জিএমসি'র সমপর্যায়ে উন্নীত হোক এসএমসি,এই আবেদনের মধ্যেই ফিরে পাই হারিয়ে যাওয়া সায়ন্তনকে
আমাদের আসামের মাননীয় মুখ্যমন্ত্রী, মাননীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রী তাদের বিভিন্ন বক্তব্যে বলে থাকেন, বরাক ব্রহ্মপুত্রের সম উন্নয়ন সাধিত হবে। তাই আমরা আশা রাখতে পারি যে প্রায় সমসাময়িক এই দুটি প্রতিষ্ঠানকে সমান পর্যায়ে নিয়ে আসবে আসাম সরকার এবং তাও অল্প সময়ের মধ্যেই। সবাই জানি স্বাস্থ্য পরিষেবার সাথে জড়িয়ে আছে মানুষের জীবন। আর এই উন্নত মানের স্বাস্থ্য পরিষেবার অভাবে হারাতে হচ্ছে সায়ন্তনের মত হাজার হাজার মানুষকে।
গত ৮ অক্টোবর সকাল বেলা সায়ন্তনকে নিয়ে যাওয়া হয় স্থানীয় একটি নার্সিংহোমে। সামান্য পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে চলে যেতে বলা হয় শিলচর মেডিকেল কলেজে। সেখানেও সামান্য চিকিৎসার পর চলে যেতে বলা হলো শিলচরের বাইরে।কারণ আসামের দ্বিতীয় প্রধান শহর শিলচরে নেই উন্নত চিকিৎসা পরিষেবা! নেই এনজিওপ্লাস্টির মত সুবিধা! হাতে মাত্র কয়েক ঘণ্টা! পাগলের মত অবস্থা! কুকুর ছাগলের মত ছোটাছুটি! অনেকটা দেরিতে এল এম্বুলেন্স! এবার শিলং এর পথে যাত্রা। মাত্র কয়েক ঘন্টার রাস্তা বাকি থাকতেই অঘটন ঘটে গেল। সায়ন্তন আমাদের ছেড়ে চলে গেল। এর থেকেই প্রমাণিত, কতটা অনিশ্চয়তার মধ্যে আমরা দিন যাপন করছি। এভাবে একটা শহরের অবস্থা চলতে পারে?
তবে এখানে কিন্তু শেষ হলো না! এখান থেকেই জন্ম নিল আন্দোলনের মানসিকতা! সায়ন্তনের বন্ধুরা একযোগে শপথ নিলেন শিলচর মেডিক্যাল কলেজের ভোল পাল্টে একে সুপার স্পেশাল হাসপাতালে উন্নীত করতে হবে। শুরু হলো ক্যান্ডেল মার্চ। যোগ দিলেন সব বয়সের মানুষ। চলল বিভিন্ন জায়গায় স্মারক পত্র প্রদান, স্বাক্ষর গ্রহন ইত্যাদি। তার পাশাপাশি আমি এবং আমার আগে কিছু বন্ধু জয়দীপ ভট্টাচার্য, রূপক চক্রবর্তী প্রমুখের দ্বারা স্বাস্থ্যমন্ত্রী এবং অন্যান্য বিভিন্ন স্তরে যোগাযোগের মাধ্যমে চেষ্টা চলে, যাতে করে শিলচর মেডিকেল কলেজের উন্নতিকরণের পাশাপাশি ভারতের প্রাচীন ও স্বনামধন্য কিছু ব্যক্তি মালিকাধীন স্বাস্থ্য প্রতিষ্ঠানকেও আমন্ত্রণ জানানো যায় এই শহরে। সব ধরনের ব্যবস্থাই খোলা থাক সবার জন্য।
অন্যদিকে সায়ন্তনের বন্ধুদের অবিরত পথচলা! তরুণ এই ছাত্রদল যে আন্দোলন এবং জন জাগরণের ডাক দিয়েছেন, তার আভাস আকাশে বাতাসে কান পাতলেই শোনা যাচ্ছে। মনে পড়ে যাচ্ছে নজরুলের সেই গান, “ঊর্ধ্ব গগনে বাজে মাদল, নিম্নে উতলা ধরণী তল। অরুণ প্রাতের তরুণ দল, চল রে চল রে চল।” এই পথ চলা চলতেই থাকবে, যতদিন না এই শহরের চিকিৎসা পরিষেবাকে সঠিক মানে উন্নত করা না যায়। মানুষ বাঁচলেই তো অন্যান্য সবকিছু, আমোদ-প্রমোদ, গান-বাজনা! তবে দৃঢ় সংকল্প নিয়ে নিভৃতে কাজ শুরু করে দিয়েছেন সায়ন্তনের বন্ধুরা এবং শিলচরের অনেক সংস্থা সংগঠনের বন্ধুরা। মাননীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রীর মৌখিক সমর্থন পাওয়ায় কিছুটা আশার আলো দেখতে শুরু করেছেন ‘সায়ন্তন’দের বন্ধুরা। এবার সূর্যোদয়ের অপেক্ষায় রয়েছি আমরা।
Comments are closed.