Also read in

19 illegal immigrants return home via Sutarkandi border

বিভিন্ন সময় অবৈধভাবে আন্তর্জাতিক সীমান্ত পেরিয়ে ভারতে ঢুকে পড়েন অনেক বাংলাদেশের নাগরিক। সীমান্ত সুরক্ষা বাহিনী বা পুলিশের হাতে ধরা পড়লে তাদের ডিটেনশন সেন্টারে পাঠিয়ে দেওয়া হয়। বিভিন্ন সময় দুই দেশের মধ্যে কথাবার্তা হয় এবং এদের ফেরত পাঠানো হয়। বৃহস্পতিবার দুপুর ১টা নাগাদ করিমগঞ্জ সুতারকান্দি হয়ে ফিরে গেলেন ১৯ জন বাংলাদেশী নাগরিক। কাছাড়, করিমগঞ্জ ছাড়াও ধুবড়ি, ধেমাজি, গুয়াহাটি, নলবারী ইত্যাদি এলাকায় বিভিন্ন সময় আটক হয়েছিলেন এরা। দুই দেশের কূটনৈতিক পর্যায়ে যোগাযোগের পর এদের ফেরত পাঠানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। তবে প্রক্রিয়া শুরুর আগে প্রত্যেকের করোনা পরীক্ষা করা হয়েছে, রেজাল্ট নেগেটিভ হওয়ার পরেই তাদের যেতে দেওয়া হয়েছে।

বৃহস্পতিবার সুতারকান্দি-বিয়ানীবাজার শেওলাস্থল বন্দর হয়ে ফিরে যাওয়া ১৯ জনের মধ্যে বেশিরভাগ বাংলাদেশের সিলেট ডিভিশনের কুড়িগ্রাম, নীলফামারী, ফিরোজপুর, ঠাকুরগাও, দিনাজপুর, কুমিল্লা, গাজীপুর, কিশোরগঞ্জ, টাঙ্গাইল, চট্টগ্রাম, ঢাকা সহ দেশের বিভিন্ন জেলার বাসিন্দা।

গাইবান্ধার মালিক মিয়া, কমিল্লার উমর ফারুক, কড়িঘরের শহিদুল ইসলাম, নাসির উদ্দিন, ফাতেমা খাতুন, গাজীপুরের মুসাম্মতে ফাতেমা, চাঁদপুরের ইব্রাহিম খলিল, লালমনিরহাটের নূর জামাল, কিশোরগঞ্জের মনোয়ারা খাতুন, শেরপুরের জব্বার আলী, ব্রাহ্মণবাড়িয়ার মোঃ আব্দুস সালাম, টাঙ্গাইলের মোঃ ফিরোজ আলম, জলঢাকা উপজেলার সুমি বেগম, লক্ষীপুরের রুকিয়া বেগম, ঠাকুরগাঁও এর জহিরুল ইসলাম, বরিশালের আব্দুল কাদির, ডাকার শাহীন মিয়া, বাবচপুরের মোঃ আলাল মিয়া।

এদের মধ্যে ৫ জন নারী সহ ১৪ জন পুরুষ। এর মধ্যে সীমান্ত জিলা করিমগঞ্জ থেকে আটক করা হয় ৩ জন, কাছাড় থেকে ১ জন, চড়াইদেও থেকে ১ জন, ধুবড়ি থেকে ১ জন, ধেমাজি থেকে ১ জন, গুয়াহাটি থেকে ২ জন, কোকরাঝাড় থেকে ৩ জন, নলবাড়ী ২ জন, নগাঁও থেকে ৩ জন, শোনিতপুর থেকে ১ জনকে আটক করা হয়েছিল বিভিন্ন সময়ে।

দেশে প্রত্যবর্তনকারী এসব বাংলাদেশীরা বিভিন্ন সীমান্ত দিয়ে অবৈধভাবে বিগত কয়েক বছর আগে ভারতে অনুপ্রবেশ করেন। পরে আসাম পুলিশ ও বিএসএফের হাতে আটক হয়ে ভারতের বিভিন্ন ডিটেনশন সেন্টারে কারাবন্দী হন। সেখানে সাজার মেয়াদ শেষ হলেও নানা জটিলতায় তাদের দেশে প্রত্যাবর্তন অনিশ্চিত হয়ে পড়ে। অবশেষে দু’দেশের দীর্ঘ কুটনৈতিক তৎপরতায় বিশেষ করে আসাম সরকার এবং গুয়াহাটিতে থাকা বাংলাদেশ দুতাবাসের সহকারী হাই কমিশনার ড. তানভীর মনসুর রনির ও মৌলভীবাজার জেলা যুবউন্নয়ন অধিদপ্তরের সহকারী কর্মকর্তা অমলেন্দু কুমার দাশের সার্বিক সহযোগিতায় ভারতে কারাভোগের পর ১৯ বাংলাদেশী দেশে ফিরলেন।

সুতারকান্দি- বিয়ানীবাজারের শেওলা স্থলবন্দরে সীমান্ত সুরক্ষা বাহিনী, আসাম পুলিশের সীমান্ত শাখা বৃহস্পতিবার দুপুরে এসব বাংলাদেশীদের বিজিবি ও ইমিগ্রেশন পুলিশের নিকট হস্তান্তর করেছে। হস্তান্তর প্রক্রিয়ার সময়ে সীমান্তে উপস্থিত ছিলেন করিমগঞ্জের পুলিশসুপার মায়াঙ্ক কুমার ঝাঁ, আসাম পুলিশ সীমান্ত শাখার অফিসার ইনচার্জ আব্দুল ওয়াকিল, ইমিগ্রেশন অফিসার সমরেন্দ্র চক্রবর্তী, বিএসএফ ৭ ব্যাটালিয়ন সুতারকান্দি বিওপি এসই মানদ্বিপ, বিজিবি ৫২ ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লে কর্ণেল গাজী শহীদুল্লাহ, শেওলা স্থলবন্দর ইমিগ্রেশন পুলিশ চেকপোস্টের ইনচার্জ আবুল কালাম, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের প্রতিনিধি মৌলভীবাজার জেলা সহকারী যুবউন্নয়ন কর্মকর্তা অমলেন্দু কুমার দাশ প্রমুখ।

প্রক্রিয়াটি শেষ হওয়ার পর করিমগঞ্জ পুলিশ সুপার বলেন যে কোভিড প্রটোকল এবং স্বাস্থ্য পরীক্ষা শেষে দুপুরে সে দেশের সরকারের প্রতিনিধি এবং সুরক্ষা বাহিনীর হাতে বাংলাদেশী নাগরিকদের তুলে দেওয়া হয়েছে। এরা সবাই অবৈধভাবে ভারতের ঢুকেছিলেন এবং বিভিন্ন সময় সুরক্ষা বাহিনীর হাতে আটক হয়েছেন। তাদের ফেরত পাঠানোর আগে করোনা পরীক্ষা করা হয়েছে। রেজাল্ট নেগেটিভ আসার পরেই যাওয়ার অনুমতি মিলেছে।

Comments are closed.