সাপ্তাহিক ছুটি এবং হাজিরার হার নিয়ে উত্তপ্ত পাতিছড়া, ইছাছড়া ও দ্বিগুনছড়া বাগান, আন্দোলনের শ্রমিকরা
সাপ্তাহিক ছুটি এবং দৈনিক হাজিরার হার নিয়ে বাগান শ্রমিক ও কর্তৃপক্ষের মধ্যে মতানৈক্য দেখা দেওয়ায় ক্ষোভে ফুসছেন আসামের কাছাড় জেলার উধারবন্দের পাতিছড়া, ইছাছড়া ও দিগুনছড়া চা বাগানের শ্রমিকরা ।
মঙ্গলবার পাতিছড়া চা বাগানে জমায়েত হয়ে, বাগান পঞ্চায়েত সনৎ কর্মকার, বিশ্ব তাঁতী, দিবানন্দ বাক্তি, বিন্ধু গোয়ালা, ইছাছড়া চা বাগানের পঞ্চায়েত রাজেন গোয়ালা, অনাথ ঘাটোয়ার, সন্তু তাঁতী, টেমবুল তাঁতীরা সাংবাদিকদের জানান, তাদের পূর্ব পুরুষরা এই বাগানে কাজ করেছেন । প্রত্যেক সাপ্তাহের রবিবার তাদের বাগান সাপ্তাহিক বনধ ছিল । তারাও এই সাপ্তাহিক বনধের আনন্দ উপভোগ করে আসছিল । কিন্তু বর্তমান কর্তৃপক্ষ রবিবারের এই বনধকে বাতিল করে তা মঙ্গলবারে নিয়ে যাওয়াকে সমর্থন করছেন না তারা । গত রবিবার তাদের বাগান বন্ধ রাখার কথা কিন্তু বাগান কর্তৃপক্ষ বাগান খোলা রাখা হলেও তারা এদিন কাজে যোগ দেন নি । আজ তারা কাজে যোগ দিতে গেলে বাগান কর্তৃপক্ষ বাগানে ছুটি ঘোষণা করায় ক্ষোভে ফুসছেন তারা ।
তারা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, তাদের বাগানে নেই ভাল চিকিৎসার ব্যবস্থা । ডাক্তার না থাকার জন্য কোন লোক অসুস্থ হলে তাদেরকে কুম্ভা কিংবা উধারবন্দ প্রাথমিক স্বাস্থ্য কেন্দ্রে নিয়ে যেতে হয় । এছাড়া তাদের হাজিরার হারও কমিয়ে দেওয়া হয়েছে । বরাক উপত্যকার প্রত্যেক বাগানে ২১ কেজি পাতি তোলার পর একদিনের হাজিরা দেওয়া হয় ১৪০ টাকা, কিন্তু তাদের বাগানে ২৩ কেজি পাতা তোলে তাদেরকে হাজিরা দেওয়া হয় ১৩০ টাকা । এতসব সমস্যা থাকা সত্বেও তারা এতদিন মুখ খুলে নি, কিন্তু রবিবার বন্ধের জায়গায় যদি মঙ্গলবার করা হয় তবে তারা এব্যাপারটি কখনো মেনে নেবে না বলে জানান তারা ।
এই বিষয়ে সংশ্লিষ্ট তিনটি বাগানেরই ম্যানেজার শ্রী প্রভাস চক্রবর্তীর সাথে যোগাযোগ করলে তিনি আমাদের জানান, বাগানের সাপ্তাহিক বন্ধের দিনের ব্যাপারটা গত ১৬ই অক্টোবর বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে জানানো হয়েছিল এবং সবাই এটা মেনে নিয়েছিল। তাছাড়া দ্বিগুণছড়া বাগানের শ্রমিকরা সাপ্তাহিক বন্ধের জন্য মঙ্গলবারকেই আগে থেকেই বেছে নিয়েছিলেন। “আসলে বাগানের নিজস্ব ফ্যাক্টরি এখন বন্ধ রয়েছে, তাই চা পাতা আশেপাশের বাগানে বিক্রি করা হয়ে থাকে । তাই চা পাতা বিক্রির সুবিধার্থে এই ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে”, জানান তিনি। দৈনিক হাজিরা প্রসঙ্গে তিনি জানান, “আগামী এপ্রিল মাস থেকে ১৪৫ টাকা করে দেওয়া হবে। এই ব্যাপারে অ্যাসিস্ট্যান্ট লেবার কমিশনারের সঙ্গে আইনি জবাবদিহি চলছে”।
Comments are closed.