পর্যটনের সম্ভাবনা চাঙ্গা করতে গুয়াহাটি-শিলচর রুটে 'ভিস্তাডোম কোচ' চালু করছে রেল বিভাগ, সাধুবাদ জানালেন রাজদীপ
বরাক উপত্যকার জন্য সুখবর, শিলচর গুয়াহাটি রুটে ভিস্তাডোম কোচ চালু করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে রেল বিভাগ। শিলচর-গুয়াহাটি রুটে চলাচলকারী ট্রেনে বিশেষ করে এটি লাগানো হবে। ভিস্তাডোম স্টেট-অফ-আর্ট গোছের কোচ। দুই সাইড এবং ছাদ কাঁচের হওয়াতে যাত্রীরা ট্রেনে বসে আশেপাশের মনোরম দৃশ্য উপভোগ করতে করতে যাত্রা করবেন। ট্রেনের ভেতরে পরিবেশ থাকবে একেবারে রেস্তোরাঁর মত। সিনেমায় সুইজারল্যান্ড বা অন্যান্য ইউরোপীয় দেশে এই ধরনের ট্রেন দেখা যায়। গুয়াহাটি থেকে শিলচর আসার পথে প্রাকৃতিক সৌন্দর্য অনেক বেশি যেটা এখন পর্যন্ত পর্যটন শিল্পে রূপান্তরিত হয়নি। তবে রেল বিভাগের এই নতুন উদ্যোগ পুরো পর্যটন ব্যবসায় নতুন মোড় এনে দিতে সমর্থ।
এই মুহূর্তে উত্তর-পূর্বে কোনও রুটে পুরো ট্রেন ভিস্তা-ডোম কোচ ব্যবহার করে চালাবে না উত্তর পূর্ব রেলওয়ে, বরং বর্তমানে চলা বিশেষ ট্রেন গুলোর সঙ্গে পেছনে লাগিয়ে দেওয়া হবে দুটো করে কোচ। মোট ৬টি ভিস্তা-ডোম কোচ পাঠানো হয়েছে, এর মধ্যে দুটো জুড়ে দেওয়া হবে শিলচর গুয়াহাটি রুটে ট্রেনের সঙ্গে। এছাড়া আলিপুরদুয়ার-শিলিগুড়ি এবং আলিপুরদুয়ার-লামডিং রুটে চলাচল করা ট্রেনে দুটো করে ভিস্তা-ডোম কোচ জুড়ে দেওয়া হবে।
২০১৮ সালে তৎকালীন রেলমন্ত্রী পীযূষ গোয়েল এ বিষয়ে ঘোষণা করে শিলচর গুয়াহাটি রুটে ভিস্তা-ডোম কোচ চালু করার কথা বলেছিলেন। এরপর বারবার উচ্চস্তরে বৈঠক হয়েছে, এব্যাপারে পরিকল্পনা হয়েছে। পরবর্তীতে সাংসদ হওয়ার পর রাজদীপ রায় রেলমন্ত্রীর সঙ্গে যোগাযোগ করে এটা চালু করার ব্যাপারে অনুরোধ জানিয়েছিলেন। গত বছর কোনও নতুন পরিকল্পনা করা যায়নি, কেননা বছরের বেশিরভাগ সময় লকডাউন ছিল। তবে এবার একের পর এক নতুন ঘোষণা করছে বিভাগ এবং এর মধ্যে অন্যতম হচ্ছে পর্যটন ক্ষেত্রে নতুন সংযোজন ভিস্তা-ডোম কোচ।
সাংসদ রাজদীপ রায় এই উপহারের জন্য রেল বিভাগকে বিশেষ করে ধন্যবাদ জানিয়েছেন। তিনি বলেন, “বহুদিন ধরে আমরা চাইছি ভিস্তা ডোম কোচ গুয়াহাটি থেকে শিলচর আসার পথে ব্যবহার হোক। এই এলাকার প্রাকৃতিক সৌন্দর্য এখনও পর্যটনের ক্ষেত্রে ব্যবহার হয়নি, এবার দুটো কোচ চলার সঙ্গে সঙ্গে ধীরে ধীরে জনগণের মধ্যে পুরো এলাকার প্রাকৃতিক সৌন্দর্য বিশেষ জায়গা করে নেবে। ভবিষ্যতে এই রুটে পর্যটনের সম্ভাবনা অনেকটাই বেড়ে যাবে বলে আমার বিশ্বাস। আমি সুযোগ পেলে নিজে রেলমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করে তাকে সাধুবাদ জানাবো।”
রেল বিভাগ সম্প্রতি আগরতলা থেকে দিল্লিগামী রাজধানী এক্সপ্রেসকে উন্নত করে তেজস রেল হিসেবে চালানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এই ট্রেনটিতে অত্যাধুনিক প্রযুক্তি এবং অন্যান্য সুবিধা রয়েছে যা উত্তর-পূর্বে আগে কখনও দেখাই যায়নি। শিলচর থেকে তেজস ট্রেন চালানোর ব্যাপারে প্রশ্ন করলে রাজদীপ রায় বলেন, “যেহেতু শিলচর থেকে রাজধানীর-স্তরের ট্রেন এখনও চলাচল করছে না, ফলে তেজস ট্রেন আপাতত আসেনি। তবে আগামীতে বেশ কয়েকটি সম্ভাবনা রয়েছে, এর মধ্যে অন্যতম হচ্ছে ইম্ফল থেকে দিল্লি রাজধানী চালু হওয়ার বিশেষ সম্ভাবনা। কেন্দ্র সরকার এমন আরও অনেক সিদ্ধান্ত নিয়েছে যেগুলো এখনই জনসমক্ষে বলা যাবেনা, সময় এলে আমরা সেটা সবাইকে জানাবো।”
Comments are closed.