Also read in

ডিজেলের বদলে জল, অভিযোগে উত্তাল সোনাই রোডের পেট্রোল পাম্প, 'পরিকল্পিতভাবে বদনাম করার চেষ্টা,' বললেন পাম্পের মালিক

বৃহস্পতিবার বিকেলে সোনাই রোডের শরৎপল্লী সংলগ্ন ত্রিবেণী ফিলিং স্টেশন পেট্রোল পাম্পে উত্তাল পরিস্থিতি দেখা দেয়। স্থানীয় যুবক রাজু মিত্র সম্প্রতি একটি পায়াগো গাড়ি কিনেছেন এবং তাতে সোনাই রোড পেট্রোল পাম্প থেকে ফুল ট্যাংক ডিজেল ভরিয়েছেন। এর পরেই তার গাড়িটি বন্ধ হয়ে যায় এবং স্টার্ট করতে না পারায় মেকানিকদের ডেকে আনেন। মেকানিক অনেক চেষ্টা করেও গাড়ি স্টার্ট করতে না পেরে ট্যাঙ্ক থেকে ডিজেল বের করার সিদ্ধান্ত নেন, তাদের সন্দেহ হয় ডিজেলে অসুবিধা রয়েছে। ডিজেল বের করার পর তারা লক্ষ্য করেন এতে কিছু মেশানো রয়েছে। সঙ্গে সঙ্গে সেই ডিজেল নিয়ে তারা পেট্রোলপাম্পে উপস্থিত হন। তবে পাম্পের মালিকপক্ষ জানান কোন ভেজাল নেই এবং তারা সেটা পরীক্ষা করে দেখিয়ে দেন। দুই পক্ষই নিজের কথায় অনড় হলে পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে ওঠে।

অভিযোগকারী রাজু মিত্র বলেন, “আমি এলাকার বাসিন্দা, অতীতে আমরা দেখেছি এই পেট্রোল পাম্পে বিক্রি হওয়া জ্বালানি সামগ্রীতে ভেজাল পাওয়া গেছে এবং সাধারন মানুষ এর প্রতিবাদ করেছিলেন। তবু আমরা এলাকার মানুষ বিশ্বাস করেই পেট্রোলপাম্প থেকে জ্বালানি কিনেছি। তবে এতে আমার নতুন কেনা গাড়ির ক্ষতি হয়েছে। স্বাভাবিকভাবেই এতে রাগ হওয়ার কথা, তবু সংযত হয়ে তাদের কাছে যখন কথাটি তুলে ধরি তারা উল্টো আমাদের দোষারোপ করতে শুরু করেন। মালিক পক্ষ থেকে এক মহিলা আমাদের গালাগাল দেন এবং আমরা যেগুলো কথা বলছি সেটা ভিডিও করে তার মত একটি গল্প বানানোর চেষ্টা করেছেন। তবে আমরা এতে ভয় পাইনি, তারা যদি এভাবে সাধারণ মানুষকে ঢকানোর চেষ্টা করেন তাহলে তাদের বিরুদ্ধে জোরালো আওয়াজ তুলতে আমরা দ্বিধাবোধ করব না।”

তারা পেট্রোল পাম্পের মালিকের বিরুদ্ধে রাঙ্গিরখাড়ি থানায় এব্যাপারে অভিযোগ জানিয়েছেন। আগামীতে যাতে আর কোনো মানুষকে এই পরিস্থিতির সম্মুখীন হতে না হয় তাই এলাকায় সচেতনতা ছড়িয়ে দেওয়ার কথা ভাবছেন তারা।

এদিকে পেট্রোল পাম্পের মালিক পক্ষের তরফে তুহিনা ধর বলেন, “যুবকটি তার বন্ধুদের নিয়ে যখন আমাদের উপর চড়াও হন, তারা স্পষ্ট বলেন এই কাজটি আগেও করা হয়েছে। এতে আমাদের সন্দেহ হচ্ছে তারা পরিকল্পিতভাবে কাজটি করেছে। একজন ব্যক্তি আমাদের পেট্রোলপাম্প থেকে জ্বালানি সামগ্রী কিনে নিয়ে বাইরে কি করেছেন সেটা আমরা দেখিনি। তবু তিনি যে জারে ডিজেল নিয়ে এসেছেন সেটা আমরা পরীক্ষা করেছি এবং ইন্ডিয়ান অয়েল কর্পোরেশন এর স্ট্যান্ডার্ড অনুযায়ী থিকনেস বজায় আছে বলে প্রমাণ হয়েছে। প্রথমে আমরা তাদের বুঝিয়ে বলার চেষ্টা করি কিন্তু তারা কিছুতেই রাজি নন, তাদের উদ্দেশ্য ছিল পেট্রোল পাম্প বন্ধ করে দেবেন। প্রায় আধাঘণ্টা ধরে তাদের বোঝানোর চেষ্টা করলেও তারা আমাদের বিক্রি বন্ধ রাখেন। এই সময়ে যে গ্রাহকরা এসেছিলেন তাদের মনে আমাদের প্রতি ভুল ধারণা পৌঁছে দেওয়া হয়েছে, তারা হয়তো আগামীতে আমাদের পাম্পে আসতে চাইবেন না।যে যুবকেরা এসে আমাদের উপর হম্বিতম্বি দেখিয়েছে তাদের উদ্দেশ্য হয়তো এটাই ছিল। আমি একজন মহিলা, যুবকটি আমাকে যা মুখে তাই বলেছে, অত্যন্ত অশ্রাব্য গালাগাল দিয়েছে। এমন কি আমাদের কর্মীদের শারীরিকভাবে হেনস্থা করেছে। তারা চাইছিল না আমরা ডিজেল পরীক্ষা করি, তবু আমরা করেছি এবং প্রমাণ হয়েছে আমরা ভুল করিনি। এবার আমরা প্রশাসনের দ্বারস্থ হচ্ছি, তারা আমাদের সুবিচার পাইয়ে দেবেন বলে আশা রয়েছে।”

ঘটনার পর একবার পেট্রোল পাম্প পরিদর্শন করেছেন পুলিশের আধিকারিকরা। এছাড়া ইন্ডিয়ান অয়েল কর্পোরেশনের আধিকারিকদের খবর দেওয়া হয়েছে। তারা পুরো ব্যাপার খতিয়ে দেখবেন এবং আদৌ ডিজেলে জল ছিল কিনা সেটা প্রমাণ হওয়ার পর প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হবে বলে জানানো হয়েছে।

Comments are closed.