10ft statue of Atal Bihari Vajpayee on Mahasadak's 'Zero Point' in Silchar
মহাসড়কের জিরো পয়েন্টে বসানো হবে প্রয়াত অটল বিহারী বাজপেয়ীর দশ ফুটের ব্রোঞ্জের মূর্তি
প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী অটলবিহারী বাজপেয়ীর স্বপ্নের প্রকল্প ইস্ট-ওয়েস্ট করিডর শিলচর সহ সমগ্র বরাক উপত্যকাকে সারাদেশের সঙ্গে সরাসরি জুড়ে দেওয়ার ক্ষমতা রাখে। সারাদেশে প্রকল্প শেষ হয়ে গেলেও বরাক উপত্যকা এখনও এর আওতায় পুরোপুরিভাবে আসেনি, কারণ মহা সড়কের প্রায় ৩২ কিলোমিটার কাজ ডিমা হাছাও জেলায় অসম্পূর্ণ। মূল প্রকল্পের অধীনে মহাসড়ক শেষ হয়েছে রংপুরে, সেটাকে জিরো পয়েন্ট বলে ঘোষণা করা হয়েছে। এবার বিজেপির তরফে প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রীর একটি দশ ফুটের ব্রোঞ্জের মূর্তি এই জিরো পয়েন্টে বসানোর পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে। কলকাতায় ইতিমধ্যে মূর্তি নির্মাণের কাজ চলছে এবং আগামী ২৫ ডিসেম্বর শিলচরে মূর্তি স্থাপন করা হবে। সাংসদ রাজদীপ রায় জানিয়েছেন, বড় মাপের কেন্দ্রীয় মন্ত্রী এসে এই মূর্তি উন্মোচন করবেন, তবে এখনও তার নাম প্রকাশ্যে আনার সময় হয়নি।
রাজদীপ রায় এব্যাপারে বলেন, “প্রয়াত প্রধানমন্ত্রী অটল বিহারি বাজপেয়ী যখন এত বড় প্রকল্প ঘোষণা করেছিলেন, তখন শিলচরের কথা মাথায় রেখেছিলেন। এর ফলে সরাসরি আমরা দেশের উন্নততম সড়কের মানচিত্রে স্থান পেয়েছিলাম। তার আদর্শকে সামনে রেখে যখন আজ সারাদেশে বিজেপি শাসন করছে, আমরা তার প্রতি শ্রদ্ধা জানানোর কোনও সুযোগ হাতছাড়া করতে চাই না। দলের তরফে বাজপেয়ীজির মূর্তি স্থাপনের সিদ্ধান্ত নেওয়ার পর কলকাতায় দশ ফুটের ব্রোঞ্জের মূর্তি বানানোর জন্য অর্ডার দেওয়া হয়েছে। মূর্তিটি প্রায় বানানো হয়ে গেছে আমরা আগামীতে এর ফটো জনসমক্ষে তুলে ধরবো। এবার জিরো পয়েন্টের কাছাকাছি একটি জায়গা নির্ধারণের জন্য কাজ চলছে। এত সুন্দর মূর্তি বসানোর সঙ্গে ছোটখাটো একটি পার্ক বানানোর পরিকল্পনা রয়েছে। জায়গা নির্ধারণ হলে কাজটি শুরু হবে এবং তাড়াতাড়ি সম্পন্ন হবে। কেন্দ্র সরকারের একজন বরিষ্ঠ মন্ত্রী এটি উন্মোচনের জন্য আসবেন। তবে এখনও তার নাম জনসমক্ষে আনার সময় হয়নি।
প্রধানমন্ত্রীর অনুরাগীরা যদি এই কাজে আর্থিক যোগদান দিতে চান সেটা সম্ভব। জেলা বিজেপির সঙ্গে যোগাযোগ করে তারা চেক জমা দিতে পারেন, তবে এখনো অনলাইনে এই প্রক্রিয়াটি শুরু হয়নি। আমরা ভাবছি আগামীতে অনলাইনে সাধারণ মানুষকে এই সুযোগটি করে দেবো। এটি শুধুমাত্র শিলচর শহর নয় সারা উত্তর-পূর্বের কাছে একটি গৌরবের স্থান হয়ে থাকবে।”
অতীতে রাজ্য সরকার এবং কেন্দ্র সরকারের মধ্যে মতবিরোধের ফলে মহাসড়কের কাজ পিছিয়ে গেছে। ১৯৯৮ সালে অটল বিহারী বাজপেয়ী ইস্ট ওয়েস্ট করিডর প্রকল্প ঘোষণা করেছিলেন। শিলচর থেকে গুজরাটের সৌরাষ্ট্র পর্যন্ত ফোর লেন রাস্তা ঘোষণায় বরাক উপত্যকার ভবিষ্যৎ পাল্টে যাবে বলেই আশা করেছিলেন অনেকে। তবে আসামের অনেক রাজনৈতিক নেতা সড়কটির শিলচর পর্যন্ত নিয়ে আসার সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করেছিলেন। অটল বিহারী বাজপেয়ি সিদ্ধান্ত বদল করেননি।
এর অনেক পর তরুণ গগৈর নেতৃত্বে থাকা রাজ্য সরকার ডিমা হাছাও জেলার একটা অংশকে সংরক্ষিত বনাঞ্চল বলে ঘোষণা করে। এর আওতায় মহাসড়কের যেটুকু অংশ রয়েছে তার কাজ এখনও অসম্পূর্ণ। বর্তমান রাজ্য সরকারের প্রতিনিধিরা ২০১৬ সালের নির্বাচনী প্রচারে বলেছিলেন তারা ক্ষমতায় এলে মহা সড়কের জট খুলবে এবং প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রীর স্বপ্ন পূরণ হবে। বিভিন্ন সময় সরকারি আধিকারিক এবং জনপ্রতিনিধিরা মহাসড়ক পরিদর্শন করলেও পাঁচ বছরে কাজটি সম্পন্ন হয়নি। আগামী বছর নির্বাচন রয়েছে, এর আগে অটল বিহারী বাজপেয়ীর মূর্তি স্থাপন করলে শাসকদলের হয়তো রাজনৈতিকভাবে কিছুটা লাভ হতে পারে। তবে কারণ যেটাই হোক ভারতবর্ষের সবথেকে শ্রদ্ধেয় প্রধানমন্ত্রীর মূর্তি শিলচর শহরে স্থাপন হওয়া অবশ্যই একটি গৌরবের ব্যাপার।
Comments are closed.