধু যাত্রীবাহী গাড়িতে নয়, বিভিন্ন মালবাহী যানবাহনে উঠে ও বাঙালি যাত্রীদের খাসিয়ারা টেনে নামায়। একজন ফিরে এসে কালাইনে জানিয়েছেন যে, খাসি ছাত্ররা অত্যন্ত হিংস্র হয়ে উঠেছে এবং দুর্ব্যবহার করছে, কোন যুক্তি তারা শুনতে চাইছে না এবং মেঘালয় পুলিশ নীরব দর্শকের ভূমিকা পালন করছে; ফলে বাধ্য হয়ে তারা ফিরে এসেছেন।

এদিকে জেলা প্রশাসন দাবি করেছেন যে বুধবার ৬নং জাতীয় সড়কের রাতাছাড়া অংশে যান চলাচল স্বাভাবিক ছিল। তবে ভুক্তভোগীদের বক্তব্য, বুধবার কোন ও পুলিশ ও দিকে পা মাড়ায়নি, দায়িত্ব এড়ানোর জন্য এমন বয়ান বাজি চলছে।

এদিকে গতকাল শিলচরের সাংসদ সুস্মিতা দেব সংসদে বিষয়টি উত্থাপন করে চিৎকার করতে করতে সংসদের ওয়েলে নেমে আসেন । অধিবেশন শুরুর কিছুক্ষণের মধ্যেই এই বিষয়ে সরব হয়ে উঠেন সুস্মিতা। তাঁর অভিযোগ স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিং এবং বিজেপি সভাপতি অমিত শাহ শুধুই আশ্বাস দিচ্ছেন, তাতে কাজের কাজ কিছুই হচ্ছে না। তালিকায় নাম না থাকা ৪০ লক্ষ বাঙালির অবিলম্বে নিরাপত্তার ব্যবস্থা করতে দাবি জানিয়েছেন তিনি। পরবর্তীতে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে লেখা এক চিঠিতে সুস্মিতা অভিযোগ করেছেন যে মেঘালয় পুলিশের যোগসাজশে খাসি ছাত্রসংস্থার সদস্যরা মেঘালয়ের ভেতর দিয়ে যাওয়া যাত্রী বাহী গাড়ি গুলোকে আটক জোর করে বরাকের অধিবাসীদের নাগরিকত্ব সংক্রান্ত কাগজপত্র পরীক্ষা করছে। এই বিষয়ে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন তিনি।

Comments are closed.