গ্রাম বিজেপিকে জেতান, দুর্নীতিবাজদের দুর্দিন আসবে: মুখ্যমন্ত্রী
কংগ্রেস দশকের পর দশক ধরে পঞ্চায়েত স্তরে দুর্নীতি করেছে। এর বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়িয়ে রাজ্যের জনগণ বিজেপিকে সরকারে এনেছেন এবং দুবছরে উন্নতির জোয়ার এসেছে। এবার গ্রামের দায়িত্ব আমাদের দিন, দেখবেন সমস্ত দুর্নীতি টেনে বের করে আনবো। এত বছর পঞ্চায়েত স্তরে যত দুর্নীতি হয়েছে তার সম্পুর্ণ তদন্ত হবে এবং দোষীদের বিরুদ্ধে উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়া হবে, বরাকে ভোট চাইতে এসে এমনটাই আশ্বাস দিলেন মুখ্যমন্ত্রী সর্বানন্দ সনোয়াল। বুধবার লক্ষ্মীপুরে নির্বাচনী সভায় অংশ নেন তিনি। এনআরসিতে বরাক উপত্যকার কোনও প্রকৃত ভারতীয় বাদ যাবেন না বলেও জোরালো আশ্বাস প্রদান করেন মুখ্যমন্ত্রী।
এদিন পয়লাপুল ডিএসএ ময়দানে আয়োজিত সভায় মুখ্যমন্ত্রী সহ অংশ নেন প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী কবীন্দ্র পুরকায়স্থ, বনমন্ত্রী পরিমল শুক্লবৈদ্য, আসাম প্রদেশ বিজেপির সভানেত্রী, বিজুলি কলিতা মেধী, সোনাইয়ের বিধায়ক আমিনুল হক্ লস্কর, উদারবন্দের বিধায়ক মিহির কান্তি সোম, বড়খলার বিধায়ক কিশোর নাথ, শিলচরের বিধায়ক দিলীপকুমার পাল, জেলা সভাপতি কৌশিক রাই, প্রদেশ বিজেপির মুখপাত্র রাজদীপ রায় সহ অন্যান্যরা।
মুখ্যমন্ত্রী লক্ষ্মীপুরের উন্নতি নিয়ে ১০৪ কোটি, পয়লাপুল স্ট্যাডিয়ামের জন্য ১০ কোটি সহ সরকারের নানান প্রকল্পের কথা উল্লেখ করেন। বিজেপি পঞ্চায়েত স্তরে জিতলে থেমে থাকা সবগুলো প্রকল্পের কাজ চালু হবে বলেও আশ্বাস দেন। পাশাপাশি চা বাগানের শ্রমিকদের বেতন বৃদ্ধি, প্রত্যেক বাগানে মোবাইল মেডিক্যাল ইউনিট চালুকরা সহ নানা আশ্বাস দেন তিনি।
এদিন স্পষ্ট বাংলায় ভাষণ দেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি বলেন, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর-নজরুল ইসলাম-ভুপেন হাজারিকার এই রাজ্যে প্রত্যেক ভাষা এবং জনগোষ্ঠীর সমান অধিকার রয়েছে। এনআরসি নিয়ে তিনি বলেন, আমরা আগেও বলেছি, বরাক হোক বা ব্রহ্মপুত্র, কোনও প্রকৃত ভারতীয় বাদ পড়বেন না। আপনাদের নিরাপত্তার দায় আমার এবং আমার দলের। আমি প্রত্যেক ব্যক্তির পাশে ছিলাম, আছি এবং থাকবো।
প্রায় ৮ হাজার জনগণের সমাগমে বিরাট জনসভা হয় এদিন। জেলার সাতটি বিধানসভা আসনে একমাত্র লক্ষ্মীপুর কংগ্রেসের দখলে রয়েছে। এদিন নেতারা তাদের ভাষণে বার বার বলেন, লক্ষ্মীপুরের জনগণ কংগ্রেসকে ভোট দিয়ে এলাকার উন্নতি আটকে দিয়েছেন, তবে এবার তারা আর এই ভুল করবেন না। এবার তৃণমূল স্তরে জেলায় পদ্মফুল ফুটবে এবং সারাদেশে চলা উন্নতির জোয়ার এসে পৌঁছোবে।
দিলীপকুমার পাল বলেন, সর্বানন্দকে নিয়ে সারা রাজ্যের মানুষ ভালো আছেন, তবে লক্ষ্মীপুরের জনগণ কংগ্রেসকে ভোট দিয়ে ভুল করেছেন। প্রায় চার দশক ধরে এখানে এত অন্যায় হয়েছে, মা লক্ষ্মী এখান থেকে চলে গেছেন। আপনারা এবার পদ্মফুল ফুটিয়ে এবার মাকে ফিরিয়ে আনুন। লক্ষ্মীপুরের লক্ষ্মীকে ফিরিয়ে আনার এই সুযোগকে হাতছাড়া করবেন না।
কবীন্দ্র পুরকায়স্থ বলেন, সমাজের উন্নয়নের সবথেকে মূল্যবান জায়গা হচ্ছে পঞ্চায়েত। সারা দেশে বিজেপি রয়েছে, এবার আমাদের পঞ্চায়েত দিন, তবেই উন্নতি আসবে। পরিমল শুক্লবৈদ্য বলেন, কংগ্রেসের শিক্ষামন্ত্রীকে দুর্নীতির দায়ে জেল খাটতে হয়েছিল। লক্ষ্মীপুরের টাকা গুয়াহাটি নিয়ে গিয়ে জলে ফেলে দেওয়া হয়েছে, মানুষ প্রাণ হারিয়েছেন। তবে এখন দিন পাল্টেছে। তাই গ্রামে সরকার চাই, কারণ সবার কাছাকাছি পৌঁছতে হবে। গ্রামের শেষ মানুষটির কাছেও পৌঁছতে চাই আমরা।
আসাম প্রদেশ বিজেপির সভানেত্রী, বিজুলি কলিতা মেধী মহিলাদের সচেতন হতে বলেন। তিনি বলেন, নির্বাচন আপনাদের কাছে সুযোগ, এত বছরের বঞ্চনার উত্তর দেওয়ার। বিজেপি মহিলা-শিশুদের নিয়ে ভাবে, আপনারা এতদিন ধরে বঞ্চিত হয়েছেন, এবার সেই ভুল আরকরবেন না।
Comments are closed.