কাছাড়ে করোনার রেকর্ড: একদিনে আক্রান্ত ৩১২, সুস্থ ১৩৮
শনিবার কাছাড় জেলায় করোনা ভাইরাসের সর্বকালের দুটো রেকর্ড হয়েছে। এদিন একদিনে আক্রান্ত হয়েছেন ৩১২ জন এবং সুস্থ হয়েছেন ১৩৮ জন। গত বছর একদিনে ৩০৩ জন পজিটিভ হয়েছিলেন সেটা ছিল কাছাড় জেলার সর্বকালের সেরা রেকর্ড। তবে সেই রেকর্ড গত বছর হয়েছিল আগস্ট মাসে, অর্থাৎ যখন সারা দেশে করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ একেবারে চরমে। তবে এবার প্রাথমিক দিকেই এমন সংখ্যায় পৌঁছে দেওয়া অবশ্যই একটি বড়সড় সংকেত, আগামীতে আরও অনেক বেশি লোক আক্রান্ত হতে চলেছেন। এদিন কাছাড় জেলায় দুই ব্যক্তির মৃত্যু হয়েছে, দুজনেই শিলচর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন।
পঞ্চায়েত রোডের মাহিবুর রহমান বরভুইয়া এদিন সন্ধ্যায় মারা যান। তিনি ৩ মে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন। তিনি নিউমোনিয়া রোগে আক্রান্ত ছিলেন এবং শ্বাসকষ্ট ছিল। একসময় অক্সিজেনের মাত্রা ৬৩ শতাংশে নেমে যায়। শেষমেষ তাকে হাসপাতালে আইসিইউ ওয়ার্ডে ভেন্টিলেশনে রাখা হয়। পাশাপাশি তাকে অক্সিজেন দেওয়া হয় তবু শেষ রক্ষা হয়নি। প্রায় পাঁচদিন চিকিৎসাধীন থাকার পর শনিবার সন্ধ্যায় ছয় টায় তার মৃত্যু হয়েছে। মৃত্যুকালে বয়স হয়েছিল ৬০ বছর।
দ্বিতীয় ব্যক্তি হলেন তারাপুরের জ্যোৎস্না চক্রবর্তী। তিনি ২৬ এপ্রিল অসুস্থ অবস্থায় শিলচর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন। একসময় তার শ্বাসকষ্ট দেখা দেয় এবং অক্সিজেনের মাত্রা ৭৭ শতাংশে নেমে যায়। করোনা ভাইরাস সংক্রমণের পাশাপাশি তার নিউমোনিয়া ছিল বলে জানা গেছে। এছাড়া তার রক্তাল্পতাও ছিল। অক্সিজেনের মাত্রা নেমে যাওয়ায় তাকে ভেন্টিলেশনে অক্সিজেনের সহায়তায় রাখা হয়েছিল। শনিবার রাত আটটায় তার মৃত্যু হয়েছে। মৃত্যুকালে বয়স হয়ছেনি ৫৪ বছর।
স্বাস্থ্য বিভাগের তথ্য অনুযায়ী এদিন কাছাড় জেলায় আক্রান্ত হয়েছেন ৩১২ জন। রেপিড এন্টিজেন টেস্টে ১৯৮ জন এবং আরটিপিসিআর পরীক্ষায় ১১৪ জন ব্যক্তির সংক্রমণ শনাক্ত। এদিন মোট ২৬৩১ জনের রেপিট এন্টিজেন টেস্ট হয়েছে এবং ২৪৩৩ জন ব্যক্তি নেগেটিভ হয়েছেন। কাছাড় জেলায় এখন আক্রান্ত অবস্থায় চিকিৎসাধীন রয়েছেন ৯৮১ জন। এরমধ্যে শিলচর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ১৬২ জন, সিভিল হাসপাতালে রয়েছেন ৮ জন, সেনা হাসপাতালে ১১ জন, সিআরপিএফ হাসপাতালে ১০ জন, গ্রীন হিলস হাসপাতালে ৩৪ জন, গ্রেসওয়েল হাসপাতালে ২১ জন, কাছাড় ক্যান্সার হাসপাতালের ১০ জন এবং বাড়িতে চিকিৎসাধীন ৭২৫ জন।
শিলচর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সহকারী অধ্যক্ষ ডাঃ ভাস্কর গুপ্ত জানিয়েছেন, এখন ১৭২ জন করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত রোগী হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন। এরমধ্যে ১৩৫ জন রয়েছেন ওয়ার্ডে এবং ৩৮ জন আইসিইউ বিভাগে। ১৭ জন রোগী ভেন্টিলেশনে রয়েছেন এবং ১৮ জন অক্সিজেন সাপোর্টে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
এদিন ১১ জন ব্যক্তি সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন এবং ৯ জন নতুন রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। দুজন ব্যক্তি ডাক্তারের পরামর্শ বাড়ি চলে গেছেন এবং ২২ জন রোগীকে হোম আইসোলেশনে চিকিৎসার জন্য পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে।
Comments are closed.