মলিন শর্মার মর্মান্তিক মৃত্যুর প্রতিবাদে পুলিশ সুপার কার্যালয় কাঁপালেন শহরের মহিলারা
বরাক উপত্যকার বিশিষ্ট সাংবাদিক মলিন শর্মার এভাবে অসময়ে চলে যাওয়াকে মেনে নিতে পারেননি কেউই। একদিকে যেমন শোকে স্তব্ধ শিলচরবাসী, অন্যদিকে বিভিন্ন স্তরের জনগণ প্রতিবাদে মুখর হয়ে উঠছেন। কারণ মলিন শর্মার মৃত্যু স্বাভাবিক নয়। শিলচরের বিভিন্ন এলাকার একদল মহিলা এই দুর্ঘটনার প্রতিবাদে আজ দুপুর সাড়ে তিনটে নাগাদ পুলিশ সুপারের কার্যালয় জমায়েত হন। তারা পুলিশ সুপারের সঙ্গে দেখা করতে চাইলেও তিনি শিলচরের বাইরে থাকার জন্য দেখা হয়নি। প্রায় এক ঘন্টা ধর্না এবং স্লোগানের পর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার জগদীশ দাস তাদের বক্তব্য শুনেন।
মহিলারা এই মর্মান্তিক ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে একটি স্মারকলিপি প্রদান করেন। স্মারকলিপিতে তারা দাবি জানান যে, ট্রিপার- লরি এবং বড় গাড়ি শহরে প্রবেশ করার সময়সীমা বেঁধে দিতে হবে, শুধু রাত একটা থেকে ভোর ৪টা পর্যন্ত এগুলোকে শহরে ঢুকতে দেওয়ার অনুমতি দেওয়া যেতে পারে। তাদের দাবি অনুযায়ী, যেহেতু সিসিটিভি ফুটেজ রয়েছে তাই ১২ ঘণ্টার মধ্যে টিপারের ড্রাইভার এবং হ্যান্ডিম্যানকে গ্রেফতার করতে হবে। মহিলাদের পক্ষ থেকে পুলিশ সুপারের অনুপস্থিতিতে অতিরিক্ত পুলিশ সুপারকে এ ব্যাপারে লিখিতভাবে আশ্বাস দেওয়ার কথা বলা হলেও লিখিত আশ্বাস দেওয়ার অধিকার তার নেই বলে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার এ ব্যাপারে মৌখিক আশ্বাস প্রদান করেন।
আশ্বাস প্রদান করে বলা হয় যে রাত ১ টার পরেই শুধু বড় ট্রাককে অনুমতি দেওয়া হবে শহরে ঢোকার এবং প্রত্যেক ড্রাইভারের লাইসেন্স পরীক্ষা করে দেখা হবে। সেই সঙ্গে স্থানে স্থানে সিসিটিভিও বসানো হবে বলে আশ্বাস প্রদান করা হয়। একই সঙ্গে সেই অভিশপ্ত ট্রাকের ড্রাইভার এবং হ্যান্ডিম্যানকে খুজে বের করারও আশ্বাস প্রদান করেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার।
এই অবস্থায় মহিলাদের পক্ষ থেকে জানানো হয়, যদি তাদের দাবি অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া না হয় তাহলে তারা বৃহত্তর আন্দোলনের পথে পা বাড়াবেন।
জানা যায়, আজ প্রায় একশত মহিলা পুলিশ সুপারের অফিসে জমায়েত হয়ে ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থ প্রশাসনের বিরুদ্ধে স্লোগান দেন। তাদের মতে, এই দুর্ঘটনার জন্য প্রশাসনই সম্পূর্ণ দায়ী। পরে মহিলাদের পক্ষ থেকে সাংবাদিকদের বলা হয়, এক ঘন্টা অপেক্ষা করার পর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার তাদের সঙ্গে দেখা করলেও পুলিশ সুপারের সঙ্গে তাদের দেখা হয়নি। তারা দুর্ঘটনার জন্য পুলিশকে দায়ী করে বলেন, পুলিশ দুর্ঘটনার খবর সঙ্গে সঙ্গে জানতে পারেনি এবং পুলিশ স্টেশনে খবর পৌঁছানোর পরও কর্মীর অভাবে দুর্ঘটনাস্থলে পৌঁছোতে পুলিশের দেরি হয়েছে।
ওইখানে উপস্থিত মহিলাদের মধ্যে ছিলেন মধুপর্না বসাক, শম্পা বণিক, মৌমিতা গুপ্ত, সংহিতা রায় বণিক, টুম্পা রায় গোস্বামী, নিকিতা বণিক, সোনালী বণিক, অনিন্দিতা দে পাল প্রমূখ।
Comments are closed.