Also read in

বেহাল সড়কপথে ‘আত্মহত্যা’ লাউয়ের—নীরব শিলচর, নীরব প্রশাসন!

-রাজু দাস

শিলচরের মেহেরপুর এলাকায় সম্প্রতি এক অভিনব প্রতিবাদের ছবি ধরা পড়েছে। ভাঙাচোরা রাস্তায় গাছের ডাল, বাঁশ ও আবর্জনার স্তূপের সঙ্গে একটি লাউ গলায় দড়ি দিয়ে ঝুলছে। তার পাশে বাঁধা একটি রাজনৈতিক দলের পতাকা। স্থানীয়দের দাবি, এটি নিছকই কোনো কৌতুক নয়, বরং একটি তীব্র সামাজিক প্রতিবাদ—যেখানে ‘আত্মহত্যা’ করেছে একটি লাউ!

 

ঘটনাটি ঘটেছে এমন এক সড়কে, যা কেবল মেহেরপুর বা শিলচর শহরের দৈনন্দিন জীবনেরই অংশ নয়—এই সড়কই হলো শিলচর মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল, আসাম ইউনিভার্সিটি, ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজি (NIT) সহ একাধিক গুরুত্বপূর্ণ শিক্ষা ও স্বাস্থ্যসেবার প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে সরাসরি শহরবাসীকে যুক্ত করা এক বিশেষ পথ।

 

তবুও বছরের পর বছর ধরে এই রাস্তা পড়ে আছে অবহেলিত অবস্থায়। খানাখন্দে ভরা, বৃষ্টির সময় কাদা ও জলমগ্ন, শুকনো মৌসুমে ধুলোয় ঢেকে যায় পুরো রাস্তাটি। অ্যাম্বুলেন্স, স্কুলবাস, কলেজগামী ছাত্রছাত্রী, অফিসযাত্রী—প্রতিদিন হাজার হাজার মানুষ এই ভাঙাচোরা পথ পেরিয়ে গন্তব্যে পৌঁছান। কিন্তু সংশ্লিষ্ট প্রশাসন কিংবা দায়িত্ব প্রাপ্ত আধিকারিকদের কোনো হেলদোল নেই।

 

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয়দের কথায়, ‘‘আমাদের বারবার আবেদন করার পরেও কোনো সংস্কার হয়নি। তাই এবার এমন প্রতীকী প্রতিবাদের আশ্রয় নিতে বাধ্য হয়েছি। এক লাউকে ঝুলিয়ে রেখেছি যেন সরকার বোঝে—আমাদের অবস্থা এমন, যেন রাস্তাই আত্মহত্যা করছে।”

 

এই ঘটনা কেবল সামাজিক মাধ্যমে নয়, শহরের অলিগলিতেও আলোড়ন তুলেছে। অনেকেই বলছেন, শুধু রাজনৈতিক নেতাদের ছবি টাঙিয়ে উন্নয়নের প্রচার করলেই দায় শেষ হয় না, প্রকৃত উন্নয়ন রাস্তায় গাড়ির চাকার ধাক্কায় বোঝা যায়।

 

প্রশাসনের তরফে এখনও পর্যন্ত কোনো অফিসিয়াল প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি। তবে স্থানীয়দের দাবি, অবিলম্বে এই রাস্তাটি সংস্কার না করলে আগামী দিনে আরও বৃহত্তর আন্দোলনের পথে নামবেন তারা।

 

(রাজু দাস, একজন ফ্রিল্যান্সার সংবাদদাতা,লিপি লেখক, কবি, এবং নাট্যকার। শিলচরের বিভিন্ন পত্রপত্রিকায় বিগত চার বছরের স্বাধীনভাবে সংবাদ সংগ্রহের প্রতিবেদন সহ বিশ্লেষণ আর্টিকেল লেখার অভিজ্ঞতা।)

 

Comments are closed.

error: Content is protected !!