Ballot box snatched and thrown in Pond. In the midst of vote boycott and some untoward incidents 80% voting recorded in Hailakandi.
প্রিসাইডিং অফিসারকে রক্তাক্ত করে ব্যালট বাক্স ছিনিয়ে জলাশয়ে নিক্ষেপ, পাঁচগ্রাম কাগজ কল কর্মচারিদের ভোট বয়কট সহ বিভিন্ন বিক্ষিপ্ত ঘটনার মধ্যেও রবিবার হাইলাকান্দিতে প্রায় আশি শতাংশ ভোটার তাঁদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করেছেন। এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত জেলায় আটাত্তর শতাংশেরও বেশি ভোট দানের খবর পাওয়া গেছে।
জেলার প্রত্যন্ত অঞ্চলের ভোট গ্রহণ কেন্দ্রের কর্মীরা গভীর রাত অবধি ব্যালট বাক্স জমা দিচ্ছেন। যার ফলে ভোটের হার আরও বাড়ার সম্ভাবনা রয়েছে।গোটা জেলায় ছোট খাটো দু’একটি বিক্ষিপ্ত ঘটনা ছাড়া ভোট শান্তিপূর্ণ ভাবে সম্পন্ন হয়েছে বলে জেলা উন্নয়ন আধিকারিক এফ আর লস্কর জানিয়েছেন।রবিবার সকাল সাতটা থেকে বিকেল তিনটা পর্যন্ত জেলার ১১ টি জেলাপরিষদ, ৬২ টি জিপি সভাপতি , ৬২ টি এপি সদস্য পদ সহ ২৪৬০ জিপি সদস্য পদের জন্য ভোট গ্রহণ করা হয়।। এদিন সকালে ভোট গ্রহণ শুরু হওয়ার পর ব্যালট পেপারের বিসংগগতির জন্য তিনটি কেন্দ্রে ভোটদান কিছু সময় বন্ধ থাকার পর ফের আরম্ভ হলেও দক্ষিণ হাইলাকান্দির দত্তপুর কেন্দ্রের সহস্রাধিক ভোটার ব্যালট বিভ্রান্তির জন্য ভোট দিতে পারেননি বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
এদিকে দীর্ঘদিন ধরে বেতন থেকে বঞ্চিত পাঁচগ্রাম কাগজকল কর্মীরা এদিন ভোট বয়কট করে প্রতিবাদ জানান। বেতন নয়, ভোট নয় বলে আগেই ঘোষণা করেছিলেন পাঁচগ্রামের কাগজকলের কর্মীরা। এদিন পাঁচগ্রামের টাউনশিপ এলাকার পাঁচগ্রাম শিশুনিকেতন বিদ্যালয়ের ৬৩৮ জন ভোটারের মধ্যে মাত্র চারজন ভোটার তাদের গণতান্ত্রিক অধিকার প্রয়োগ করেছেন বলে জানা গেছে। তবে এই চারজন ভোটার কাগজকল কর্মী কিংবা তাদের পরিবারের সদস্য নয় বলে জানা গেছে।
এদিকে পঞ্চায়েত নির্বাচনে পর্যাপ্ত নিরাপত্তা বাহিনী না থাকায় জেলার বিভিন্ন ভোট কেন্দ্রে মারামারি সহ বিক্ষিপ্ত ঘটনা ঘটেছে। রাঙ্গাউটি-নিতাইনগর জেলাপরিষদ কেন্দ্রের ৬৬০ নং বিলপার প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভোটদান কেন্দ্রে দুস্কৃতিরা ব্যালট ছিনিয়ে নিয়ে ছাপ্পা ভোট মারার চেষ্টা করলে প্রতিবাদ জানান প্রিসাইডিং অফিসার কুমার কান্তি দাস। তাকে রক্ষা করতে এগিয়ে আসেন পুলিশকর্মী দীনবন্ধু দাস। তখন তাদের দুজনকেই বেধড়ক মারধর করে দুস্কৃতিরা। তাছাড়া ব্যালট বাক্স ছিনতাই করে পাশের জলাশয়ে ফেলে দেয়। এঘটনার প্রেক্ষিতে ভোটগ্রহণ বন্ধ হয়ে পড়লে এলাকায় তীব্র উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। খবর পেয়ে হাইলাকান্দির ডিডিসি এফ আর লস্কর ছুটে এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করেন। শ্রী লস্কর জানান, ব্যালট বাক্স ছিনতাই হলেও পরবর্তীতে যথারীতি ভোট হয়েছে। অন্যদিকে দক্ষিণ বাহাদুরপুর প্রাথমিক বিদ্যালয় ভোটদান কেন্দ্রে ছাপ্পা ভোট মারার উদ্দেশ্যে একদল দুস্কৃতি ব্যালট ছিতাইয়ের চেষ্টা করলে তীব্র উত্তেজনার সৃস্টি হয়। দুস্কৃতিরা ব্যালট বাক্সকে নিয়ে একটি পুকুরে ফেলে দেয়। এতে ভোটদান বন্ধ হয়ে পড়ে। যদিও পরে জেলাপ্রশাসনের পক্ষ থেকে ব্যাবস্থা নিয়ে নতুন ব্যালট বাক্স এনে ভোট গ্রহণ করা হয়।
অন্যদিকে পাঁচগ্রাম কালিনগর জেলাপরিষদের ৪৫০ নং পাহাড়তলি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ব্যালটবাক্সে কালি ঢেলে দিলে কিছুসময়ের জন্য ভোট বন্ধ থাকে। অবশ্য পরে এই কেন্দ্রে ফের ভোটদান আরম্ভ হয়। লালামুখের রামভাই প্যাটেল বিদ্যালয় কেন্দ্রে দুস্কৃতিরা ব্যালট ছিনতাইয়ের চেষ্টা করলে ভোটদান বন্ধ হয়ে পড়ে। যদিও পরে প্রশাসনের হস্তক্ষেপে ফের ভোটদান আরম্ভ হয়। এদিকে রাজ্যেশ্বরপুর জেলাপরিষদের গাগলাছড়া চা বাগান হিন্দি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে দুপক্ষের মধ্যে মারামারির ঘটনা ঘটলে ঘনশ্যাম শাহু নামের এক ব্যক্তির মাথা ফেটে যায়।রক্তাক্ত শাহুকে হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়। লালার ধনিপুর বিদ্যালয় ভোটদান কেন্দ্রের ব্যালট পেপারে এক পঞ্চায়েত সদস্যের নামের পাশে ভুল প্রতীক চিহ্ন ছাপা হওয়ার জেরে উত্তেজনা ছড়ালে দীর্ঘক্ষণ ভোটদান বন্ধ থাকে। পরে প্রশাসনিক হস্তক্ষেপে ফের ভোটদান আরম্ভ হয়।
অপরদিকে দক্ষিণ হাইলাকান্দির দত্তপুর কেন্দ্রের ভোটদান কেন্দ্রে ব্যালট পেপারের গণ্ডগোলের জন্য ভোটগ্রহণ বন্ধ হয়ে যায়। পরে প্রশাসন ভোটদানের ব্যবস্থা করলেও দেরী হয়ে যাওয়ার জন্য এলাকার মানুষ এদিনের মত ভোটদান বন্ধ রেখে পুনরায় ভোটের দাবি জানান। এই কেন্দ্রে ফের ভোটদানের দাবি জানিয়েছেন হাইলাকান্দি জেলাবিজেপির সভাপতি সুব্রত নাথ। তিনি এই কেন্দ্রে কড়া নিরাপত্তার মধ্যে ফের ভোট গ্রহণের দাবি জানান।
Comments are closed.